ঈদের নামাজে বোমা হামলা চালাতে চায় বিভিন্ন ইসলামী জিহাদী দল। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এরা কেমন মুসলমান ঈদের নামাজ না পড়ে উল্টো ঈদের নামাজে হামলা চালিয়ে মুসল্লিদের হত্যা করতে চায়? যারা ইসলাম কায়েম করতে চায় তারাই কেন মুসলমানদের ঈদের নামাজে বোমা হামলা চালায়?… আপনাদের ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতার এই সুযোগ নিয়েই কিছু তাকিয়াবাজ এর পিছনে ইহুদীদের ষড়যন্ত্র দাঁড় করায়। আপনাদের বুঝাতে তারা সক্ষম হয়, মুসলমান হলে ওরা মুসলমানদের নামাজে হামলা চালাতে পারত? তাও ঈদের নামাজ…
শেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর ইংরেজদের হাতে ক্ষমতা হারিয়ে ভারতবর্ষকে দারুল হার্ব ঘোষণা করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীকালে হাজি শরীয়তুল্লাহ, তার ছেলে দুদু মিয়া, ফকির মজনু শাহ, তিতুমীর প্রত্যেকেই ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষকে দারুল হার্ব ঘোষণা করে ‘জিহাদ’ করতে জনগণকে সংঘবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। এ সময় ভারতবর্ষে জুম্মার নামাজ এবং দুই ঈদের নামাজ পড়া হারাম বলেই আলেমরা মত দিয়েছিলেন কারণ মুসলমানরা ইংরেজদের হাতে ক্ষমতা হারিয়েছে। ভারতবর্ষ ইংরেজদের তাগুদি শাসন কায়েম হয়েছে। অতএব ভারত তখন দারুল হার্ব। যদিও আলেমদের আরেক অংশ এর সঙ্গে দ্বিমত প্রসন করে মত দিয়েছিল, যেহেতু ইংরেজরা মুসলমানদের আজান দিতে দিচ্ছে, নামাজ ও হজ পালনে বাধা দিচ্ছে না তাই ভারতবর্ষকে দারুল হার্ব বলা যাবে না। বলা যেতে পারে ‘দারুল আমান’ যেখানে জুম্মা এবং দুই ঈদের নামাজ পড়া বৈধ…
ইসলাম নিয়ে এরকম দ্বিমত আলেমদের মধ্যে নতুন কিছু নয়। তবে দারুল হার্বে জুম্মা এবং ঈদের নামাজ পড়া যে হারাম সেকথা আলেমরা সবাই জানেন এবং তারা একমত। তাদের দ্বিমত রাষ্ট্রটি দারুল হার্ব নাকি দারুল ইসলাম। আজকে বাংলাদেশেও আলেমরা নিজেরা একই বিষয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্ত। কিন্তু তারা সবাই জিহাদ, খিলাফত, জিজিয়া, গণিমত বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত। ভাল বা উদার ইসলাম বলতে কিছু নেই। জিহাদ, খিলাফত, গণিমতের মাল কোন সুস্থ চিন্তাধারা নয়। ধর্মের পরিচয়ে মানুষকে পদানত করে রাখা, তৃতীয় শ্রেণীর মর্যাদা দেয়া, স্বাধীন মানুষকে গণিমতের মালে পরিণত করে দাসে পরিণত করাকে আর যাই হোক সভ্য সুস্থ কোন ধর্ম বলা যেতে পারে না। ঈদের নামাজে মুসল্লিদের জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে আনতে না বলার মধ্যেই এই ধর্মের অনুসারীদের সন্ত্রাসী চেহারাটাই ফুটে উঠে…
ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে পরিস্কার ইসলামী ফতোয়া রয়েছে। ইসলাম মতে ‘দারুল হার্বে’ ঈদের নামাজ পড়া হারাম। দারুল হার্ব হচ্ছে যে স্থানে এখনো ইসলামী শাসন কায়েম হয়নি। এরকম স্থানে নবী মুহাম্মদ ঈদের নামাজ পড়েননি। তিনি ইসলামী শাসন কায়েম করার পরই মদিনাতে ঈদের নামাজ পড়েছিলেন। তাই আইএস সদস্যরা বাংলাদেশের শোলাকিয়া ঈদের জামাতে হামলা চালিয়েছিল। এ বছরও গোয়েন্দাদের সতর্ক থাকার বার্তা আছে। জ্বি না ভাই, মুসলমানদের ঈদের নামাজে ইহুদীরা বোমা হামলা করতে বসে নেই। তারা যদি ধর্ম নিয়ে বসে থাকত তাহলে জ্ঞান-বিজ্ঞানে এত উন্নতি তাদের হতো না। ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকে মুসলমানরা। তাই তারা পৃথিবীর সবচেয়ে গরীব, অনুন্নত, অশিক্ষিত, বর্বর, সন্ত্রাসী…। যারা আজো শুধু অন্য ধর্মালম্বীদের উপরই হামলা চালায় না, নিজেদের উপরও ঘৃণার আগুন ঢালতে দ্বিধা করে না…