ধর্মের নামে অধর্ম

এই পৃথিবীর মধ্যে খুব সহজেই যেই যেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের ধর্মের কথা বলে পুটকি মেরে গঙ্গা করে দেয়া যায় সেই দেশগুলোর মধ্যে একটি নাম বাংলাদেশ। এর কারন অবশ্য খুবই সোজা। এর কারন হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষের ভেতর ব্যাক্তি নিজ নিজ ধর্মের বই-পত্র বুঝে পড়েছে এমন সংখ্যা অতি নগন্য। আজকে একজন তর্ক করছিলো শহীদ রাজীবের মৃত্যু এবং লেখা নিয়ে। আমি তাকে খুব বিনীত ভাবে জিজ্ঞেস করেছিলাম-

-আপনি পুরো কোরান শরীফ পড়েছেন ভাই?

– হ্যাঁ পড়েছি ছোট বেলায়। দুইবার খতম দিয়েছি।

-আরবীতে?

-হ্যাঁ

-আচ্ছা, আপনি আরবী বোঝেন?

-ওয়েল…(কিছুক্ষন মোচড়া মুচড়ি করলেন) না, আরবী অবশ্য বুঝিনা।

-তাহলে না বুঝেই পড়েছেন? এইতো?

-বলতে পারেন (গলা এখন অনেক নেমে এসেছে)

-কয়টা হাদীসের বই পড়েছেন?

-মেট্টিক ইন্টারে যা পড়েছি, এর বাইরে না।

-ওকে ফাইন।

-৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন? মিথ্যা বলবেন না ভাই দয়া করে।

-ওয়েল… ৫ ওয়াক্ত পড়িনা, ফজরেরটা মিস যায়, আবার সব সময় পড়ি যে, তাও না

-অনেক ধন্যবাদ অনেস্ট উত্তরের জন্য

-যখন নামাজ পড়েন তখন একাগ্র চিত্তে শ্রষ্ঠার কথা মনে রাখতে পারেন? দিন-দুনিয়ার কথা কি নামাজ পড়ার সময় মাথায় থাকে?

– অনেস্টলি স্পিকিং, হ্যাঁ দিন দুনিয়ার কথা মাথায় থাকে।

– আবারো ধন্যবাদ সত্য উত্তরের জন্য।

-পর্ণ ছবি দেখেন? মিথ্যা কথা বলেন? মোট কথা আপনি কি সব সময় ভালো কাজ বা আপনার ধর্ম মতে চলেন?

– মাঝে মধ্যে পর্ণ ছবি দেখি। বিপদে না পড়লে মিথ্যা না বলারই চেষ্টা করি। আর সব সময় ধর্ম মতে চলতে পারিনা। এইটাও ঠিক।

-আপনাকে অনেক ধন্যবাদ যে আপনি সত্য এবং অনেস্ট জবাব দিচ্ছেন। আচ্ছা আপনি কেন সব সময় সত্য বলেন না? কেন আপনি সব সময় ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন না, কেন আপনি না বুঝে কোরান পড়েন?

-ওয়েল চেষ্টা করছি সব লাইনে আনার। হয়ে যাবে। প্র্যাক্টিস মেইক্স আ ম্যান পারফেক্ট।

-আপনার বয়স কত?

-প্রায় ৪২

-এত বছরেও ঠিক করতে পারলেন না। ওয়েল বাদ দেন এই কথা। এই যে আপনি নামাজ নিজের মন মত পড়লেন, নামাজের সময় দিন দুনিয়ার কথা ভাবলেন, মিথ্যা কথা বললেন নিজের স্বার্থে, তখন আল্লাহ-রাসূলের অপমান হয়না? তখন এইটা তাদের প্রতি নোঙরামি হয় না?

-ভাই এইভাবে আসলে ভাবিনি।

-কোনভাবে ভেবেছেন?

-ভাই ধর্ম ঠিক মত পালন না করলেও আমি মুসলিম। শুধু মুসলমান হবার কারনেও আমি একদিন বেহেশতে যাব।

-হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা, আইচ্ছা…এই কথা?

-ভাই মজাক করেন? আচ্ছা আমি ঠিক মত পালন না করলে কি অন্য কেউ আমার ধর্ম নিয়া মন্দ কথা বলাটা জায়েজ হয়?

-গুড প্রশ্ন। আচ্ছা বলেন তো, এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধর্মের সংখ্যা কত?

-তাতো সঠিক বলতে পারব না, তবে হবে ১০-১৫টা।

-আচ্ছা এইসব বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা যখন নিজ নিজ ধর্ম পালন করে তখন সূত্র অনুযায়ী তো সেটি অন্য ধর্মের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে তাইনা?

-ভাই, কি যে বলেন, উনারা অন্য ধর্ম পালন করে কিন্তু ধর্মকে গালি তো দেয়না।

-গুড, বুঝলাম গালি দেয়না বাট এইটাতো আপনি স্বীকার করেন যে যিনি আপনার ধর্মকে গালি দিলেন, বা সমালোচনা করলেন তিনি তার জবাবদিহিতা আপনার কাছে করবেন না? করবেন তার শ্রষ্ঠার কাছে? যেমন আপনি মুস্লিম। সেইক্ষেত্রে আপনার বিশ্বাস মতে জবাবদিহিতা করবেন আল্লাহর কাছে, তাইনা?

-হ, তাতো ঠিক।

-উনি তো আপনারে গালি দেয় নাই? দিসে?

-ভাই আমি যেই আল্লাহরে ভালোবাসি, রাসূলরে ভালোবাসি তারে গালি দিসে, আমার খারাপ লাগবে না? একটুতো লাগবেই।

– যেই প্রভুরে ঠিকমত চিনতে পারলেন না,যার প্রেমেই পড়তে পারলেন না। যেই রাসূলরে চিনিতে পারলেন না, তার প্রতি মন দিয়া নামাজ পড়তেই পারলেন না, স্বার্থ মত মিথ্যা বলেন, মন চাইলে নামাজ পড়েন, না চাইলে পড়েন না, তাকে গালি দিলে আবার খারাপও লাগে… ভালোই কইসেন… আচ্ছা ঐটার জবাব দেন, গালি কি আপনারে দিসে?

– না (মন খারাপ ও মুখ গোমড়া করে)

-বিচার তো আল্লাহ করবে, ঠিক না? যা বুঝার কিংবা যা বিচার করবার সেইটা তো তিনি বুঝবেন, ঠিক কি না?

– হ্যাঁ সেইটা ঠিক।

-আবার এইটা বলেন, এই যে পৃথিবীতে এত ধর্ম, আপ্নিই বললেন যে ১০-১৫টার কথা। সেই সব ধর্মের লোকেদের খাওয়ার ব্যাবস্থা, অর্থের ব্যাবস্থা আপনার বিশ্বাস অনুযায়ী কে করেন?

-আল্লাহ করেন। আবার কে?

– যদি আল্লাহ এই দুনিয়াতে তার বিরোধীদের বাঁচা, খাওয়া, অর্থের সংস্থান করে দিতে পারে। যদি কেউ ধর্ম নিয়া আপনার অপছন্দের কটুক্তি করেন সেইটাও যদি উনি বিবেচনা করবেন এমন হয়, তাইলে তুমি চোদনা নিজের ধর্ম না পালন করে অন্য কে কি করলো এইটা নিয়া ফাল পারো কেন? তুমি চোদনা নিজের চরকায় কেন তেল দাওনা?

-স্যরি ভাই? কি বললেন?

-কিছুনা। বাদ দেন… I hope and pray you have a long and meaningful life…