নারী-স্বাধীনতা বলতে আপনি কি বোঝেন? বা মানুষের স্বাধীনতা বলতে আপনি কি বোঝেন? বাংলাদেশের সমাজে নারী কি সত্যিকারের অর্থে স্বাধীন? এইসব প্রশ্নের উত্তর একেকজন মানুষ একেকভাবে দেবে, আমি বলবো, নারী-স্বাধীনতা বলতে আমি যেটা বুঝি সেটা বাংলাদেশের সমাজে এখনো আসেনি, নারীদের পুরুষদের মতো সত্যিকারের মানুষ হিসেবে স্বাধীনতা বাংলাদেশের সমাজে অনুপস্থিত, বাংলাদেশের সমাজে শুধু পুরুষেরাই স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র, যদিও এজন্যে পুরুষরা নিজেরাও অনেক সামাজিক অশান্তির ভেতর দিয়ে যায়, এখানে কপটতা রয়েছে, কষ্ট না করলে পুরুষরা নারীদের সঙ্গও পায়না, বাংলাদেশে টাকা আয় করা যেমন কঠিন ঐরকম বাংলাদেশে নারীসঙ্গ পাওয়াটাও কঠিন, বাংলাদেশের সমাজ এভাবেই তৈরি করা।
আমাদের বাংলাদেশের সমাজে কতোগুলো বিয়ে প্রেম করে হয় আর কতোগুলো বিয়ে অভিভাবক দ্বারা হয়, এটার যদিও কোনো পরিসংখ্যান নেই, হিসেব নেই কোনো, তাও বোঝা যায় অভিবাবক দ্বারা বিয়ের সংখ্যাই বাংলাদেশের সমাজে এখনো বেশি যেখানে নারীর ইচ্ছার চাইতে সামাজিক পুরুষতান্ত্রিক মতবাদের বিধান কাজ করে বেশি। মধ্যবিত্ত মেয়েদের জীবনে স্বপ্নের রাজকুমার পুরুষ আসি আসি করেও আসেনা, হঠাৎ চলে আসে পুরুষতান্ত্রিক ছেলে যে নারী-স্বাধীনতা সমর্থন করেনা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে করতে পারে তবে তা অনেক কম।
বৈবাহিক ধর্ষণ – এই শব্দটি আজকাল বাংলাদেশে ব্যবহৃত হওয়া শুরু হয়ে গেছে, এবং আপনার কি মনে হয়না যে, বাংলাদেশের সমাজে বৈবাহিক ধর্ষণ হয়, অর্থাৎ বিয়ের পরে স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে এবং স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলতে পারছেনা, স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে একভাবে বাধ্য হচ্ছে, এরকমটা মনে হয়না? হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমাজে এগুলো আসলে ভেতরে ভেতরে আছে, অনেক ঋণাত্মক জিনিস বাংলাদেশের সমাজে যেমন এখনো রয়ে গেছে, তেমন এই জিনিসটাও বাংলাদেশের সমাজে আছে। ধর্ষিত নারীর মন-মানসিকতায় কিরকম প্রভাব পড়ে সেটা বাংলাদেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কোনদিনো বোঝার চেষ্টা করেনা, সমাজ শুধু নারীদের পোশাকের উপর দোষ চাপায় ধর্ষণের জন্য, আর স্বামীর স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়ে সমাজে আলোচনাও নিষেধ যেহেতু সমাজ পুরুষতন্ত্রবাদী, এবং অনেক বিবাহিত বাংলাদেশী নারী যেখানে রাস্তায় বোরকা না পরে ঘর থেকে বেরই হতে পারেনা সেখানে স্বামীর ধর্ষণ নিয়ে সে কি বলবে, বললেও সেটা এই কথিত সুস্থ সমাজের ক’জন মানুষ বিশ্বাস করবে? বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ার পেছনে পুরুষতান্ত্রিক বিধি-বিধানই দায়ী।