সাবিনার গল্প

সাবিনাদের কপালে যেখানে সরকারি হাসপাতালেই সুচিকিৎসা জুটে না সেখানে একেবারে সিএমএইচে তার চিকিৎসা নিতে যাওয়া কম ভাগ্যের কথা নয়! ওর গরীব বাপ জীবনে পয়সা দিয়ে ডাক্তার দেখিয়েছে কিনা সন্দেহ। সিএমএইচ তো সেনা হাসপাতাল তাই না? মানে সাবিনা যে বাড়িতে কাজ করত সেই সেনা অফিসারই যে সাবিনাকে চিকিৎসা করতে ঐ হাসপাতালে পাঠিয়েছে অনুমান করা যায়।

সাবিনার ভাল চিকিৎসা হবে দেখে নিয়েন। ছয় মাস পরে ওর চেহারা দেখে আপনারাই চিনতে পারবেন না। সাবিনাকে হয়ত নগদ কিছু টাকা দিয়ে ওদের গ্রামের বাড়িতে এরপর পাঠিয়ে দেয়াহবে। সাবিনার বাপ এক সঙ্গে পঞ্চাশ হাজার টাকা জীবনে দেখেছে কিনা সন্দেহ। নিশ্চয় এই পরিমাণ টাকা পেয়ে ওদের অভাবী ঘরে খুশির একটা বন্যা বয়ে যাবে।…

আপনারা খালি মানুষের মন্দটাই দেখেন। আচ্ছা এই দেশে কোন ক্ষমতাবানের বিরুদ্ধে আইন আদালতে কোনদিন কিছু প্রমাণ করতে পেরেছে? সেনাবাহিনী, ক্রিকেটার, শিল্পপতি, লিডারদের বাড়িতে কোন শিশু নির্যাতন হলে কে কবে কি ছিড়তে পারছে অতিতে তা দেখাতে পারবেন? নেহাত সাবিনার মনিবরা ভাল মানুষ বলেই দেখবেন তাকে সুচিকিৎসা করিয়ে টাকা-পয়সা দিয়ে ভাল মত বিদায় করে দিবে। এটাই কি বেশি না? যদি কিছু না করেই এমনি এমনিই ছেড়ে দিতো তাহলে কোন বালটা ছিড়তেন?… দুঃখিত মুখ খারাপ করার জন্য…।

আর আরেকটা কথা ভাইসাহেব বিবিসাহেবরা, একটি করে আয়েশা লতিফ ঘুমিয়ে আছে সকল ভাইসাহেব আর বিবিসাহেবের অন্তরে… এই সত্যিটা নিত্য অপ্রকাশিত থেকে যায় যতদিন সাবিনারা বোবার মত খেটে মরে ততদিন পর্যন্তই। দশ-এগারো বছরের একটা বাচ্চাকে রাত একটা পর্যন্ত খাটান না আপনারা? আপনাদের সেবা করতে গিয়ে কোনদিন দ্বিমত করলেই দেখবেন আপনার ভেতর থেকেই বেরিয়ে পড়ছে একটা আয়েশা লতিফ…।