বায়োমেট্রিক তথ্যের কি কি অপব্যবহার হতে পারে

বায়োমেট্রিক তথ্যের কি কি অপব্যবহার হতে পারে সেসব নিয়ে ধারণা দেয়া প্রয়োজন মনে করছি। ধরুন আগামীতে বায়োমেট্রিক তথ্য ফৌজদারি মামলায় গ্রহণযোগ্য সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন করা হোল। থ্রিডি ইমেজ নিয়ে বায়োমেট্রিক ক্লোন করতে ৫ টাকা খরচ হবে মাত্র। এবার ধরুন- ঢাকার পরিত্যাক্ত এলাকায় একজন তরুণীর লাশ পাওয়া গেল, সাথে একটি ছুরি। সেই ছুরিতে আপনার আঙুলের ছাপ বসিয়ে আপনাকে আসামী বানিয়ে হাজতে চালান করল। আপনার ডিফেন্স কি?

অথবা ধরুন- আপনাকে আন্তঃজেলা গরুচোর দলের সদস্য হিসেবে চালান করে দিল। রাজনৈতিক বা সামাজিকভাবে কাউকে হেয় করতে হলে এরকম মামলায় চালান করার সম্ভাবনাই বেশী। ব্রিটিশরা খুব চালাকি করে চুরিকে অপরাধ বানিয়েছে। কেন কোন কারণে চুরি হয় সেটি অবাক করার মত। এর পেছনে মূল চিন্তাটাই সামাজিকভাবে হেয় করা। আপনি পঞ্চাশ টাকা চুরি করে ধরা পড়লে জেলে যাবেন অথচ পঞ্চাশ কোটি টাকা চুরি করলে ভিআইপি স্ট্যাটাস পাবেন!! মনে আছে মওদুদ সাহেবকে ক’টা ওয়াইনের বোতল দিয়ে মামলা দিয়েছিল? তার বিরুদ্ধে একশ একটা দুর্নীতির অভিযোগ আনা যেত কিন্তু তাতে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা যেত না। একুশে টিভির মালিককে গ্রেফতার করেছিল পর্ণছবি রাখার জন্যে? উদ্দেশ্য ঐ একই।

এবার অন্য একটি উদাহারণ দিই- ধরুন আগামীতে এমন একটি আইন হোল যে ভোট হবে বায়োমেট্রিক দিয়ে। আমার বায়োমেট্রিকতো ফোন কোম্পানী আর বিটিআরসি’র কাছে। আমাদের বায়োমেট্রিক তথ্য যে অপারেটরদের সার্ভারে থাকছে সেটি তারা আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেছে। তাদের আইনজীবীও এটি স্বীকার করেছেন আদালতে। তাই এনিয়ে গবেষণার কিছু নেই। বলছি না বিপদ হবেই কিন্তু হলে আমার আপনার নিরাপত্তা দেয়ার জন্যে কোন আইন নেই। আগে যারা বিনা বাক্য ব্যয়ে তথ্য দিয়ে দিয়েছেন তারা ভুল করেছিলেন। সেই একই ভুল বারবার না করে তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তথ্য সংরক্ষণ আইন দরকার।

ভাবছেন এসবই অলীক কল্পনা?? কিছুই হবে না? তাহলে ফিলিপিন্সে ৭ কোটি বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি হওয়াতে এত ভয়ের কি আছে? ওদের নির্বাচন পদ্ধতি কি রকম তা জানেন নিশ্চয়ই?

বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের কারণে পাকিস্তানে ৪০% উপর সিম বিক্রি কমেছে বলে শুনেছি। এদেশে ফোন কোম্পানীগুলো ব্যবসা করতে এসেছে। বিক্রি কমলে তাদের ব্যবসাও কমবে কিন্তু তারপরও তারা কেন এতে এত আগ্রহী? কিছুতো আছে!!