খুব সম্ভবত দুই বছর বয়সী একটি শিশু। পৃথিবীর যত বয়স তার থেকে কয়েকগুন বেশী অভিমান নিয়ে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে সমূদ্রের তীরে। নিথর একটা দেহ। সমূদ্রের পানি এসে বার বার যেন ধুয়ে দিতে চাইছে এই শিশুর সমস্ত অভিমান। লাল জামা, নীল প্যান্ট, পায়ে ছোট্ট এক জোড়া জুতো…
সিরিয়ার ভয়াল যুদ্ধ থেকে বাঁচতে তাঁর পরিবার সমূদ্র পথে ইউরোপে আসতে চেয়েছিলো। পারেনি শেষ পর্যন্ত। একটা ডিঙ্গি নৌকা আর কতটুকুই বা পারে?
সারারাত আমার ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে ধরেও এই দুঃসহ স্মৃতি থেকে বের হতে পারলাম না। যতদিন বেঁচে থাকব, খুব সম্ভবত মগজের প্রতিটি কোষে এই ভয়াল ছবির অভিজ্ঞতা নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
পশ্চিমারা যুদ্ধে রসদ দেয়…অস্ত্র দেয়। তাদের স্বার্থ হাসিল করে। আবার এই যুদ্ধ থেকে বাঁচতে উদ্ভ্রান্ত মানুষগুলো যখন পশ্চিমে বাঁচতে আসে তখন তাদের জন্য রাস্তাটাও বন্ধ করে দেয়। ঘরে আগুন দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেবার মত।
আমার সৃষ্টি কর্তাই বা আজ কোথায়? সূরা আল ওয়াক্বিয়া তে তিনি বলেছেন,
“অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয় এবং তোমরা তাকিয়ে থাক,তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না” (৮৩-৮৫)
কতটুকু নিকটে ছিলেন আপনি? কতটুকু কাছে ছিলেন? কি করে এমন একটি দেহ আপনার সামনে নিথর হয়ে গেলো? কি শান্তি, কি মর্ম, কি উদ্দেশ্য আছে এই অমানবিক, ভয়াবহ আর জীবতদের জন্য এই হৃদয়ভাঙা মৃত্যুর এমন মিছিলে?
কবে দেবেন সেই উত্তর? কবে পাব এই উত্তর?আয়