মুরুব্বিতান্ত্রিক স্বৈরাচারের অবসান হবে কবে?

উপমহাদেশে সমাজ ব্যবস্থা হচ্ছে মুরুব্বিতান্ত্রিক স্বৈরাচার। আপনার বয়স ৫০ পার হলেই যেন আপনার সকল কথা বেদবাক্য। ৫০ এর নিচে কথার মূল্য ব্যস্তানুপাতিক হারে কমতে থাকে।

 

অথচ দেশের পরিবর্তন আসে তরুনদের হাত ধরেই। অবশ্য দেশের তরুনদের নিয়েও খুব আশাবাদ রাখা যায় না এখন। সেটা পরে বলছি। মুরুব্বিদের আগে একটু এক হাত নেই।

 

দেশের পলিটিকাল এস্টাবলিশমেন্ট পঞ্চাশোর্ধদের দখলে৷ গত ৪০/৪৫ বছর ধরেই এই অবস্থাই চলছে। দেশের রাজনীতিতে তাই কোনো গুণগত পরিবর্তন আসে নি। সামাজিক উন্নয়নও খুব একটা নাই। সমাজ সংস্কারও না৷ বঙ্গ অঞ্চলে শেষ সামাজিক সংস্কার এসেছে রাজা রামমোহন রায়ের সময়ে। এছাড়া আর কোনো ইতিবাচক সমাজ সংস্কার বা সংস্কারক আসেন নি এ অঞ্চলে গত ১০০ বছরে৷ মান্ধাতার আমলের ধ্যানধারণা নিয়ে কীভাবে মানুষের কয়েকটা প্রজন্ম পার হয়ে যাচ্ছে এটা ভাল গবেষ্য বিষয় হতে পারে।

 

পরিবার হচ্ছে আরেকটা এস্টাবলিশমেন্ট যেটা মুরুব্বিদের স্বৈরাচারের শিকার৷ পরিবারে দ্বিমত পোষনকে বেয়াদবি বলা হয়। মুরুব্বিরা যা-ই বলুক, যত ভুলই হোক, তাকে মেনে নিতেই হবে। এভাবেই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান টিকে আছে। অথচ ধর্মই মানুষকে বেয়াদবি শেখায়৷ সমাজে প্রচলিত সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সকল নবি, সকল অবতারের অবস্থান ছিল। মুহাম্মদ তার পিতার জ্ঞাতিদের বিরুদ্ধে ছিল। মুহাম্মদের ভক্তরা তার ঠিক উল্টা। হিন্দু ধর্মের অবতাররাও এমনই ছিল। কিন্তু হিন্দুরাও এর বিপরীতে৷

 

সমাজ পরিচালনা করে মধ্যবিত্ত পুরুষেরা। তাদের সুবিধামত তারা ব্যবস্থা ঠিক করে নেয়। এই ব্যবস্থার নাম দেয় ঐতিহ্য। বাকিদের ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব দিয়ে বসে থাকে এরা৷ এ সমাজ বদলাবে না।

 

তরুনরা এসব বদলানোর কথা৷ কিন্তু তারা ব্যস্ত আরিফ আজাদ নবিকে আর জাকির নায়েককে নিয়ে৷ এরা গোঁজামিল দেয়, আর ওরা ঘপাঘপ গিলতে থাকে। এদের নিয়েও কোনো আশা নেই আমার। এরা মধ্যযুগের ধর্ম গ্রন্থে বিজ্ঞান খোঁজ করে৷ এরা নবীর শিশুকামিতাকে জাস্টিফাই করে। এরা নবীর দাসী সম্ভোগের পেছনে যুক্তি খোঁজে। এরা মানুষ হত্যাকে সমর্থন করে। মূলধারার বিজ্ঞান রেখে এরা ধর্মীয় বিজ্ঞানকে সেরা জ্ঞান করে।

 

এ দেশে থাকা কোনো যুক্তিবাদী মানুষের পক্ষে সম্ভব না। এ দেশে অন্ধ হয়ে থাকতে হবে৷ অনেকের পক্ষে এটা অসম্ভব৷