ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া বাজারের সার্বজনীন কালি মন্দিরের প্রতিমা শনিবার রাতে ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মন্দিরের পূজার সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রও ভাংচুর করে পুকুরে ফেলে দেয় হামলাকারিরা। আজ রবিবার সকালে স্থানীয়রা ভাংচুর করা প্রতিমা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি অনিল চন্দ্র দাস জানান, বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা বাজারের সার্বজনীন কালি মন্দিরে হামলা চালায়। তারা মা কালির প্রতিমা ভাংচুর করে। এ সময় হামলাকারিরা মন্দিরের ঘটি, কলস ও অন্যান্য আসবাবপত্র পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ফেলে দেয়। সকালে এলাকাবাসী প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। ঝালকাঠি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ মন্দিরের পূর্ব পাশের পুকুর থেকে আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
ঝালকাঠি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ কর্মকার বলেন, সারাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে আসছে। ঝালকাঠির ঘটনাও এই অপশক্তির কাজ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করার জন্য পোনাবালিয়া কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। কিকারণে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে মন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা লিটন শীল অভিযোগ করেন, মন্দিরের তিন শতাংশ জমি নিয়ে পার্শ্ববর্তী আফজাল হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। স্থানীয়ভাবে মন্দির কমিটিকে অর্ধেক ও আফজালকে বাকি অর্ধেক দিয়ে বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়। কিন্তু আফজাল এ মিমাংসা মেনে নেয়নি। তিনি বেশ কয়েকবার জমি দখলের চেষ্টা করেছিলেন। এই হামলা তার নেতৃত্বেও হতে পারে। ঘটনার পর থেকে আফজাল হোসেন গাঁঢাকা দিয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। পুলিশ আফজাল হোসেনের পরিবারের কাছে তার সন্ধান জানতে চেয়েছেন বলে জানাগেছে। তিনি আসলে পুলিশের সঙ্গে দেখা করার কথা পরিবারের কাছে জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।