শিক্ষকের স্থান কোথায় ?

আমাদের সকলেরই কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষকের মর্যাদা’ কবিতাটা কম বেশি জানা।  যেখানে বাদশাহ আলমগীর তার সন্তানের শিক্ষকের মর্যাদা উপস্থাপন করেছেন।  আমাদের সমাজেও এই বিষয়টা আমরা চর্চা করে থাকি। আমার মার কাছ থেকেই শুনা একটা কথা হল- বাবা মার পরেই নাকি শিক্ষকের স্থান।

আমাদের মুসলিম প্রধান দেশে হুজুর, মোল্লা , মৌলভীদের স্থানটা তাহলে আন্দাজ করে দেখুন। তাঁরা শুধুমাত্র ইসলামশিক্ষাই  নন, মোরালিটিও শিখিয়ে থাকেন। তাঁদের কাছে থেকে সন্তান তাহলে শুধু এইকাল নয়, পরকালটাও জিতে আসবে।  এমনটা ধারণা করাটাই যুক্তিসঙ্গত, যেইটা আমরা আমাদের দেশের বাবা মার মাঝেও লক্ষ্য করি।

সমস্যটা শুরু হয় যখন বিশ্বাস শব্দটা অন্ধবিশ্বাসে রূপান্তরিত হয়। এখন পত্রিকা হাতে নিলেই সচরাচর যেই খবরগুলো আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার মধ্যে দুক্ষজনকভাবে অন্যতম  হচ্ছে

‘মাদ্রাসায় হুজুর কর্তৃক ছাত্র-ছাত্রীর ধর্ষণ’।

প্রথমতই যেই বেপারটা কষ্টদায়ক, তা হচ্ছে – বাবামার আদরের সন্তানকে মানুষ করতে যার উপর তাঁরা ভরসা করেছেন , তারাই তাঁদের সন্তানকে জীবিত অবস্থায় মৃত্যুর মুখোমুখি নিয়ে  এসেছে। এই ভিক্টিম দের অধিকাংশই শিশু।  সেক্সচুয়ালিটি বোঝার মতন বয়স অনেকের হয় না। ওদের ভয় দেখিয়ে অধিকাংশ সময় চুপ করিয়ে দেয়া হয়। আর যারা চুপ থাকে না তাঁদের পরিণতি হয় নুসরাত জাহান রাফি র মতন। মৃত্যুই হয় তাঁদের একমাত্র পরিণতি ।

দ্বিতীয়ত, যারা ইসলামের রক্ষক হিসেবে নিজেদের দাবি করছে, ইসলামের জিনা এবং হোমোসেক্সচুয়ালিটি নিয়ে ফতোয়া দিচ্ছে, তারাই আবার ছোট ছেলে মেয়ে কাউকে ছাড়ছে  না।  একটা মানুষের মানসিকতা কতটা বিকৃত না হলে তাঁরা শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের মতন জঘন্য কাজে লিপ্ত হতে পারে। আমার এই পশুগুলোর সেক্সচুয়াল ওরিয়েন্টেশন নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।

আমরা এমন একটা দেশে বসবাস করছি যেখানে আমরা অন্যায়ের বিরোধিতা করতে পারিনা।  আপনার ঘরের ছোট বাচ্চাটার শিক্ষক থেকে শুরু করে এই মুসখশধারী বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষগুলো দেশের রাজনীতি পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে।  আর আমরা ? ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে পত্রিকায় এই নিউস টা পরে আফসোস আর একটা দির্ঘশ্বাস ফেলার চাইতে বেশি কিছুই করছি না।  অন্তত আপনার সন্তানকে ‘শিক্ষকের মর্যাদা ‘র অন্ধপট্টিটা পড়াবেন না। অনুরোধ রইলো।