ধামড়াইতে রথ মেলার মাঠে কোরবানীর হাট

ধামড়াইয়ে যেখানে রথমেলা হয় সেই মাঠে এবার কোরবাণীর হাট বসানোর চেষ্টা করছে পৌর মেয়র। মুসলমানদের কাছে শুকর ঘৃণিত, হিন্দুদের কাছে গরুর মাংস। দুটোই কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই না। হিন্দুদের গরুর মাংস খাওয়া তাদের ধর্ম বিরোধী নয় (পড়ুন Collected works of Swami Vivekananda, Advaita Asharama,1963, Vol III, page 172)।

অন্যদিকে ইহুদীরা শুকর খায় না বলেই মুহাম্মদ তাদের অনুকরণে শুকর খাওয়া নিষিদ্ধ করেন। যাক এ প্রসঙ্গ, কথা হচ্ছে, যে দেশ নিজেকে মুসলমান মনে করে শুকর আমদানিই নিষিদ্ধ করে রেখেছে সেদেশেহিন্দুদের মন্দিরের সামনে কোরবাণীর গরুর হাট বসাতে চায় কি উদ্দেশ্য? বাংলাদেশে শুকরের মাংস আমদানি নিষিদ্ধ কারণ ইসলামে শুকর হারাম। বাংলাদেশ সরকারের আমদানি নিষিদ্ধের তালিকায় তাই এক নম্বরে জীবন্ত শুকর, শুকরের মাংসসহ শুকর দিয়ে প্রস্তুতকৃত যে কোন ধরণের দ্রব্য।

মজা হচ্ছে আমরাই আবার টকশোতে ইন্ডিয়া বর্ডারে গরু আমদানি বন্ধ করে দিলে কিংবা উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা গরু মাংস খেতে বাধা দিলে নাকের পানি চোখের পানি এক করে ফেলি। ভারতের বিজেপি হিন্দুত্ববাদী হলে বাংলাদেশে শুকরের মাংস নিষিদ্ধ কোন পর্যায়ের ধর্মনিরেপক্ষতা কেউ একটু ক্লিয়ার করবেন?

ধামড়াই পৌর মেয়র বলেছেন, হিন্দুদের মাঠে গরুর হাট বসালে কিভাবে অপবিত্রতা ঘটে তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি নিশ্চয় শুকরের হাট বসালে পবিত্রতার নতুন সংজ্ঞা আমাদের জানতে আসবেন? একটা মাঠে শত শত বছর ধরে হিন্দুদের পুজা আর রথমেলা হয়ে আসছে সেখানে হঠাৎ গরুর হাট করতে চাওয়ার মানে হচ্ছে পায়ে পা দিয়ে সাম্প্রদায়িক রেষারেষি তৈরি করা।

আমরা এদেশের মানুষ এমনিতেই প্রচন্ড রকমের সাম্প্রদায়িক- হিন্দু মুসলমান উভয়েই। সেখানে সরকারীভাবে হিন্দুদের ধর্মীয়ভাবে ব্যবহৃত একটি জায়গায় গরুর হাট বসলে পরবর্তীতে সেখানে গরু কোরবাণী দেয়াই শুরু হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত আশার কথা, মেয়র চেষ্টা করলেও প্রশাসন থেকে সবুজ বাতি জ্বলেনি…