ইসলামিক জিহাদের পর অমুসলিম যুদ্ধবন্দীদের সাথে মুসলমানদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। প্রথমে আমরা ইবনে কাসিরের কাছ থেকে এটি সম্পর্কে পড়ি, কুরআনের একটি আয়াতের তাফসীরে কী বলা হয়েছে।
তাফসির: কুরআনের এই আয়াতটি সত্য সহিংসতা পরিচর্যা এবং মানবজীবনের মূল্য ও জীবনহার ইসলামী শাস্ত্রের কঠোরতা বিরোধিতা করে। আয়াত ৫:৩-৩৪-তে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাদের জন্য শাস্তি হল মৃত্যুদণ্ড শূলে চড়ানো-পা কাটা বা দেশান্তরিত করা। ৩২, ৩৩ ও ৩৪ নম্বর আয়াতের নির্দেশনা থেকে বলা হয় যে, ইসলামে ‘ফিতনা’ বা ‘‘দ’ বলা, নির্দেশ করা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত যার ইসলাম অনেক কঠোর।
“যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে, তাদের শাস্তি হলো তাদেরকে হত্যা করা হবে, অথবা তাদের হাত-পা কেটে ফেলা হবে, অথবা তাদের ঘরবাড়ি থেকে বহিষ্কার করা হবে; এটা দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং আখেরাতে তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।”
আয়াতগুলিতে, আল্লাহ তাআলা কাফেরদের এবং তাদের মন্দ কাজের প্রতি তাঁর ঘৃণা বর্ণনা করে বলেছেন যে, কাফের কাফেররা আল্লাহর দৃষ্টিতে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রাণী। যখনই আপনি তাদের কারও সাথে চুক্তি করেন, তারা সেই চুক্তি ভঙ্গ করে। যখন আপনি তাদের উপর আস্থা রাখেন, তখন তারা আপনার আস্থা ভঙ্গ করে এবং আপনার আস্থা নষ্ট করে। তারা আল্লাহকে মোটেও ভয় করে না। তারা নির্ভীকতা এবং অহংকারের সাথে পাপে লিপ্ত হয়।
এই বিষয়ে কুরআনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। বদরের যুদ্ধের সময়, একটি আয়াত নাজিল হয়েছিল যেখানে আল্লাহ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে যুদ্ধের পরে তাদের উপর প্রচুর হত্যা এবং রক্তপাত না করা পর্যন্ত নবীর জন্য মুক্তিপণের জন্য কাফের যুদ্ধবন্দীদের আটকে রাখা বৈধ নয়। অর্থাৎ, আল্লাহ স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, যুদ্ধে পরাজিত ও বন্দী কাফেরদের উপর প্রচুর রক্তপাত করা আবশ্যক!
একজন নবীর পক্ষে তার সাথে যুদ্ধরত কাফেরদের বন্দী রাখা ঠিক হবে না যতক্ষণ না তিনি প্রচুর হত্যাকাণ্ড ঘটান এবং তাদের পুরোপুরি পরাজিত করেন। যাতে তাদের হৃদয়ে সেই ভয় সঞ্চারিত হয় এবং তারা দ্বিতীয়বার তার সাথে যুদ্ধ করতে না আসে। হে মুমিনগণ! তোমরা বদরের কাফেরদের বন্দী করে মুক্তিপণ দিতে চাও। তবে, আল্লাহ তাআলা পরকাল চান, যা দ্বীন ও তাঁর শক্তির বিজয়ের মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ তাআলা তাঁর সত্তা, গুণাবলী এবং ক্ষমতায় অতুলনীয়। কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। একইভাবে, তিনি তাঁর শরীয়ত প্রণয়ন এবং ভাগ্য নির্ধারণে অত্যন্ত জ্ঞানী।
এই আয়াতের মাধ্যমে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করার, অথবা তাদের দাস বানানোর অথবা মুক্তিপণ গ্রহণ করে মুক্তি দেওয়ার অধিকার তখন থেকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুসলমানদের দেওয়া হয়েছে। সমস্যা: আলেমদের ঐক্যমত্য হলো, এই আয়াতের মাধ্যমে মুসলিমদের শাসক বা সেনাপতিকে যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তাই, রাসূলুল্লাহ (সা.) বনু কুরাইজার লোকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাদের বন্দী করার পর, তিনি নাসর বিন হারিস, তাইমিয়্যা বিন আদি এবং উকবা বিন আবি মু’ইতকে হত্যা করেছিলেন। সাবিলুর রাশাদ গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, উকবা বিন আবি মু’ইত তখন বলেছিলেন, “মুহাম্মদের সন্তানদের দেখাশোনা কে করবে?” রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “আগুন।” ইবনে ইসহাক বলেন, হযরত ইবনে আবিল আফলা উকবাকে হত্যা করেছেন। ইবনে হিশাম বলেন, হযরত আবি ইবনে আবি তালিব। সমস্যা: বন্দীদের দাসত্ব করা জায়েয। আলেমরা এ ব্যাপারে একমত। এটি শিরককে ধ্বংস করে এবং ইসলামকে সম্মানিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইমাম আবু হানিফা বলেন, শাসক বা সেনাপতি ছাড়া অন্য কারো বন্দীকে হত্যা করার অধিকার নেই। প্রয়োজনে কেবল একজন শাসকই যুদ্ধবন্দীকে হত্যার আদেশ দিতে পারেন। তবে, যদি কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে কোন যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করে, তাহলে তাকে এর জন্য রক্তমূল্য দিতে হবে না।
এই বিষয়ে কোরানে এরকম লেখা থাকলে আর নবীর ইতিহাস জানলে কেউ মুসলিম জাতিকে বিশ্বাস করতে চাইবে না। ঘৃণা করবে মুসলিমদের। বিশ্বে আজ মুসলিমদের এই বর্বরতার জন্য এই ধর্মকে শান্তির ধর্ম বলে মনে করে না।