শেখ আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইব্নে বতুতা। প্রখ্যাত পর্যটক। তিনি সাক্ষ্য দেন–তিনি যখন ভারতে অবস্থান করছিলেন, তখন চীন সরকার ভারতের সুলতানকে কিছু উপহার পাঠিয়েছিল। তার মধ্যে রয়েছে “একশ ক্রীতদাস ও দাসী, পাঁচশ মখমল ও রেশমি-কাপড়ের টুকরা, জরির পোষাক এবং অস্ত্রশস্ত্র।”
সুলতানও তাদের চেয়ে অনেক বেশি পাল্টা উপহার পাঠিয়েছিলেন। তার মধ্যে প্রধান ছিল “একশ ভাল জাতের ঘোড়া, একশ শ্বেতাঙ্গ ক্রীতদাস, একশ হিন্দু নর্তকী ও গায়িকা। বারশ বিন্নি শ্রেণীর বস্ত্রখণ্ড, সোনারূপার তৈজসপত্র, সোনালী কাজকরা পোষাক পরিচ্ছদ, তরবারী, মুক্তার কাজ করা দস্তানা এবং পনের জন খোঁজা ভৃত্য।”
অবশ্য চীন কোনো কালেই নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছু করে না। হিমালয়ের কাছে চীনা তীর্থযাত্রীদের একটা মন্দির ছিল। ভারতের মুসলমান সৈন্যরা এক সময়ে সে-মন্দিরটি আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে ফেলে। চীন সরকার ওই উপহারের সাথে সুলতানের কাছে মন্দিরটি পুণনির্মাণের অনুমতি চেয়েছিল।
সুলতানের উত্তর ছিল–“ইসলাম ধর্মের নিয়মানুসারে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। যারা মন্দির নির্মাণের জন্যে বিশেষ ধরণের কর দেয় মুসলিম সাম্রাজ্যে শুধু তাদেরই মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়।… আপনিও যদি ‘জিজিয়া কর’ দিতে সম্মত থাকেন তবে আপনাকে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে। যারা সত্য পথ অনুসরণ করে তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।”–এটাই ইসলামের সৌন্দর্য।
ইসলামের সৌন্দর্যের সাথে অনেক দেশেরই পরিচয় হয়। শিক্ষাটাও কমবেশি অনেক দেশই পেয়েছে। কিন্তু শিক্ষা থেকে জ্ঞান অর্জন করতে চীনাদের উপরে কেউ নেই। হয়তো এ কারণেই ‘জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীন দেশে যাও’ কথাটার সৃষ্টি হয়েছে।
সব মুসলমান এক নয়, কিন্তু উইঘুরের মুসলমানরা ‘স্পেশাল’–এই জ্ঞানটা চীন আত্মস্থ করতে পেরেছে বলেই আগেভাগে ব্যবস্থা নিয়েছে। রোহিঙ্গা জাতির মধ্যে কিন্তু হিন্দু ধর্মাবলম্বীও আছে, তবুও মায়ানমার ইসলামের সৌন্দর্যের কিছুটা পরিচয় পেয়ে ভাইরাসের টিকা দিয়েছে। আর বাস্তবতা হলো–এ নিয়ে দুনিয়ার কোথাও কোনো হাউকাউ নেই। সবাই ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’ শিক্ষাটার মানে জানে।