লন্ডন হামলা

ইংলেন্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লন্ডন হামলার জন্য দায়ী ইসলামী চরমপন্থা। অর্থ্যাৎ লন্ডনে হামলা চালিয়েছে ইসলাম। হ্যাঁ, এটাই সত্যি। মুসলমানরা হামলা চালিয়েছে আর ইসলাম হামলা চালিয়েছে- এই দুইয়ের তফাত বিশ্ব যত দ্রুত বুঝতে পারবে ততই মঙ্গল। মানুষের ধর্মীয় পরিচয় ধরে বৈষম্য করা আর ধর্মের সন্ত্রাসবাদকে শক্ত হাতে দমন করা এক জিনিস নয়। মসজিদ এবং কুরআন চর্চাকে ইউরোপ শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে আগামী দিনে আরো ভয়ংকর কিছুর জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে।

ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা করলে তার সন্ত্রাসকেও গ্রহণ করতে হবে। মুসলিমদের পৃষ্ঠপোষকতা আর ইসলামকে পৃষ্ঠপোষকতা যে এক না সেটা প্রাশ্চত্যের সেক্যুলার দেশগুলো বুঝে উঠতে না পারলে তাদের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে ডানপন্থি শক্তি ক্ষমতায় চলে আসবে। আজকের ইউরোপ ফের ডানপন্থিদের খপ্পরে যাওয়া মানে সভ্যতার ভূতে পায়ে ভর করে পেছনে চলা।

বৃটেনের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন লন্ডন হামলার জন্য কিছুটা তো দায়ীই…। ম্যানচেস্টার হামলার পর উনি মন্তব্য করেছিলেন, ব্রিটিশদের যুদ্ধনীতিই এই হামলার জন্য দায়ী। একটা সন্ত্রাসী হামলাকে জাস্টিফাই সব সময়ই সন্ত্রাসীদের দায়মুক্ত করে। জেরেমি করবিন যখন বুঝাতে চান ইংলেন্ড যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তারাই প্রতিশোধ নিচ্ছে তখন সন্ত্রাসীরা তাদের কৃতকর্ম নিয়ে অনুপ্রাণিতই হবে। লন্ডন হামলার জন্য তাই জেরেমি করবিন পরোক্ষভাবেই দায়ী নয়?

বাংলাদেশের টেলিভিশন টকশোগুলোতে মোল্লাদের ধরে আনাটা অনেকে বলছেন এটা ওদেরকে হাইলাইট করা হচ্ছে বেশি করে। এটা করা উচিত নয়। আমার মনে হয় মোল্লাদের বেশি করে টিভিতে এনে ধোলাই দেয়া উচিত। ইউটিউবে এরকম প্রচুর ভিডিও পাওয়া যায় পশ্চিমের টিভি টকশোগুলোর। যেখানে একজন মুসলিম ইমামকে ডেকে এনে জিহাদ, নারীর প্রতি বৈষম্য নিয়ে এমনভাবে তুলোধূনো করা হয় যে মাওলানা সাব দৌড়ে পালিয়ে বাঁচে। বাংলাদেশে ঠিক তার উল্টো। এখানে হেফাজত ইসলামের কোন নেতাকে ডেকে এনে কথা বলতে দিয়ে টকশোর হোস্ট কোন নিয়ন্ত্রণই নেন না। আলোচক বাছাই করেন এমনভাবে যাতে ইসলামিস্ট বক্তাকে চেপে ধরার মত জাঁদরেল কেউ না থাকে। তারপর সলিমুল্লাহ খানের মত হেফাজতী বুদ্ধিজীবীকে ডেকে এনে তাকে দিয়ে বলায়- মাদ্রাসার হুজুরদের লজিকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষকও টিকবে না। মাদ্রাসাতে অত্যাধুনিক শিক্ষা পড়ানো হয় কাজেই মাদ্রাসা শিক্ষার সংস্কারের দরকার নেই… ইত্যাদি।

এর ফল বাংলাদেশ পেতে শুরু করেছে। ইউরোপ না হয় টিকতে না পেরে শেষতক ইসলামের বিরুদ্ধে কঠর হতে বাধ্য হবে। কিন্তু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের সে সুযোগ হবে না সলিমুল্লাহ খান, বদরুদ্দি উমার, ফরহাদ মজহারদের কারণে। কাজেই পরিণতি সিরিয়া…। খুব কষ্ট হয় দেশটার জন্য…।