দালালনামা

বঙ্গবন্ধুর নামের আগে শহীদ এবং নামের পরে রহমুতুল্লাহ আলাইহে বা এই জাতীয় কিছু একটা নাম দেবার প্রস্তাব করেছে আওয়ামীলীগের আরেকটি সিস্টার কনসার্ন ওলামালীগ। এই নাম দু’টো, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর নামের পরে প্রস্তাবিত এই আরবী লম্বা জিনিসটি’র মূল অর্থ গুগল ঘাটলেই খুব সম্ভবত পাওয়া যাবে। কেন জানি ইচ্ছে করলো না এর মানে খুঁজে বের করতে। এই বস্তুর মর্মার্থ খুঁজে বের করার কোনো মানে দেখিনা।

মাননীয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদ গ্রহন করার সময় এই ওলামালীগ-ই একজন অমুসলিমকে এই পদে দেবার প্রতিবাদ জানিয়েছিলো। তখন খানিকটা ভ্রুঁ কুঁচকে অস্ফুট স্বরেই নিজেকে নিজে বলেছিলাম, ওলামা লীগ? হাউ কাম? সে প্রশ্নে বিষ্ময় ছিলো, ছিলো অবাক হবার মত একটা শব্দ।

প্রথম দফায় ভ্রু কুঁচকানো এক্সপ্রেশন থাকলেও এই ওলামা লীগেরা যখন ব্লগারদের নিয়ে কুৎসিত কথা বললো কিংবা আব্দুল গাফফার চৌধুরীর ফাঁসী চাইলো তখন বিরক্ত হয়েছিলাম। আবারো নিজের মনেই নিজেকে প্রশ্ন করেছি, এরা চায় কি? এদের বিষয়টা কি?

আজকে এই ওলামার দল বঙ্গবন্ধুর উপরে চড়াও হয়েছে। বাংলাদেশের পার্স্পেক্টিভে ধর্মকে এইভাবে ব্যবহার মানুষ ভালো চোখে দেখে না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়। বেশীরভাগ মানুষ ধর্ম সংক্রান্ত ব্যাপারে একটা রিজিড মোনোভাব দেখায় সব সময়। এই মোনোভাবের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, “বাবারে, আমা্রে আমার মত থাকতে দাও, আমার ধর্মটাকে পালন করতে দাও। তোমার থিওরী তুমি দূরে গিয়া কপচাও” এই টাইপ।

এমন একটা আবহে কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে নাস্তিক-আস্তিক ইস্যুতে খানিকটা বিব্রত সময়ে ওলামালীগ বঙ্গবন্ধুকে শান্তিপ্রিয় এই মানুষগুলোর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আমি কয়েকদিন আগে ওলামালীগকে ভাবতাম গাধার দল। মাঝে মতামত পালটে বুঝেছি এইগুলা হচ্ছে চাটার দল। কিন্তু এখন মত পাল্টেছি। এদেরকে আমার প্রকান্ড ধূর্তের দল বলে মনে হচ্ছে।

এই ধূর্তের দল বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ মানুষের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে কারো কাছে বঙ্গবন্ধুকে করে তুলেছে হাস্যকর, কারো কাছে করতে তুলছে বিরক্তির, কারো কাছে করে তুলছে রাগান্বিত। ফেসবুকেই আজকে দেখলাম এদের কারনে বঙ্গবন্ধু অনেকের কাছেই গাল খাচ্ছে। ব্যাপারটা এখন গায়ে এসে পড়ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে সভানেত্রী কি ওলামালীগের পালের গোদাকে চিপায় ডেকে দুটো থাপ্পড় দেবার ব্যবস্থা করবে নাকি ওলামালীগ প্রতিদিন আমাদের এইসব ইতরামী ধরনের খবর দিয়ে আমাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবে?