গুম ও হত্যা

ঢাকা ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০২ জন মানুষ গুমহয়েছেন।

বিচার বহির্ভূত  হত্যাকাণ্ডসহ এসব ঘটনার জন্য জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার রক্ষাকারী সংস্থা যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টিইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকারকে নিন্দা জানিয়েছেন।

আইন ও সালিশকেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৪ সালের জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮২ জন গুম হয়।ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই ছিলোবিরোধী দলের নেতাকর্মী।

২০১৬ সালে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া ব্যাক্তিদের স্বজনরা সরকারকে তাদের প্রিয়জনের হদিস বের করে দিতে মায়ের ডাক নামে একটি মঞ্চগঠন করে।

২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ জন ব্যাক্তি গুমরে শিকার হয়।তাদের মধ্যে ৪০ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, ৬৬জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেফতার পাওয়া গেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে ২০৩ জনের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল বিরোধী দলের প্রধান নেতা এম ইলিয়াস আলী মধ্যরাতে ঢাকা হতে তার ড্রাইভারসহ নিখোঁজ হন।পরবর্তীতে নিখোঁজেরপ্রতিবাদে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করায় তার দলের ৫ জন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন।

৫ এপ্রিল ২০১২ আমিনুল ইসলাম নামে একজনের মৃতদেহ পাওয়া যায়।এর আগের দিন তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ডইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সদস্য এবং বাংলাদেশ সেন্টার অফ ওয়ার্কার সলিডারিটির একজন সংগঠক ছিলেন।তার গুম ও হত্যা অনেকআন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্মদেয়।

ডিজিএফআইয়ের গোপন বন্দীঘর রয়েছে। যার নাম আয়নাঘ এবং এটি ঢাকায় ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের পেছনে অবস্থিত। সেই আয়না ঘরেমানুষকে আটকে রেখে টর্চার করা হয়।বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে নিরাপত্তা বাহিনী গুলোর হাতে অসংখ্য মানুষ বলপূর্বক গুমের শিকারহয়েছেন।মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে অন্তত ৬০৫ জন গুমের শিকারহয়েছেন।এদের মধ্যে ৮১জনকে পরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাকিদের অনেকে ফিরে এসেছেন তবে ১৫১ জন তখনো পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন।

শেখ সেলিম লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান ১ বছর ৬ মাস ১৪ দিন আয়না ঘরে বন্দী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সেখান থেকে ফিরে এসেএকটি ডকুমেন্টারিতে তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন।