আমাদের ইসলাম ধর্মে অন্যতম চর্চিত ও জনপ্রিয় একটি হাদিস হচ্ছে পুরুষের জন্য চারটি বিয়ে করা সুন্নত। ধর্মের আর কিছু জানুক বা না জানুককিন্তু এই হাদিসটি জানেনা এমন মুসলিম পুরুষ একজনও নেই। কেউ কেউ তো আবার চারটি বিয়ে করা ফরজ ও মনে করে থাকে।
যদিও চারটিবিয়ে করার হাদিসটি ভুল নয়, ইসলাম একজন পুরুষকে চারটি বিয়ে করার অনুমতি ঠিকই দিয়েছে ; কিন্তু সমস্যা হলো মানুষ যখন শুধুমাত্রনিজেদের স্বার্থে এই হাদিসটির একাংশ ব্যবহার করে থাকে আর বাকি অংশের প্রতি অনীহা দেখায়। আজকাল আমাদের সমাজের অধিকাংশমানুষের চরিত্র এমন যে তারা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের যে দিকগুলো তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করতে পারবে শুধুমাত্র সেইসব দিকগুলোনিয়েই চর্চা আলোচনা করবে।
মূলত চারটি বিয়ে সম্পর্কে কুরআনের সূরা আন নিসা, আয়াত(৩-৪) এ আল্লাহ বলেছেন “তোমরা নারীদের মধ্যহতে নিজেদের পছন্দমত বিয়ে কর, যাকে তোমাদের ভালো লাগে; দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশংকা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে অথবা তোমাদের অধকারভুক্ত দাসীকে।
এতেই তোমাদের পক্ষপাতিত্ব না করার অধিকতর সম্ভাবনা”। কুরআনের এই আয়াতটিলক্ষ্য করলেই স্পষ্ট বুঝা যায় যে পুরুষ মানুষ এই আয়াতটির প্রথম অংশটিকে কতটা গুরুত্ব দেয় এবং শেষ অংশটিকে কতটা অবহেলা করে।ইসলাম ধর্ম মুসলিম পুরুষদেরকে চারটি বিয়ের অনুমতি দিয়েছে এটি নিঃসন্দেহে ইসলাম ধর্মের একটি ঔদার্যতা ও সৌন্দর্য। তবে আল্লাহ তায়লাএই অনুমতির সাথে দিয়েছেন কিছু শর্ত যা অবশ্যই পালনীয়।
উক্ত আয়াতটিতে আল্লাহ তায়লা চারটি বিয়ের অনুমতির ব্যাপারে যতটা না জোড়দিয়েছেন তার থেকে অধিক জোড় দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন যে-“যদি আশংকা কর যে সুবিচার করতে পারবে না তাহলে একটিই উত্তম”। দুঃখেরবিষয় এটিই, যে কয়জন মুসলিম পুরুষ এই আয়াতটির অন্তর্নিহিত হুশিয়ারি উপলব্ধি করতে পারেন?
চারজন স্ত্রীর সাথে সুবিচার করতে না পারলেযে তাকে আল্লাহর কাছে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে সে ভয় কি তাদের মধ্যে আছে যারা চারটি বিয়ে করাকে সুন্নত, ফরজ বা পুরুষের অধিকারবলে মনে করে? নিজের স্বার্থের জন্য এভাবে ধর্মকে ব্যবহার করা এবং কুরআন হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা যারা করে তারা কখনো প্রকৃত মুসলিম হতেপারে না। প্রকৃত মুসলিম তারাই যারা ইসলামকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করে, এবং কুরআন হাদিসের সঠিক ব্যবহার করে।