১/ “উইমেনচ্যাপ্টারের আবার সেক্স উঠছে”- এটা বলায় সমস্যা কোথায়? বাক্যটির মাঝে থাকা “সেক্স” এ? নাকি- একজন- দুইজনের লেখার কারণে পুরো উইমেনচ্যাপ্টারকে ‘গালি’ দেয়ায়? নাকি- উইমেনচ্যাপ্টারকে ‘গালি’ দেয়ার অর্থ সমগ্র নারীজাতিকে গালি দেয়া হয়ে যায় বলে? আমি পরিষ্কার বুঝতে পারলাম না!
২/ “সেক্স ওঠা”, “মাথামুথায় সেক্স জাগা”, “সেক্স কুড়কুড় করা”, “কাম জাগা”- এগুলা নর্মাল স্ল্যাং। হুট করে কেউ খুব একটিভ হয়ে গেলে- অনেক আলাপ-আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসলে/ আসার চেষ্টা করলে- হুট করে কারো কোন ব্যাপারে খুব আগ্রহ-উদ্দীপনা বেড়ে গেলে- তার সেক্স উঠছে- কাম জাগছে- কথ্য ভাষায় এমনটা বলা হয়। আচ্ছা- সেটা নাহয় না-ই ধরলেন, আক্ষরিক অর্থেই যদি ধরেন- আই মিন, উইমেন চ্যাপ্টারের তথা উইমেন চ্যাপ্টারের নারীদের কিংবা কোন কোন নারীর কামভাব জেগেছে- মানে যৌন আকাঙ্খা বেড়ে গেছে- এই অর্থেই সেই ভদ্রলোক লিখেছেন! তাতেই আসলে কি সমস্যা হলো! নারীর যৌন আকাঙ্খা একটা বাস্তব বিষয় যেটার স্বীকৃতি আমাদের সমাজে নেই! যে লেখা নিয়ে এত আলাপ- সেটার ক্ষেত্রেও নারীর যৌন চাহিদা পূরণের আকাঙ্খাকেই/ দাবিকেই বরং যৌক্তিক মনে করি- লেখাটির ‘প্রতারণাকেন্দ্রিক’ সমস্যাকে পাশে ঠেলে রাখতে পারলে। ফলে- নারীর সেক্স উঠছে- এমন বক্তব্যে বাস্তবে মধ্যবিত্ত ট্যাবুতে আক্রান্ত হয়ে মুষড়ে পড়ার কিছু তো দেখি না …
৩/ তারপরেও- এই ভাষা যদি ভালো না লাগে, একে গালি যদি মনে হয়, গঠনমূলক সমালোচনা যদি মনে না হয়, – তাকেই সেটি জানান, সেখানেই প্রতিবাদ করুন- তর্ক বিতর্ক করুন .. রুচিতে না কূলালে- তাকে বর্জন করুন, আনফ্রেন্ড/ ব্লক করুন … . ওপেন প্লাটফর্মের এরকম একটা বক্তব্যের জন্যে- চাকরি-প্রতিষ্ঠানকে ইনভলভ করা- চাকরি খেতে চাওয়া- বিচার দেওয়া- এগুলোকেই খুব আপত্তিকর মনে হলো …
৪/ নিজেকে উইমেনচ্যাপ্টারের শুভাকাঙ্খী- সমর্থক মনে করেও- তাই উইমেনচ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি (Supriti Dhar) দি’র এই বিচার চাওয়া কাজটির প্রতিবাদ জানাই।
৫/ একজন ব্যক্তি সাংবাদিক যখন প্রতিষ্ঠান উইমেনচ্যাপ্টারের সমালোচনা করে- সেটা যদি এমনকি কটুক্তি বা গালিও হয়ে থাকে- তাতে চ্যাপ্টারানুভূতি আহত হওয়ার কিছু নেই যে- সেই ব্যক্তির ক্ষতি কামনা করতে হবে! সেই ব্যক্তির চিন্তাকে পরাস্ত করার চেষ্টা করা যেতে পারে- ব্যক্তির ব্যক্তিগত ক্ষতির কথা না ভেবেও সেটা সম্ভব … কিন্তু তাকে শাস্তিপ্রদানের আকাঙ্খা ৫৭ ধারার অনুরূপই মনে হয় …
৬/ বেসরকারী- কর্পোরেট মিডিয়ার কিছু হোমড়াচোমড়াকে ট্যাগ করে বিচার চাওয়ার মাধ্যমে বাস্তবে- এইসব মিডিয়া হাউসগুলোতে সংবাদকর্মীদের উপরে নজরদারি আরো শক্ত করার উপলক্ষও তৈরি করে দেয়া হলো! নবনীতা চৌধুরী যেমন মত প্রকাশের স্বাধীনতা বনাম প্রতিষ্ঠানের কোড অব কনডাক্ট বিষয়ক হালকা বয়ান দিলেন- সেটাতেই কিছুটা স্পষ্ট হয় যে, তাদের ইনটেনশন কি!
৭/ “টিভি চ্যানেলের লোকজন সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করে”- এরকম সাধারণীকৃত বক্তব্যটা বরং সাংবাদিকের উল্লেখ করা স্ল্যাং এর চাইতে বেশি আপত্তিকর মনে হয়েছে। এসবকে রেসিজম বলে! কোন ব্যক্তি বিশেষের অপরাধের কারণে- তার জাতি- গোষ্ঠী- বর্ণ- ধর্ম- গোত্র- পেশা- ভুক্ত সকলকেই যখন কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়- সেইটাকেই রেসিজম বলি- যদি না সেই জাতি- গোষ্ঠী- বর্ণ- ধর্ম- গোত্র- পেশার প্রতিষ্ঠান- ঐ অপরাধকে ওন না করে- সমর্থন না করে!