আমাদের দেশে একটা প্রচলন হলো মেয়ের বয়স হবার আগেই বিয়ে দিয়ে দাও। এই বয়সটা হতে পারে ১৬/১৮/২০। একেক পরিবারে একেকরকম সিদ্ধান্ত । কিছু পরিবারে মেয়েদের খুব একটা পড়ালেখা করতে দেয়া হয়না বিয়ে করতে হবে তাই। আর এভাবেই অকালে ঝরে পরে অনেক মেধাবী মেয়ের জীবন। একজন নারী কাকে বিয়ে করবে কখন করবে সেটা একান্তই তার সিদ্ধান্ত হবার প্রয়োজন। কিন্তু এখানেই বাধে বিপত্তি । মেয়েদেরকে যেন বেধে দেয়া হয় সমাজের নিয়ম মেনে চলতেই হবে। সমাজের সকল নিয়মই যেন বর্তায় শুধু স্পেসিফিকলি মেয়েদের জন্য। মেয়ে হয়ে জন্মানো মানেই হাজারটা নিয়ম কানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে যেখানে ছেলেদের আদৌ কোন নিয়ম মানতে হয় কিনা তা জানা নেই।মেয়েদের বিয়ে ও বিয়ে পরবর্তী জীবনটা খুব সহজ ও সুখকর হয় না যদি না সে একজন সাপোর্টিভ জীবনসঙ্গী পায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ছেলে চাইলেও তার স্ত্রীকে বিয়ের পর ঘরের কাজে সাহায্য করতে পারে না লোকে কি বলবে তার ভয়ে। এর উপরে আছে ছেলের মা বোন আত্মীয়স্বজন এর চিন্তা চেতনা। ছেলে বিয়ের পর স্ত্রীকে কাজে সাহায্য করলে, রান্নাবান্নায় সাহায্য করলে তার পরিবারের লোকজনই বউয়ের গোলাম বলে হাসাহাসি করে। আর তাই হয়তো বাংলাদেশ এর বেশিরভাগ দম্পতিদের ভিতর একইসাথে বাসার কাজ, বাচ্চাকাচ্চা লালন পালন করতে খুব কম দেখা যায়। মেয়েদের প্রতিমাসে মাসিকের আগে মুড সুইং ও হরমোনাল অনেক পরিবর্তন আসে। এটা অনেক হাজবেন্ডই বুঝতে পারে না আর তাই বিয়ে পরবর্তী সময়ে একজন স্ত্রী এগুলো শেয়ার করার মতো কাউকে পায় না ফলাফল ডিপ্রেশন।এমনকি বাচ্চা হবার পর প্রসুতি মায়েরা যে পোস্ট পারটাম ডিপ্রেশন এর শিকার হয় সেটা বুঝাও দায় হাজবেন্ড য তার পরিবারের কাছে। আর তাই একটা মেয়ে,মা আস্তে আস্তে ডিপ্রেশনের চুড়ান্তপর্যায়ে চলে যায় সেটা কেউ টেরও পায় না।আর বেশিরভাগ বাঙালী পুরুষরা তখন জড়িয়ে পরে পরকীয়াতে। আর স্ত্রী বেচারী ঘরে পচে মরে। আর যদি সে এই সময় নিজের পক্ষে কথা বলতে চায়, নিজের সংসার বাচাতে লড়াই করতে চায় তবে সে বেয়াদব, চালু মেয়ে। ডিভোর্স এর সিদ্ধান্ত নিলেও তখন নারীরই দোষ। কারন? সে তার হাজবেন্ডকে ধরে রাখতে পারে নি। মুরব্বীরা তো বলেই ফেলেন, “আমরা বাচ্চা জন্ম দেই নাই, সংসার করি নাই, জামাই মারধোর করলেও তো তারই সাথে সংসার করছি। আর এখনকার মেয়েদের কি ঢং?”
আদৌ কি এগুলো ঠিক? আর কতোদিন আমরা মেয়েরা এই মেন্টালিটির শিকার হবো? নারী হয়ে জন্মানোই কি আমাদের দোষ?