হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের মতো জরুরি, মানবিক উদ্যোগ যখন ধর্মীয় গোঁড়ামি, আলেমদের কুসংস্কার আর অন্ধত্বের কারণে হাইকোর্ট পর্যন্ত নিষিদ্ধ হয়, তখন বোঝা যায়, ধর্মের নামে শিশু জীবনকেই বিপন্ন করা হচ্ছে। শিশুর মুখে দু’ফোঁটা দুধ না দিতে পারার দিকে ধর্মীয় তর্ক উঠিয়ে আনা, কবিরাজী ফতোয়ার আওতায় নিয়ে যাওয়া, অপবিত্রতা, সম্পর্কের দ্বন্দ্ব এসব সমস্যার পাহাড় বানিয়ে রেখেছে। শিশু মারা গেলে, দেশের মুসলিম সমাজের আলেমরা ফেসবুকে গর্বের হাসি দেয়, ‘এটাই ইসলামিক শুদ্ধতা’।
না, এই বিকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শুধু শিশুদের জীবনই নয়, ভবিষ্যৎ, জাতি, মানবতা—সবকিছুই ধ্বংস করছে। ধর্মের নামে শিশুদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য, বেঁচে থাকার অধিকার, মৌলিক ছোট্ট নিরাপদ জীবন—কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না। জামাতে বসে আলেমরা মুখে কোরান ফুঁ দেয়, আর বাইরে শিশু, নারী, সাধারণ মানুষ—সবাই দুঃখ-কষ্টে ডুবে থাকে।
এসব ধর্মরক্ষকের চোখে মানবিকতা, বিজ্ঞান, যুক্তি, সহানুভূতি কিছুই নেই। শুধু ফতোয়া, ধর্মীয় বিকৃতি, বাহানা, ভয়, গালাগাল আর কুসংস্কারে মাথা ঘামানো—এটাই তাদের চূড়ান্ত কাজ। শিশুর জীবন বাঁচানোর সহজ পথ মিল্ক ব্যাংক, চিকিত্সা, বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ—সবকিছুই তাদের গোঁড়া ফতোয়ার মুখে ধ্বংস হয়ে যায়।
এতদিন সবাই ভাবতো, অন্তত দুধের শিশু ধর্মীয় মোটিভেশন, বিকৃত মানসিকতার শিকার হবে না। এখন সকলে দেখছে, কোনো মানবিক উদ্যোগ ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতার পাল্লা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। বর্তমানের মুসলিম সমাজ, আলেমদের ফতোয়া, ধর্মীয় কৃতিত্ব এমন ছায়া ফেলেছে, যেখানে কুকুরের না খাওয়া দুধও পাচ্ছে, কিন্তু দুধের শিশু পাচ্ছে না।
আমাদের এই ধর্মীয় অন্ধতার, কট্টরতা, সমাজের বিকৃতি, ভণ্ডামিকে চরমভাবে তিরস্কার করা উচিত। শিশুর জীবন, নারীর অধিকার, মানুষের মৌলিক প্রয়োজন—এসব নিয়ে ধর্মীয় শাসনের কোন স্থান নেই। বিজ্ঞান, যুক্তি, মানবিক বোধ, আহ্বান করতে হবে—বলতে হবে দুধের শিশুও যেন আর ধর্মীয় বিকৃতির বলি না হয়।