মুসলমানদের সন্ত্রাস

মুসলমানরা কেবল মন্দির গির্জা পেগোডাতেই হামলা চালায় না- তারা নিজেদের মসিজদে হামলা চালিয়ে নমাজরত মুসলিমদেরও হত্যা করে। এক্ষেত্রে তাদেরকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ বলা যেতেই পারে! মসজিদে নামাজরত অবস্থায় হত্যার ইতিহাস বলেন ঐতিহ্য বলেন তার সময়কাল ইসলামের সমবয়সী। মসজিদে ভেতর খুন হয়েছিল হযরত আলী এবং হযরত উমর। দুজনই নামাজরত ছিলেন। আর উসমান বুকে কুরআন চেপে ধরেও রক্ষা পাননি। ঘাতকের তলোয়ারের আঘাতে উসমানের বুকসমেত কুরআন ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল…।

হযরত মুহাম্মদ মুসলমানদের শিক্ষা দিয়েছিলেন তাদের একমাত্র শত্রু হচ্ছে ইহুদীরা। মৃত্যুকালেও তিনি তার অনুসারীদের কাছে শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন আরব ভূখন্ড থেকে ইহুদীদের বিতারিত করে দেয়ার। সম্ভবত নিজের ধর্মের জন্য তিনি ইহুদী ধর্মকে চিরকাল ভয় পেতেন। অথেনটিক সোর্স ধরে নিজের নবীত্বের গোমড় ফাঁস করায় তিনি ইহুদী আলেমদের উপর এমনিতেই চটে ছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না, বিষবৃক্ষ তিনি নিজেই নিজের ধর্মে রোপণ করে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর মাত্র তিন দশকের মধ্যেই তাই তার অনুসারীরা নিজেদের মধ্যে রক্তের হোলি খেলায় মত্ত হয়ে উঠে। ইহুদী-খ্রিস্টানদের আরব চ্যুত করে মুসলমানরা তারপর নিজেরাই নিজেদের রক্তের নদী বানিয়েছে।

ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগেই রক্তাক্ত হয়ে উঠছে মুসলিম বিশ্ব। পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে গাড়িবোমা হামলায় গতকাল ৩৫ জন মানুষ মারা গেছে। বৃহস্পতিবার আফগানিস্থানে বোমা হামলায় ২৯ জন মারা গেছে। মক্কার কাবাতে হামলার ছক ফাঁস হবার খবর পাওয়া গিয়েছে।… যারা মারছে তারা মুসলমান, যারা মরছে তারাও মুসলমান। তাদের প্রত্যেকেরই একই কুরআন একই নবী তবু একে অপরকে ইসলামের শত্রু বলে মনে করে। বাংলাদেশ সরকার ঈদের নামাজে কেবল মাত্র জায়নামাজ ছাড়া মুসল্লিদের ঈদের নামাজে আর কিছু আনতে নিষেধ করেছে। এখানেও বোমা হামলার আশংকা! কারা বোমা হামলা করবে? ইহুদীরা? হিন্দুরা? খ্রিস্টানরা?

নাহ্, মুসলমানদেরই একটি অংশের ভয়ে আরকটি অংশ ঈদের নামাজ পড়তে ভয় পায় পাছে বোমা হামলা ঘটে। কিছুদিন আগেই মিশরে একটি খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা চালিয়েছিল ইসলামী জিহাদীরা। তাতে পঞ্চাশ জনের বেশি খ্রিস্টান তীর্থযাত্রী মারা গিয়েছিল। বাংলাদেশে সারা বছর থেমে থেমে মন্দিরে হামলা ঘটে। পরিত্যাক্ত বাবরী মসজিদকে হিন্দু ধার্মীকরা ভেঙ্গে ফেলেছিল বলে বাংলাদেশের সমস্ত হিন্দুদের শত্রু আখ্যা দিয়ে তাদের উপর চলেছিল তুমুল হামলা নির্যাতন। একই ঘটনা ইরাকের মসুলে ঘটেছে কয়েকদিন আগে। বিখ্যাত নূর মসজিদটিকে গুড়িয়ে দিয়েছে আইএস জিহাদীরা। কিন্তু পৃথিবীর কোন মসজিদ থেকেই এ জন্য কান্নার রোল উঠেনি।

কাজটি যদি ভারত কিংবা মায়ানমারে ঘটত তাহলে এতক্ষণে অভিশাপে অভিশাপে মসজিদের বাতাস ভারী হয়ে উঠত। বৌদ্ধ আর হিন্দু অধ্যুষিত পাড়াগুলোতে চলত ঈমানদার মুসল্লিদের হামলা। মুখে আইএসকে মুসলমান নয় বললেও মুসলমানদের রিয়েকশনই বলে দেয় আইএস তাদের ধর্মের ভাই। এ কারণেই বাংলাদেশের আইএস সদস্যরা ঈদের নামাজে হামলার করতে চাইলেও মুসলমানদের নিরবতা প্রমাণ করে এটা মুসলমানদের অভ্যন্তরীন সমস্যা। ইসলামের এই গৃহযুদ্ধ এই ধর্মটি পুরোপুরি ধ্বংস না হলে থামবে না। কাজেই আরো বহু রক্ত নদী যে আমাদের প্রত্যক্ষ করতে হবে সেটা বলা বাহুল্য। কাল্পনিক ইহুদী খ্রিস্টান বৌদ্ধ হিন্দুদের শত্রু না বানিয়ে মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় ইতিহাসের দিকে একবার নির্মোহভাবে তাকাক। আত্মবিশ্লেষণ করুক…।