বুলশিট দেশপ্রেমের বুলশিট সেবা

বঙ্গবন্ধু, জিয়া, শেখ হাসিনা ইত্যাদি বিখ্যাত নেতাদের ত্যাগ তিতিক্ষা স্মরন করে কথায় কথায় আবেগে গদগদ করে চোখে পানির বন্যা নিয়ে আসি আমরা অনেকে। 
টেসলায় গবেষনা করে আমার বন্ধু জানাল- তার অল্প শিক্ষিত বুড়া মা খালেদা জিয়াকে জেলে ভরার সময় এক সপ্তাহ কেঁদে বুক ভাসিয়েছে! 
কয়েকদিন আগে এরশাদের মতো নিকৃষ্ট কুকুর মারা যাবার পরেও এদেশের হাজার হাজার দেশপ্রেমিক শোকের মাতম তোলেছে ! তারা এরশাদের মতো লোকের কাজেও দেশ প্রেম ও দেশ সেবা খোজে পেয়েছে!

এদেশের প্রতিটি নেতাই প্রচার করে মানুষের সেবা করার জন্য তারা রাজনীতি করে। 
শুধু তাই নয়- যে লোকটি সরকারী চাকরী করে, যে কাজটা মনোযোগ দিয়ে ভাল ভাবে করা উচিত তাই করছে- তাও ফেইসবুকে প্রচার করে ভাব নেয় তারা দেশের সেবা করে! আর আমরা নাদান পাবলিক আবেগে গদগদ করে সেই সব দেশ সেবকদের পায়ে লুটিয়ে পড়ি!

আবার দেখেন- জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা ইত্যাদির সামান্য অবমাননার হলে রে রে রে বলে চিক্কুর মারি! আরো ভাল জাতীয় সংগীত নিয়ে চিল্লাফাল্লা করি! 
বিদেশে গিয়ে কেউ দেশের কোন সমালোচনা করলে ফাল দিয়ে দেশদ্রোহের মামলা করে দেই!

এইসব বুলশিট আবেগ যে দেশে নাই, সে দেশ কি বানের জলে ভেসে গেছে? 
যে দেশের এমপি, মন্ত্রী,প্রধানমন্ত্রীরা তাদের পদটিকে জাস্ট একটা বেতনভোগী চাকরি হিসেবে দেখে সে সব দেশ কি দুর্নীতিতে, চুর-চুট্টামীতে, ক্যালেংকারী, ঘুষ, খুন, মিথ্যা, শঠতা ইত্যাদিতে ভরে গেছে?

যে দেশের অধিকাংশ মানুষ জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকার কোন কিছুই জীবনে মনেও করে দেখেনা, সারা জীবন একবার এ নিয়ে কথা বলে না, তারা কি দেশের মানুষের শত্রু, তারা কি রাত-দিন দেশের ক্ষতি করে বেড়ায়?

এই যে দেশ প্রেম, দেশ সেবা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত ইত্যাদি বলে চিক্কুর পাড়া জাতী কেন দিন দিন পৃথিবীর নিকৃষ্ট জাতীতে পরিনত হচ্ছে- তা কি ভেবে দেখেছেন?

তারচেয়ে কি সেই সব দেশ সেবকদের উদ্দ্যেশে এটা বলা ভাল না- হে দেশ সেবক! তোমার দেশ সেবার প্রয়োজন নাই, তুমি বেতন নিচ্ছ, সুতরাং তোমার কাজটা ঠিক মতো করো, না হয় জনগণ উষ্টা দেবার আগেই বিদায় না? দেশ সেবা দেখিয়ে পদ আকড়ে থেক না! 
হে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার দেশ প্রেমিকরা- তোমরা তোমাদের দেশপ্রেম পকেটে রেখে মানুষের ক্ষতি হয় শুধু এ কাজটা করো না!

দেশের উন্নতি করতে চাইলে বুলশিট আবেগ দেখানোর প্রয়োজন নাই। 
তুমি না থাকলে দেশের কি হবে, মানুষের কি হবে, বিকল্প নাই- এই সব বুলশিট বাদ দিয়ে তোমার কাজকে বেতনভোগী রাষ্ট্রের একজন কর্মজীবি হিসেবে দেখ! তোমার যে কোন ব্যার্থতায় স্বেচ্ছায় চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে তোমার পেটের আর চেটের ধান্ধা করো!