জনসমক্ষে অ্যাসিড বহনরত অবস্থায় দুবার ধরা পড়লেই ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার প্রস্তাব করেছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ব্যাপক বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে দ্বিগুণ বেড়েছে এই অপরাধ। গতকাল শুক্রবার এ প্রস্তাব করা হয় বলে বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়।
একের পর এক অ্যাসিড হামলার ঘটনায় দেশটিতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্তরে এই হামলা ঠেকাতে সাজা কঠোর করার বিধান আনার দাবি ওঠে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড অ্যাসিড হামলার ঘটনায় কঠোর শাস্তির নিশ্চিত করার পক্ষে মত দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড বলেন, ১৮ বছর বয়সের নিচে কারও ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থ কেনা নিষিদ্ধ করতে চান তিনি। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে ঘটা ক্ষতিকর দাহ্য পদার্থবিষয়ক সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ২১ শতাংশই সংঘটিত হয়েছে কিশোরদের দ্বারা। তিনি বলেন, সরকার এই বার্তা দিতে চায়, যেসব কাপুরুষ এটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, তারা আইনের হাত থেকে পালাতে পারবে না।
নতুন আইনটি পাস হলে জনসাধারণের মধ্যে ক্ষতিকর পদার্থ বহনের বিষয়টি কমবে বলে আশা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, কেউ যদি ক্ষতিকর পদার্থসহ ধরা পড়ে, তাদের এটি বহন করার যুক্তিযুক্ত কারণ প্রমাণ করতে হবে। ১৮ বছরের বেশি বয়সী কারও কাছে যদি দুবার অ্যাসিড পাওয়া যায়, তাহলে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
চলতি বছর কনজারভেটিভ পার্টির সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৮ বছরের নিচে কারও ক্ষতিকর পদার্থ কেনার বিষয়টি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘অ্যাসিড হামলা একেবারে বিদ্রোহের মতো। এই সন্ত্রাসের শিকার মানুষগুলো পুরোপুরি সুস্থ হয় না। একের পর এক অস্ত্রোপচার চলতে থাকে, এভাবে জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।’
এর আগে গত আগস্টে অ্যাসিড হামলা ঠেকাতে এ অপরাধের সাজা বৃদ্ধি করে যুক্তরাজ্য। অবৈধভাবে অ্যাসিড বহন করলে চার বছরের কারাদণ্ড আর কারও ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ার নীতিমালা ঘোষণা করা হয়।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, গত জুলাই পর্যন্ত এক বছরে কেবল লন্ডনে ৪৫৫টি অ্যাসিড হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে, যাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এশিয়ান। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীর ৮০ শতাংশ পুরুষ। আবার হামলাকারীদের ৮২ শতাংশ পুরুষ। ঘৃণা, বর্ণবাদ, ছিনতাই ও প্রতিশোধমূলক কাজে সহজলভ্য উপায় হিসেবে অ্যাসিড হামলাকে বেছে নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করে পুলিশ।