মুহাম্মদ কতটা জ্ঞানী এবং কুসংসংস্কারমুক্ত মানুষ ছিলেন তার পরিচয় মিলবে এ অধ্যায়ে! যে মানুষের দৃষ্টিকে বদ নজর হিসেবে দেখেন, যিনি মনে করেন শয়তান কানের ভেতর মুত্রত্যাগ করে, যে নবী মনে করেন গোবর আর হাঁড় জ্বীন নামের এক কল্পনার প্রাণীর(!) খাদ্য! তাকে যেসব মানুষ অনুকরণীয় মনে করেন, তাদের জন্য একরাশ দুঃখ ছাড়া আমাদের আর করার কী থাকতে পারে! আর হ্যাঁ সন্ধ্যায় কিন্তু বের হবেন না, শয়তান শিকারে থাকেন তখন!
বুখারী-৭-৭১-৬৩৬: মুহাম্মদ বলেছেন: বদ নজর লাগা সত্য। আর তিনি উলকী আঁকতে (খোদাই করতে) নিষেধ করেছেন।
মুসলিম-২৩-৫০৪৬: মুহাম্মদ বলেছেন: শয়তান তোমাদের প্রতিটি কাজে উপস্থিত হয়। এমনকি তোমাদের কারো আহারের সময়ও সে উপস্থিত হয়। সুতরাং তোমাদের কারো যদি লোকমা পড়ে যায়, সে যেন লেগে যাওয়া ময়লা দুর করে তা খেয়ে ফেলে। শয়তানের জন্য যেন তা রেখে না দেয়। অতঃপর সস্পূর্ন আহার শেষ করবে। (আহার শেষে) সে যেন তার আঙ্গুল গুলো চেটে খায়। কেননা সে জানে না, তার খাদ্যের কোন অংশে বরকত আছে।
মুসলিম-২৪-৫২৭৯: মুহাম্মদ বলেছেন: ঘন্টা শয়তানের বাঁশি।
বুখারী-৪-৫৪-৪৯২: মুহাম্মদ-এর নিকট এমন এক ব্যক্তির সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো, যে সারা রাত এমনকি ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিল। তখন তিনি বললেন, সে এমন ব্যক্তি যার উভয় কানে অথবা তিনি বললেন, তার কানে শয়তান পেশাব করেছে।
বুখারী-৪-৫৪-৫০০: মুহাম্মদ বলেছেন, ‘সূর্যাস্তের পরপরই যখন রাত শুরু হয় অথবা, যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদেরকে ঘরে আটকে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তান ছড়িয়ে পড়ে। এরপর যখন রাতের কিছু অংশ চলে যাবে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার আর তুমি তোমার ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। তোমাদের ঘরের বাতি নিভিয়ে দাও এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। তোমার পানি রাখার পাত্রের মুখ বন্ধ রাখ এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। তোমার বাসন পত্র ঢেকে রাখ এবং আল্লাহর নাম স্মরণ কর। সামান্য কিছু হলেও তার উপর দিয়ে রেখে দাও।’
বুখারী-৪-৫৪-৫০৯: মুহাম্মদ বলেছেন: হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। সুতরায় তোমাদের কারো যখন হাই আসবে তখন যথাসম্ভব দমন করবে। কেননা তোমাদের কেউ হাই তোলার সময় যখন ‘হা’ বলে, তখন শয়তান হাসতে থাকে।
বুখারী-৭-৬৯-৫২৭: মুহাম্মদ বলেছেন: যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকিয়ে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু সময় অতিক্রান্ত হলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দড়জা বন্ধ করবে। কেননা, শয়তান বন্ধ দড়জা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করে দেবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোন জিনিস আড়াআড়িভাবে রেখে হলেও। আর (শয়নকালে) তোমরা তোমাদের চেড়াগগুলো নিভিয়ে দেবে।
বুখারী-৪-৫৪-৫৩৩: মুহাম্মদ বলেছেন: ‘তোমরা পাত্রগুলো ডেকে রেখো, পান-পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরে দরজাগুলো বন্ধ করে রেখোর সাঝের বেলায় তোমাদের শিশুদেরকে ঘরে আটকিয়ে রেখো। কেননা এ সময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দিবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট অনিষ্টকারী ইঁদুর প্রজ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।’
বুখারী-৫-৫৮-১৯৯: আবদুর রাহমান বলেন: আমি মাসরূক-কে জিজ্ঞাসা করলাম; যে রাতে জ্বিনরা মনোযোগের সাথে কুরআন শ্রবণ করেছিলো, ঐ রাতে নবী করীম-কে তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে সংবাদটি কে দিয়েছিল? তিনি বলেন, তোমার পিতা আবদুল্লাহ ইবনে মাসুদ আমাকে বলেছেন যে, তাদের উপস্থিতির সংবাদ একটি বৃক্ষ দিয়েছিল।
বুখারী-৫-৫৮-২০০: মুহাম্মদ অজু ও ইস্তিনজার (মলত্যাগের পর পায়ুপথ পরিস্কার) কাজে ব্যবহারের জন্য পানি ভর্তি একটি পাত্র বহন করে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তাকিয়ে বললেন, কে? আমি বললাম: আমি আবু হুরায়রা। তিনি বললেন, আমাকে কয়েকটি পাথর তালাশ করে দাও। আমি উহা দ্বারা ইস্তিনজা করবো। তবে, হাঁড় এবং গোবর আনবে না। আমি আমার কাপড়ের কিনারায় করে কয়েকটি পাথর এনে তাঁর নিকটে রেখে দিলাম এবং আমি তথা হতে কিছুটা দূরে সরে গেলাম। তিনি যখন ইস্তিনজা থেকে অবসর হলেন, তখন আমি অগ্রসর হয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, হাঁড় ও গোবর এর বিষয় কি? তিনি বললেন এগুলো জ্বিনের খাদ্য। আমার নিকট নাসীবীন নামক জায়গা থেকে জ্বিনের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিলো, তারা উত্তম জ্বিন ছিল। তারা আমার কাছে খাদ্যদ্রব্যের প্রার্থনা জানালো; তখন আমি আল্লাহর নিকট দুআ করলাম যে, যখন কোন হাঁড় বা গোবর (তাদের) হস্তগত হয় তখন যেন উহাতে তাদের খাদ্যদ্রব্য পায়।