ঈদে বাড়ি ফেরার পথে মুড়ি মুড়কির মতো যে মানুষগুলো মরে যায় তাদেরকে আসলে আমরা চিনিনা। চিনিনা বলেই এদের হাত পা হাড্ডি গুড্ডি ভেঙেচুরে দুমড়ে মুচড়ে ভচকে গেলেও আমাদের খারাপ লাগেনা।
এই মানুষগুলো আসলে কারা? যারা ঈদের পর বাড়ি ফেরার পথে টপাটপ মরে যায়। খবরের নিচে ছোট করে ওদের কথা লেখা থাকে। দলে দলে মরে। খুব সস্তা। চিপ। ফকিন্নি।
এই শহর বড় বড় মানুষের শহর। তেলাপোকার মতো একটা ঘিনঘিনে জনগোষ্ঠী এই শহরের ভিতরে ভিতরে ফাক ফোঁকরে শ্বাস নেয়। নড়াচড়া করে। আপাতদৃষ্টিতে অপ্রয়োজনীয়। মেট্রোপলিটনের বোঝা। মরলেই কি। বাড়ি ফেরার পথে বছর বছর মরাই এদের নিয়ম।
আমার ছুটা বুয়া, আপনার ময়লার বুয়া, পায়খানার পাইপ আটকে গেলে যে লোকটা এসে নোংরা ঘাটে। এটিএমের সিকিউরিটি গার্ড, টেইলার্সের দর্জি, সকাল সকাল আলু পটলের ঝুড়ি নিয়ে ড্রেইনের সামনে বসে যে লোকটা। আপনার রিকন্ডিশনড প্রিমিওটা কিনতে যে ফরেন কারেন্সি লাগলো, তার যোগানদাতা এক ঝাঁক গার্মেন্টসের মেয়ে। যে বাড়িটায় থাকেন, তার ইটগুলো একের পর এক বসিয়ে উঁচু করেছিল এক পাল নির্মাণ শ্রমিক …
ঘাবড়ানোর কারণ নাই। এরা সারপ্লাস। বাড়তি। এক দল ভচকাবে, পিঁপড়ার মতো আরেক দল এসে হাজির হবে। গ্রামে কর্মসংস্থান নাই, ফসলের দাম নাই।
এরা আসবেই। বছর বছর। বানের ঢলের মতো। রাস্তাঘাটে মরে মরে একটু কমুক।