আজকাল ধর্মানুভূতি ও ধর্ষানুভূতি একাকার

দেশের আনাচে কানাচে, মোড়ে মোড়ে, গলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে মসজিদ-মন্দির … এসব এত বেশী গড়ার মানে দেশে এসব জায়গায় যাবার লোকের সংখ্যা বেড়েছে!!!
কোথায় তারা????

প্রতিবছর কোরবানীর সময় আগের বছরের তুলনায় বেশী পশু কোরবানি হয়, নিরীহ পশু গুলাকে দো-পেয় জন্তুর বাচ্চারা কোরবানি দেয়, বলি দেয় … এত ধার্মিক …
কোথায় তারা????

এসব বাদ দিয়ে মোড়ে মোড়ে পতিতালয় স্থাপন করা হোক … কারণ দেশের গাণ্ডুদের আজ এটার বড্ড বেশী দরকার … যে স্থানের, যে পেশার, যে বয়সের হোক শুয়ারের বাচ্চাদের বাসনা তেতিয়ে উঠে …

আর কিছু ভণ্ডের বাচ্চা আছে, তারা শুধু মেয়েদের দোষ দেখে, মেয়েদের পোশাকে সমস্যা, হাটায় সমস্যা, কথা বলায় সমস্যা … মেয়েদের সবকিছুতেই ওদের সমস্যা …

বলি … ৩ বছরের বাচ্চার কিসে সমস্যা, প্রতিবন্দী মেয়েটার কোথায় সমস্যা, পাগলী মহিলার কোথায় সমস্যা, বোরখা পড়া মেয়ের কিসে সমস্যা????????

======================

এই স্ট্যাটাসটা পড়ে আমি ঠিক বুঝিনি যে কোথায় ধর্মকে নিয়ে কটুক্তি করা হলো আর কোন জায়গায় ধর্মানুভূতিতে আঘাত এলো! বরং- স্ট্যাটাস পড়ে মনে হলো- লেখক আশা করেছিলেন- মসজিদ মন্দিরে যাওয়া, কোরবানি দেওয়া ধার্মিক লোকদের ধর্ষণের মত অধর্মের কাজ করার কথা না … যেহেতু দেশে ধর্ষণ সহ অধর্মের ঘনঘটা- সেই অনুযায়ী তো মসজিদ-মন্দিরের আধিক্য না হয়ে পতিতালয়ের আধিক্য হওয়ার কথা … এই লেখাটার রাগের অভিমুখ তো ধর্ষণ অপরাধ ও ধর্ষকরা। ধর্ষানুভূতিতে আঘাত পেলে কেউ পেতে পারে … অথচ- এই স্ট্যাটাস লেখার অভিযোগে লেখককে গ্রফতার করা হলো …

স্ট্যাটাসটা দিয়ে ছেলেটা নিজেই তা ডিলিট করে দিয়েছিল – কমেন্টে কিছু ধার্মিক (ধর্ষক?) ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনায়। ছেলেটার স্ট্যাটাস ঘেটে ধর্ম-টর্ম নিয়ে কোন কিছু দেখলাম না। সাম্প্রতিক একের পর এক ধর্ষণের ঘটনাগুলো নিয়ে অনেক স্ট্যাটাস আছে। সেরকই একটা স্ট্যাটাস ছিল এটি। কিন্তু ধার্মিক-পুঙ্গবেরা তাদের ধর্ষানুভূতিতে আঘাত পাওয়ায় খেপে গিয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সরব হয়। ছেলেটা যতই বলুক- ‘ভাই ধর্মকে আঘাত দেয়ার কোন উদ্দেশ্য আমার নাই’- সেটা মানবে কেন? ফলে একটা পর্যায়ে স্ট্যাটাসটা ডিলিটই করে দেয় … আরেকটা স্ট্যাটাস দিয়ে দুঃখ প্রকাশও করেঃ “আমি আবারও দুখিঃত।
আমি আসলে ধর্ষনের বিষয়টা নিয়ে বেশী আবেগী হয়ে গিয়েছিলাম।
কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আমি আঘাত দিতে চাই নি….
সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সকলে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকায় বিশ্বাসী…
তাই আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না……. “

কিন্তু মানবে কেন? ধার্মিক- ধর্ষকের দল … ধার্মিক- ধর্ষক পুলিশ … ধার্মিক- ধর্ষক রাষ্ট্র … ছেলেটাকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারই করা হলো …

আসলেই- আজকাল ধর্মানুভূতি ও ধর্ষানুভূতি একাকার … সমার্থক … ধর্মের প্রতি কথিত শ্রদ্ধাশীল হতে গেলে ধর্ষণের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় … ছেলেটি এই জায়গাটি বুঝতে ভুল করেছিলো …