রাঙ্গামাটির ছাত্র ইউনিয়নের চায়না পাটোয়ারী ও শাওন বিশ্বাস ফেইসবুকে কাউকে হাড্ডি-মাংস খুলে নেয়ার হুমকি দেয়নি। তবু তাদের একজন শাওন বিশ্বাস পুলিশের ভয়ে পলাতক, চায়না পাটোয়ারী জেলে। রাঙ্গামাটির তৌহদী জনতা ঘোষণা দিয়েছে, প্রশাসন যদি এদের বিচার না করে তাহলে তারাই এদের ধরে এনে বিচারের ব্যবস্থা করবে…।
চায়না তার ফেইসবুকে স্যাটায়ার করে লিখেছিল, ভাস্কর্য সরানোর ফলে আল্লাহ গজব হিসেবে ঘূর্ণিঝড় মোরা দিয়েছে…। শাওনের ফেইসবুক পোস্টটির কথাই ধরা যাক। উনি লিখেছিলেন, আল্লার হুকুমে যদি একটা গাছের পাতাও না নড়ে তাহলে হুজুররা যখন ধর্ষণ করে সেটা কি আল্লার হুকুমেই ঘটে? এতেই রাঙ্গামাটির তৌহদী জনতার অনুভূতিতে আগুন লেগে গেছে। চায়না পাটোয়ারীকে শনিবার ৫৭ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে নেয়া হয়েছে। কি চমৎকার ধর্মের পিঠে চড়ে মদিনার পথে চলছে স্বদেশ…!
মেয়েদের পোশাক ভূমিকম্প, সাইক্লোন হবার জন্য দায়ী- এরকম বর্ণবাদী লিঙ্গবৈষম্যমূলক বক্তব্য দিয়েও গণভবনের ইফতার পার্টিতে দাওয়াত পাওয়া যায়। সুলতানা কামালের মত মানবাধিকার কর্মীকে হাড্ডি-মাংস খুলে নেয়ার কথা বলেও বুক টান টান করে এদেশে হাঁটা যায়। শাওন-চায়নার ফেইসবুক পোস্ট পড়ে কেউ মারা গেছে কিংবা কারুর জীবন হুমকির মুখে পড়েছে এরকম কোন খবর আমাদের জানা নেই। মাওলানা আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ কিংবা তারেক মুনায়েমের মত মুফতিরা প্রকাশ্যে অন্যের ধর্মের দেবদেবীদের লাত্থি দিয়ে ভাঙ্গার কথা বলেও, দেশে জঙ্গি-জিহাদীদের উশকানি দাতা হিসেবে চিহিৃত হবার পরও এদের ধরতে আইনের হাত লম্বা হবার পরিবর্তে নিজের পশ্চাৎদেশই চুলকাতে ব্যস্ত!
কুখ্যাত ৫৭ ধারা করাই হয়েছে দেশের মুক্তচিন্তা, প্রগতিশীলদের হেনস্থা করতে। এই দুইজন ভক্তভোগীকে আইনী সহায়তা দিতে স্থানীয় সেক্যুলার মুক্তচিন্তার আইনজীবীরা এগিয়ে আসবেন আশা করি। রাঙ্গামাটির সর্বস্তরের মুক্তচিন্তার মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ান…।