বাইতুল মোকাররমে যদি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে মুসল্লিদের প্রবেশ করাতে লাগে নিরাপত্তার কারণে তাহলে ইজরাইল আল আকসা মসজিদে মেটাল ডিটেক্টর বসিয়ে কি অন্যায়টা করেছে? খোদ কিছু মুসলিম দেশ নিরাপত্তা ঝুকিতে থাকা কিছু মসজিদ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল বিগত দিনগুলোতে। ফিলিস্তিনী মুসল্লি পরিচয়ে দুজন ইজরাইলী সেনাকে হত্যার পরই ইজরাইল সরকার ঐ মসজিদে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করে মুসল্লিদের প্রবেশের ব্যবস্থা করে। এতে চটে গেছে ফিলিস্তিনিরা। তারা মনে করে, এই মসজিদ এলাকা মুসলিমদের ওয়াকফ সম্পত্তি, এখানে ইজরাইলদের (ইহুদীদের) প্রবেশের কোন অধিকার নেই। ইসলাম মক্কার কাবাঘর এলাকা অমুসলিমদেরকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছে। যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে গোটা জেরুজালেম মুসলমানরা ইহুদীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রাখত।
এখন পৃথিবীর যে কোন মসজিদের বড় জামাত ঘটলে, ঈদের নামাজে ঈদগাতে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করে মুসল্লিদের প্রবেশ করানো হয়। জায়নামাজ ছাড়া আর কোন কিছু সঙ্গে আনতে পারে না। এসব মসজিদ বা ঈদগাতে হামলা চালায় মুসলমানদেরই নানা বিশ্বাসের ফিকরায় বিভক্ত দল। কাজেই নিজেদের নিরাপত্তার কারণে ইজরাইল কর্তৃপক্ষ মেটাল ডেটেক্টর বসিয়ে কোন অন্যায় করেছে বলে মনে হয় না।
রাস্তায় নামাজ পড়া, বা রাস্তাতে বসে কুরআন পড়া- এরকম ধর্ম নিয়ে খেলা আমরা বাংলাদেশেই দেখেছি। নিরাপত্তা বিধানকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে, ইজরাইল কৃর্তপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে রাস্তার মধ্যে যে ফিলিস্তিনী নামাজ পড়তে বসে গিয়েছিল সে ভাল করেই জানে তাকে উঠালেই আন্তর্জাতিক নিউজ হয়ে যাবে। ‘ইজরাইলী বর্বরতা’ হিসেবে এটি স্থান পাবে সব জায়গায়। হেফাজত মতিঝিলের মত বাণিজ্যিক স্থানে লাগাতার নামাজ পড়ার স্থান বানিয়ে ফেলেছিল। রাস্তায় বসে কুরআন পাঠ চলছিল। এসবই সাধারণ মুসলমানদের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সরকার নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে সাউন্ড গ্রেনেডে ছুড়ে এদের রাস্তা থেকে উঠিয়ে দিয়েছিল কান ধরে উঠবস করিয়ে। দুই দল মুসল্লি যখন বাইতুল মোকাররমে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধিয়েছিল, একজন পুলিশকে মসজিদে নিয়ে গিয়ে জবাই করে হত্যা করেছিল, তখন দাঙ্গা পুলিশ হুজুরদের ধরে ধরে লাঠি পেটা, পশ্চাৎদেশে লাত্থি দিয়ে দিয়ে বের করেছিল। …খালি ইজরাইল করলেই দোষ…।
আল আকসা মসজিদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক কাল্পনিক। কথিত মিরাজের ঘটনা ঐতিহাসিক কিছু নয়। বলা হয় এখান থেকেই যাত্রা বিরতি দিয়ে প্রফেট মুহাম্মদ আকাশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমার সেই কথা মোতাবেক এখানে একটা মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদের মন্দির-গির্জার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কোন ইতিহাস নেই। আল আকসা তার বাইরে কিছু নয়…।