সরকারী নোংরা আক্রমণের বিরুদ্ধে জেগে উঠুন

২০১৫ সালের ৬ নভেম্বরের কথা মনে আছে আপনাদের? বলেন তো কী ঘটেছিলো সেদিন। অনেকের হয়তো মনে আছে, অনেকে হয়তো ভুলে গেছে। যারা ভুলে গেছে তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি।

সেদিনের সকালের সূর্যটাও উঠেছিলো আর পাঁচটা দিনের মতোই। সাঁওতালরা তৈরি হচ্ছিলো তাদের দৈনন্দিন কাজ শুরু করার জন্য। কিন্তু না; তাদের জন্য ৬ নভেম্বর দিনটি একটি কালো দিন।

সেদিন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জের সাঁওতাল অধ্যুষিত মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামটি। গুলি চালানো হয়েছিলো সাঁওতালদের উপর। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন সাঁওতাল শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মারডি ও রমেশ টুডু। নিখোঁজ হয়েছিলেন পাঁচ থেকে ছয় জন। আহত দ্বিজেন টুডু তার চোখ হারিয়েছিলেন। মংলী সরেন নামে ষাটোর্ধ একজন বৃদ্ধাকে ঘরে ঢুকে গুলি করেছিলো পুলিশ। মংলী সরেনের ছেলে-মেয়ে তাঁর সাথে থাকতেন না। পুলিশ যখন আক্রমণ করে তখন ভাত রান্না করছিলেন তিনি। আক্রমনের খবর শোনার পরও ভেবেছিলেন পালিয়ে গেলে কখন আর খাওয়া জোটে; তাই ভাতটা খেয়েই পালাবেন। কিন্তু সেই ভাত তিনি খেতে পারেননি। তার আগেই পুলিশ গুলি করেছিলো তাকে। আরও আহত হয়েছিলেন বিমল কিসকু, চরণ সরেন। পরেরদিন ৭ নভেম্বর সোমবার সকালে চলেছিলো লুটপাট। সাঁওতালদের ঘরে যা ছিল সব নিয়ে গিয়েছিলো দুর্বৃত্তরা। ঘরের চালের টিন, হাঁড়ি-পাতিল, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, জামাকাপড়—বাদ যায়নি কিছুই।

এরমধ্যে এক বছর শেষ হয়েছে। তাঁরা পায়নি তাঁদের উপর সংগঠিত নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা, অগ্নিসংযোগের বিচার। ফিরে পায়নি তাঁদের ভিটেমাটি।

সেই হত্যাকান্ড, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজের বিচারের দাবিতে এবং তাঁদের ভূমি রক্ষার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে আগামী ৬ নভেম্বর, ২০১৬ সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি শাহবাগে সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেছে। সবাইকে উপস্থিত হয়ে এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে অনুরোধ করছি।