স্ববিরোধীতা

স্ববিরোধীতা কম-বেশি আমাদের সবার মধ্যে দেখি। ধর্ষণকারীকে প্রকাশ্যে মাটিতে পুঁতে মেরে ফেলা উচিত বলে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারাই শরীয়া আইনে হাত কাটা, গলা কাটা শাস্তির ঘোর বিরোধী। মুক্তচিন্তা ও বাক স্বাধীনতার জন্য যারা বছরের পর বছর লড়ছেন তারাই বাক পরাধীনতাকে সেল্যুট জানাচ্ছেন। ফিদেল মহান নেতা। তাকে নিয়ে কটু কথা বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। কিন্তু উনাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।…

আমাদের সমাজটাও একটা শ্রেণী কারাগার। কিন্তু সেই গরাদের উপরে কোন ছাদ নেই। আমরা ইচ্ছা করলে সেখান থেকে কেউ কেউ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারি।… কিন্তু এমন কোন কারাগার যেখানে বেরিয়ে আসার কোন সুযোগ নেই তাকে স্বাগত জানাতে পারি না।…

ফিদেল কাস্ত্র, চে গুয়েভারারা ছিলেন কিশোর বয়েসের আমার হিরো। পরবর্তীকালে চিন্তা ও রাজনৈতিক বিশ্বাস বদলে যায়। রবীন্দ্রনাথ মালাউন কবি আর রবীন্দ্রনাথ বুর্জোয়া কবি বলে তার মূর্তি ভাঙ্গার মধ্যে রাজনৈতিক দর্শনে কি ইতর আর মহান নির্দেশ করে? সোভিয়েত ইউনিয়ন হবার পরে দেখি সেখানেও কার লেখা থাকবে কার থাকবে না সে দ্বিধাদ্বন্দ…।

এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার আলাপ ছিল যিনি ইরানে চাকরি সূত্রে বেশ কিছু বছর ছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ইরানে খাবারে ভেজাল কি জিনিস কেউ জানে না। সুশৃঙ্ঘল একটা দেশ। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ ব্যক্তিগত জীবনে একজন সৎ দুর্নীতিমুক্ত মানুষ। ইত্যাদি ইত্যাদি…। কিন্তু আহমেদিনেজাদের ইসলামী প্রজাতন্ত্রে কেবল শিয়া মুসলিমদেরই একক অধিকার। কোন নারী ধর্ষণের শিকার হলে উল্টো ব্যাভিচারের অভিযোগে শাস্তি পায়। সেখানে শিশুকে বিয়ের নামে যৌন নিপীড়ন বৈধ। ইরান কিংবা সৌদিদের হাতে যদি সারা পৃথিবীর ক্ষমতা চলে আসে অনুমান করুন বাকী ধর্মের মানুষদের কি পরিণতি হবে?