কি রয়েছে সংবিধানের ষোলোতম এমেন্ডমেন্ড বাতিলের রায়ে? কি এমন বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি সহ আর বাকী ৬ জন মাননীয় বিচারপতি?
উত্তর হচ্ছে, এই রায়ের প্রতিটি লাইনে লাইনে শুধু একটা আর্তনাদই ছিলো, ছিলো শুধু একটা চাওয়া। আর সেটি হচ্ছে বিচার বিভাগকে সরকারী হস্তক্ষেপ থেকে বাঁচাবার আপ্রাণ চেষ্টা। বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা নিজস্ব কোনো রায় লিখেন নি। এই ছাড়া প্রত্যেক বিচারপতি স্পস্ট অক্ষরে লিখেছেন যে বিচার বিভাগের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ হবে সুইসাইডাল।
তাঁরা এই ৭৯৯ পৃষ্ঠার প্রতিটি লাইন, প্রতিটি প্যারাতে এই একটি কথাই বলেছেন, একটা চাওয়াই চেয়েছেন। এই বিচার বিভাগকে কব্জা করলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির কফিনে শেষ পেরেক মারা ছাড়া আর কিছুই হবেনা। এটি বিচারপতিরা বুঝতে পেরেছেন। তাঁরা দেখেছেন এই দেশের প্রত্যেকটি সেক্টর দখল করেছে ক্ষমতাসীন রা। তাঁরা দেখেছেন এই দেশের বুকে অরাজকতা, হিংসা আর বিপন্ন জনতার অবস্থা।
আপনাদের যদি হাতে কিছুটা সময় থাকে তাহলে পড়ে দেখবেন এই রায়। আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বলছি আপনাদের যে এই রায়ে এমন কিছুই লেখা হয়নি যেটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অপমান করে, এই রায়ে এমন কিছুই লেখা হয়নি যেটিতে সামান্যতম ভাবেও মনে হতে পারে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
এই রায়ের ক্ষেত্রে বরংচ দেখা যায় সরকারী এটর্নীদের হাস্যকর যুক্তি, ইমোশনাল কথা বার্তা কিংবা কু-যুক্তি। ১৯৭৫ সালের পর শত শত আইন সরকার রেখে দিয়েছে যেগুলো সামরিক আমলে করা। এমনকি ১৫ তম সংশোধনীতেও বিচারপতিদের ইম্পীচমেন্টের জিয়াউর রহমানের আমলের করা আইন রেখে দেয়া হয়েছিলো। এগুলোর একটারও সঠিক জবাব দিতে পারেনি এটর্নী জেনারেল সহ এডিশনাল এটর্নী জেনারেলরা।
এই রায় লেখা হয়েছে এই দেশের মানুষের জন্য। যাতে অন্তত উচ্চ আদালতে মানুষ নির্ভয়ে যায়, যাতে অন্তত এই ক্ষয়ে যাওয়া রাষ্ট্রে মানুষ সু-বিচারটা অন্তত পায়।