বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের বিস্তার আরো ঘটবে এবং এটি আরো বাড়তেই থাকবে। আর এই বাড়তে থাকার আমার এই আগাম ভবিষ্যৎ বাণী দেখে যদি কেউ ভ্রু কুঁচকে থাকেন তাহলে বলতে হবে আপনি আসলে আপনার আশে পাশের কিছুই ভালো করে লক্ষ্য করছেন না।
বাবা মা হিন্দু বলে বা হিন্দু পরিবারে জন্মেছে বলে হিন্দুরা যেই অত্যাচার এই দেশের মুসলিম জনতার কাছ থেকে পায় বা পুরো হিন্দু সমাজ পাচ্ছে সেটি আসলে বলে শেষ করাটা রীতিমত অসম্ভব। এই দেশে মুসলমান মানেই হচ্ছে আসলে অবিবেচক, হৃদয়হীন এবং এরা অনেকটা ধংসাত্মক।
যে যেভাবেই বলুন, বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামগুলোতে জঙ্গিরা তাদের আধিপত্য বিস্তারে কাজ করে যাচ্ছে, এবং তারাই সফল। অনেকেই হয়তো সাধারণ মৌলবাদী ও জঙ্গিদের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পান, কিন্তু আমি কোন পার্থক্য খুঁজে পাই না।
এমনকি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ থাকা অনেকেই একমত হতে চান না যে, হেফাজত, জামাত,ওলামালীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, আমেনি, খোমেনি, আল বাগদাদি,লাদেন সাইদি,ইসলামবাদী , আহমেদ শফি,চরমোনাই, চরছিনা,দেউবন্ধী, আলিয়া,কওমি,বাংলা ভাই, আব্দুর রহমান, আনসার আল-ইসলাম এরা সবাই একই জিনিস,একি মতাদর্শে বিশ্বাসী এরা,এদের সকলেরই উদ্দেশ্য হল ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা। এরা সকলেরই একি স্লোগান শুধু মতানৈক্যটা হল ইসলামী রাষ্ট্রের ধারাটা নিয়ে,কেউ আমীরতন্ত্র আর কেউ খেলাফততন্ত্র,কিন্তু ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে তো এদের কারোরই কোন দ্বিমত নেই।
কিন্তু বিভিন্ন কারনে এরা সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। প্রথমতঃ জিওগ্রাফীকাল একটা ব্যপার ছিল- বাংলাদেশের তিন দিকে ভারত এবং একদিকে বার্মা। বাংলাদেশের সীমান্ত যদি জঙ্গিবাদী কোন রাষ্ট্রের সাথে হতো তবে এতো দিনে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হয়ে উঠতো তাতে কোন সন্দেহ নেই। দ্বিতীয়তঃ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হওয়ার পর ধর্মনিরপেক্ষতার একটা ধারা বাংলাদেশে শুরু হয়েছিলো, কিন্তু পাকিস্তানপন্তীরা সেই ধারাকেও নস্যাৎ করে দিয়েছিলো,একটা জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রের দিকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশকে, আজ আর রক্ষা করা সম্ভব কিনা?জানি নে।
বিগত কয়েক দশক ধরে সৌদি এজেন্ট,পাকিস্তানী এজেন্টরা তাদের অর্থায়নে গড়ে তুলেছে হাজার হাজার মাদরাসা, মগজ ধোলাই করে অবাদে জঙ্গিদের চাষাবাদ করা হয়েছে এই মাদরাসাগুলোতে। উন্মুক্তভাবে জঙ্গিবাদ প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বানিয়ে তুলেছে জঙ্গি। যে মানুষটি মুখ খুলে একসময় বলতো- হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই,মানুষে মানুষে বিভেদ কিসের ? সেই একি মানুষ এখন ওই একি মুখে এখন বলছে- ইসলামের জন্য জিহাদ করতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারির মধ্যে এক মাদরাসা ছাত্র নিহত হয়,দেশে পুলিশ আছে, আইন-আদালত সবই আছে,পুলিশ তদন্ত করবে,বিচার হবে। কিন্তু হত্যাকাণ্ড কে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলা, শিল্পকলা একাডেমী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স , জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়,প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রসহ বেশ কিছু স্তাপনায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মাদরাসা ছাত্র- শিক্ষকরা।
এখন শফি,আমেনি,খোমেনি আর সাইদি বাগদাদির মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পান না তাদের উদ্দেশ্যে বলি আজ আপনি আমেনির হাতে ক্ষমতা আর বন্দুক তুলে দিন এবং দেখুন আইএস প্রধান বাগদাদি হতে কতক্ষণ সময় লাগে।মুদ্রার এপিঠও যেমন ওপিঠও তেমন।
ফলে আমি মনে করি এই জঙ্গীবাদের পুরো ব্যাপারটাই এসেছে ইসলামের এই এমন কোরান কাঠামো থেকে। সেখানে বলা বক্তব্যের নানাবিধ ইঙ্গিত থেকে। ফলে এই গ্রন্থের দোষে এসব হচ্ছে নাকি মানুষ এমন উন্মক্ত হচ্ছে, এটা নিয়ে গবেষনা করাটাই এখন বড় দাবী।