একটা নিউজ ফেইসবুকে ভাসছে- লন্ডনে খালেদা জিয়া পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে দেশ বিরোধী মিটিং করেছেন। এটা নিয়ে আওয়ামী সমর্থক এক্টিভিস্টরা গরম হয়ে আছেন। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে খালেদার মিটিং সত্যিই হয়েছিল কিনা- এটা জানার চাইতে আমার আগ্রহ যদি ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে তাহলে সেটা নিয়ে আমাদের বিশেষ মাথা গরম করার বিশেষ কি কারণ আছে?
আমরা যদি আদর্শের অনুসারী হয়ে থাকি, কোন দল বা ব্যক্তির আজ্ঞাবাহী না হয়ে থাকি তাহলে এই মুহূর্তে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে মোলাকাত হেফাজতইসলামের সঙ্গে গলাগলির চাইতে কোনদিন দিক দিয়ে দেশের সর্বনাশটা বেশি মনে হয়? সরকার পতন ঘটানো ছাড়া খালেদা জিয়া আর আইএসআই মিলে বাংলাদেশকে আর কি করতে পারে যাতে আমাদের বিগত বছরগুলোর চাইতে বেশি আশাহত হতে হবে বা অশনি সংকেত মনে হবে? বিএনপি রাজাকারদের মন্ত্রী করেছে আওয়ামী লীগ তো একই কাজ করছে। দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি এই সরকারের মেয়াদে বলাৎকার হয়নি সবচেয়ে বেশি?
কে বেশি ধর্ম নিয়ে খেলেছে? মৌলবাদীদের কাছে কে নতজানু হয়ে বসেছে? দেশের প্রগতিশীলতাকে কারা দুর্বল করতে বেশি সহায়তা করেছে? যেসব লীগ সমর্থকরা নিজেদের সরকারের আমলে প্রাণ বাঁচাতে আগেভাগে দেশ ছাড়লেন, দিন রাত সরকারের প্রতি আমজনতাকে আস্থা রাখতে বলে নিজেরাই অনাস্থাজ্ঞাপন করে বিদেশে পাড়ি দিলেন- তারা কি বুঝে গিয়েছিলেন হেফাজতসহ ইসলামী দলগুলোর ল্যাজ দিয়ে যে সরকার কান চুলকায় তাদের ভরসায় দেশে বসে সরকারের হয়ে বগল বাজালে ধরে মাথাটা আস্ত থাকবে না!
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় হেফাজতের প্রেসক্রিপশনে সাম্প্রদায়িকতা যুক্ত করে, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ দিয়ে, ইসলামী জিহাদীদের ১৩ দফার একটা-একটা করে বাস্তবায়ন করে, সৌদি অর্থায়নে মাদ্রাসা মসজিদ ভিত্তিক জিহাদী নেটওয়ার্কে সহায়তা করে এরিমধ্যে যতখানি দেশকে নষ্ট হবার পথে নেয়া হয়েছে, সেখানে খালেদা জিয়া আর আইএসআই কি এমন বেশি ইতর বিশেষ করতে পারবে? কতখানি “বাংলাস্থান” হতে আর বাকী আছে?… বাকী থাকল কেবল সরকার পতনের ষড়যন্ত্র তত্ত্বটুকু। যদি খালেদার কথিত বৈঠকের মূলে সরকার পতনই একমাত্র এজেন্ডা হয়ে থাকে তাহলে সেটা দেশ জাতির জন্য বিরাট সর্বনাশ হবে কোন অর্থে? দলান্ধতার বাইরে গিয়ে একবার দেশ জাতির নিরিখে চিন্তা করে বলেন…।