বাংলাদেশের নাস্তিকদের জীবন খুবই শোচনীয়

বাংলাদেশে থাকা হতাশাজনক একটা অভিজ্ঞতা। একজন স্বঘোষিত নাস্তিকের জন্য তা even more so। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে অধিকাংশ নাস্তিকরা প্রগতিবাদী, বাম ঘরানার চিন্তার কিছু অংশের সাথে একমত। নিদেনপক্ষে সামাজিক সমস্যাগুলা দেখার ক্ষেত্রে তারা বামেদের চশমাই ব্যবহার করে। সামাজিক শোষন, ধনী গরীবের ভেদাভেদ, শাসন ব্যবস্থার ধর্মীয় দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি দেখার জন্য বামদের লেন্স দরকার। কারণ এসব ধারণা ডানপন্থা থেকে জন্ম নেয়া।

এই দেশে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার চিন্তা করা হয় না। বনাঞ্চল ইচ্ছামতো ধ্বংস করা হয়। পুঁজিপতিদের পকেট ভারী করার জন্য রাষ্ট্রের নিযুক্ত বিভিন্ন পরিবেশ রক্ষার সংস্থা বনাঞ্চল ধ্বংস করে। অথচ বন ধ্বংস হলে দেশ বাসযোগ্য থাকবে না৷ এটা তারা খুব ভাল করেই জানে। ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতাকে ভোগ করার জন্য গুন্ডাতন্ত্র চালিয়ে রেখেছে যার ভুক্তভোগী হচ্ছে নিন্মবিত্ত আর নিন্মমধ্যবিত্তরা।

দেশে স্বাস্থ্যখাতে সীমাহীন দূর্নীতি হয়েছে যার প্রভাব আমরা করোনাকালে দেখেছি। অন্যান্য দেশের মত জবাবদিহিতার ব্যবস্থাও নাই যে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।

বাঙালি মুসলমানের হাতে টাকা আসলে তারা মসজিদ বানায়, মাদ্রাসা বানায়৷ কেউ দাতব্যচিকিৎসালয় বানায় না। এরাই আবার দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নিরাশ! কেন লোকে বিদেশে চিকিৎসা নেয় তা নিয়ে এদের রাতে ঘুম হয় না।

দেশের লোকে কর দেয় না। কর ফাঁকি দেয়। দেশের সর্বোচ্চ করদাতা হয় বিড়ির ইন্ডাস্ট্রির মালিক! অথচ দেশে মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়ী আছে, দেশের টাকা সুইস ব্যাংকে পরে আছে।

যারা কর দেয় তারা করের সুবিধা পায় না৷ করের টাকার সুবিধা তাদের অধিকার, কিন্তু সে অধিকার আদায়ের জন্য তাদের রাষ্ট্রের কাছে ভিক্ষা চাইতে হয়। পুলিশ, সেনা, দমকল, সরকারী সেবা প্রতিষ্ঠান এসব কিছুই করের টাকায় পরিচালিত সংস্থা। কিন্তু এদের সেবা পেতে সাধারণ মানুষের হাত-জোড় করে থাকতে হয়। জুতার ক্ষয় করতে হয় এসব অফিসে যেতে যেতে।

আসল কথা হচ্ছে মানুষের মধ্যে দূরদর্শীতার অভাব।

আমি যেখানে বেঁচে থাকবো না সেখানে আমি কেন বিনিয়োগ করবো? আমার জীবনকালে যদি কেয়ামত হয়ে যায়?

মুহাম্মদ যে বদ্ধচিন্তার শিক্ষা মানুষকে দিয়ে গেছে তার ফলাফল মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝা যাবে। মুসলিম বিশ্বে গবেষণা হয় না, আবিষ্কার হয় না, সাহিত্যচর্চা প্রায় বন্ধ, শিল্প তো বাদই! যেসব মুসলিম উদ্যোক্তা আছে তাদের প্রায় সকলেই সমালোচিত, আবিষ্কারকেরা নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে অন্য দেশে গিয়ে নিজের মহিমায় ভাস্বর হয়।

মুসলিম বিশ্বে একটা ভালো স্পেইস প্রোগ্রাম নাই, একটা ভালো ফসিল গবেষনাকেন্দ্র নাই, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাই। এদের এসব দরকার নাই। এরা চায় সারাবিশ্ব ধ্বংস করে হলেও মধ্যযুগের খেলাফত কায়েম হোক। যেখানে এক শাসক অন্য শাসককে হত্যা করে ক্ষমতায় বসবে, আর ভবিষ্যতে আরেকজন তাকে একইভাবে ক্ষমতাচ্যুত করবে। এদের কাছে এই দুনিয়াই সব। এই দুনিয়ার পর খালি হুর আছে।

এদের সাথে থাকা খুবই নিরাশাজনক। বাংলাদেশের নাস্তিকদের জীবন খুবই শোচনীয়।