পরিবার থেকেই মেয়েদের দমিয়ে রাখা হয়

আমাদের দেশে পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে ছেলে মেয়েদের বড় হওয়াতে একটা বিশাল বড় ফারাক থাকে। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। এই পুরুষশাসিত সমাজে মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়া ও বড় হওয়া অনেক বেশি কম্পলেক্স। আপনি যতোই অপেন মাইন্ডেড পুরুষকে সংগী হিসেবে নির্বাচন করেন না কেন আপনার ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হলেই দেখবেন আপনার পুরুষ সংগী সন্তানের বাবাই আপনার কন্যা সন্তানের মানসিক ডেভেলপমেন্টে সব থেকে বড় বাধা হয়ে দাড়াবে। পরিবার ও সমাজের চাপে আপনি আপনার মেয়েকে ছোটবেলা থেকেই শিখাবেন যে ছেলেদের থেকে দুরে থাকতে, আধুনিক পোশাক না পড়াতে, জোরে কথা না বলতে, সন্ধ্যার পর বাইরে না খেলতে। আপনার স্বামী যদি এবিউজিভ হয় এবং আপনার কন্যা সন্তান যখন বুঝতে শিখে তখন আপনি আপনার স্বামীর এবিউজিভ রিলেশনটাকে আড়াল করে রাখেন আপনার কন্যা সন্তানের কাছ থেকে , কারন? আপনার মনে হয় যে আপনি তাকে প্রটেক্ট করছেন কিন্তু বাস্তবে কিন্তু তা হয় না। এটা কিন্তু চাইল্ড এবিউজের মধ্যেই পড়ে কারন আপনার কন্যা সন্তান তার বাবার রোষানলের শিকার হবেই।

আপনার কন্যা সন্তানকে আপনি ছোটবেলা থেকেই হাড়ি পাতিল আর পুতুল ধরায় দেন কারন সে যাতে বড় হয়ে অন্যের চুলা ঠেলতে পারে, বাচ্চা পয়দা করতে পারে আর স্বামী সেবা করতে পারে। যতোই মেয়েকে এমবিএ বিবিএ পাশ করান না কেন আপনাদের টার্গেটই থাকে মেয়ে বিয়ে দিয়ে আপদ বিদায় করার।

এই কন্যা সন্তানকে জন্মের সময় আপনারা লক্ষী বলেন আর এই লক্ষীকে পায়ে ঠেলার জন্যই আপনাদের তাড়াও থাকে বেশ। হিজাব বোরকা না পড়তে চাইলে তাকে আপনারা ধর্মের নামে কালো পোশাকে বন্দী করেন। এই কন্যা সন্তানকে কোনভাবেই আধুনিক বানানো যাবে না কারন সে উচ্ছনে যাবে ভেবে তাকে দমিয়ে রাখেন আবার এই নারীকেই আবার মা বানিয়ে তার পায়ের নিচে বেহেশত দেন, বাহ!

এরপর?

এই নারীটা যখন একটা এবিউজিভ রিলেশনশিপে আটকে যায়, যখন সে আর তার স্বামীর সংসার করতে না চায় ঠিক তখুনি সে হয়ে যায় নারী নামের কলংক। একটা অসুস্থ সম্পর্কে আটকে থাকার জন্য তখন তাকে জোড় দেয়া হয়। সমাজের ভয় , ধর্মের ভয় দেখিয়ে তখন তাকে বাধ্য করা হয় তার এবিউজিভ রিলেশনশিপ টিকিয়ে রাখার জন্য। একটা হিপোক্রেসি ক্রিয়েট করি আমরা সেই মেয়েটির জন্য। একটা অসুস্থ সম্পর্ক কতোটা ভয়ানক তা আমরা ভুলে যাই কারন লোকে কি বলবে আর সমাজ কি বলবে তার জন্য। আর এভাবেই মেয়েটার যখন সুইসাইড এর খবর আসে তখন আমরা ন্যাকা কান্না করি, মিথ্যে চোখের জল ফেলি।