সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক

২০১৫ সালে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মারা গেলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছিল। তাহলে পাহাড়ে ১৪৬টি তাজা প্রাণ লাশ হয়ে যাবার পরও কেন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে না? বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের লাশকে সন্মান জানাতে আমাদের প্রেসিডেন্ট তখন ছুটে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। এতগুলো মানুষ মারা গেলে দুনিয়া সব রাষ্ট্র প্রধানই তার বিদেশ সফল বাতিল করে দেশে ফিরে আসতেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শুনেছি এখন লন্ডন আছেন। ইত্তেফাক সেই ছবি প্রকাশ করেছে- প্রধানমন্ত্রী তার বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিকী ও প্রবাসী হোমড়াচোমড়াদের সঙ্গে হাস্য বিনিময় করছেন।

এতে ইত্তেফাকের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। তাদের কথা, ইত্তেফাক এই সময়ে এরকম ছবি ছাপছে যখন পাহাড়ে প্রায় দেড়শো জন মানুষ মারা গেছে… তখন এই ছবি ছেপে ইত্তেফাক মানুষকে কি বুঝাতে চায়…। দুঃখের মাঝে হাসি পাওয়াই হচ্ছে আমাদের নিয়তি। এই অসভ্য বর্বর লোকগুলো বুঝে এরকম সময়ে প্রধানমন্ত্রী এরকম ছবি ছাপানো ঠিক নয় কিন্তু এটা বুঝে না এরকম সময়ে প্রধানমন্ত্রী এরকম করাটা ঠিক নয়…।

আমাদের ক্রিকেট প্রজন্ম, ম্যাশ প্রজন্ম, ভরে দেওয়া প্রজন্মের কিছু যায় আসে না পাহাড়ের কান্নায়। হাওরের কান্নায়, সাঁওতালদের কান্নায়, লংগদুদের কান্নায়, নাসিরনগরের কান্নায়, সুখিয়া রবিদাসের কান্নায় তাদের কিছু যায় আসে না…। গোটা বিশ্ববাসী এখন জানতে শুরু করেছে ক্রিকেটের নাম করে এইদেশের দর্শক কতখানি বর্ণবাদী, অসুস্থ জাতীয়তাবাদী, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক মানসিকতার…। মাশরাফিকে জিজ্ঞেস করেছে বিদেশী সাংবাদিকরা, কুকুরের গায়ে ভারতের পতাকা লাগানো বিষয়ে। বিব্রত মাশরাফি জানালেন দর্শকদের এইসব অসভ্যতায় তার অসহায়ত্ব কতটা। ক্রিকেট যে নিছকই একটা খেলা বার বার বলে বলেও এই ভদ্রলোক তার ভক্তদের কন্টল করতে পারেননি…।

কিন্তু এসব কাজের নির্যাস যে আসে এক শ্রেণীর মিডিয়া থেকেই সেটা প্রথম আলোর পত্রিকা পড়লেই পরিস্কার হওয়া যায়। কুকুরের গায়ে ভারতের পতাকা লাগানো ট্রলকে এই পত্রিকা জাস্টিফাই করে লিখেছে- এরকম প্রচার ভারত থেকেও অতিতে করা হয়েছে। তার মানে বাংলাদেশের যে দর্শক এরকম নিন্মরুচির ফটোশপ করেছে তার হয়েই প্রথম আলো সাফাই গাইল। এই কাগজটি গেল ভোটারবিহীন নির্বাচনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলা ভোটারদের ছবি ছেপে নির্বাচন বিরোধীদের কাছে হিন্দুদের আলাদাভাবে তুলে ধরেছিল। যার পরিণামে নির্বাচন পরবর্তী চরম হামলা নির্যাতনের শিকার হয় তারা। ক্রিকেট খেলাকে পুঁজি করে বাংলাদেশর প্রথম সারির সব মিডিয়া ঘৃণা আর অবিশ্বাসের সৃষ্টি করেছে। এই মিডিয়াগুলির কাছে এখন ক্রিকেট ছাড়া বড় কোন নিউজ নেই। নেহাত দায়ে পড়ে পাহাড়ের সংবাদ ছাপছে। তাও ‘বীর সেনাবাহিনী’ এইরকম ফোকাসই অনেকখানি জুড়ে…।