একটি অবমাননাকর লেখা বা ছবি পোস্ট করুন। সাথে উল্লেখ করুন এই ছবি বা লেখা আপনার ধর্মানুভুতি আহত করেছে এবং আপনি এর বিচার চান।
এই হছে ধর্ম অবমাননা নামের এই কাঠমোল্লাদের বানানো ঘটনার একটা প্র্যাকটিকাল পরীক্ষার উদাহরন। এইবার একটু বিস্তারিত বলি, ধরেন যে আমি কোরানকে অসম্মান করা একটা ছবি শেয়ার দিলাম। অথবা মহানবীকে সন্ত্রাসী কিংবা পেডোফাইল হিসাবে উপস্থাপন করা কোন কার্টুন। এর ফলে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনবেন, এবং ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার। অনেকেই তা শেয়ার দিয়ে আমার বিচার চাইবেন।
কিন্তু ধরেন যে আমি একি জিনিস শেয়ার দিয়ে বললাম যে এই ছবি বা কার্টুন যে বানিয়েছে তার বিচার চাই। তখন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠবে না। আরো অনেকেই তখন শেয়ার দিয়ে বলবে – বিচার চাই। একি ছবি শেয়ার দিলাম সবাই। দাবি করলাম যে এই ছবি আমাদের ধর্মানুভুতি আহত করেছে। যেই জিনিস আমার অনুভুতি আহত করলো, সেই জিনিসই নিশ্চিন্তে ছড়িয়ে দিলাম আর হাজারো, লাখো মানুষের মাঝখানে। এইটা কিভাবে সম্ভব?
যেকোন পবিত্র বস্তুকে অসম্মান বা ডেসেক্রেশন একটা কর্ম। আমি পোস্ট করলেও সেটা ডেসেক্রশন, শেয়ার করলেও তাই। কিন্তু এতক্ষনে পরিস্কার হয়ে যাওয়ার কথা যে ছবিটা আসলে এইখানে কোন বিষয় না। কারন ছবিটা যদি বিষয়ই হতো, যদি তা আমাদের কাছে এতো আপত্তিকরই হতো, তাহলে শেয়ার দেয়ার মতো সাহস আমরা কোথায় পেলাম? যে অবিশ্বাসী, যার কাছে আপত্তিকর নয় সে শেয়ার দিলে না হয় বোঝা যায়। কিন্তু একজন বিশ্বাসী, যে অনুভুতি আহত হওয়ার দাবি তোলে সে কিভাবে এই ডেসেক্রেশনে অংশ নেয়?
বর্তমানে ইসলামের জন্যে অবমাননাকর হিসাবে অভিযুক্ত যতো ছবি বা লেখা অনলাইনে প্রচার হয়েছে (২০১৩ সালে পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছিল), তার বেশিরভাগই করেছে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষেরা। হয়তো একজন নাস্তিক একটা কিছু লিখলো বা কোন একটা ছবি পোস্ট করলো। কিন্তু সেটা শেয়ার করে আরো হাজারো আস্তিক মানুষ। এই ম্যাস ডেসেক্রেশন, গোটা সমাজ মিলে আপত্তিকর! লেখা, ছবি প্রচারে অংশ নেয়ার কারনটা কি? আসলে কি সমাজের বেশিরভাগ মানুষ অবচেতনে নাস্তিক হয়ে গেছে?