আপনারা এর মধ্যে জেনে থাকবেন যে তুরষ্ক এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল কিছুদিন আগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কাছে একটা আবেগপ্রবণ চিঠি লিখেন। এই চিঠিতে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ করেন যে ১৯৭১ সালে সংঘঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত গোলাম আজমকে যাতে কোনোভাবেই ফাঁসি না দেয়া হয় এবং সেই সাথে তিনি আরো অনুরোধ করেন যেন এই সকল অভিযুক্তদের ক্ষমা করে দেয়া হয়। বিচারের রায় এখনো হয়নি অথচ ফাঁসী না দেয়ার জন্য অনুরোধ একটি দেশের বিচার ব্যাবস্থায় শুধু আঘাতই নয় বরং চরম ভাবে কূটনৈতিক এটিকেট বহির্ভূত একটি কাজ। আমার জানামতে বিচার চলাকালীন সময়ে এই জাতীয় চিঠি সারা বিশ্বের ইতিহাসে হয়ত এটাই প্রথম যেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধের দায়ে একজন আসামীর বিচার চলাকালীন সময়ে শাস্তি কি দেয়া হবে কিংবা না দেয়া হবে সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠালেন একটি দেশের রাষ্ট্রপতি।
বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এই পুরো ব্যাপারটির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এবং এই নিন্দা শুধুমাত্র ফেসবুকের স্ট্যাটাসে সীমাবদ্ধ না রেখে আমরা চাইছি এই প্রতিবাদ হোক তুরস্ক এম্বেসীর সামনেই। সে লক্ষ্যেই আগামী ১৬ ই জুন সকাল ১১-১২ টা সময়ে লন্ডনের তুরষ্ক এম্বেসীর সামনে আমরা সকলে প্রতিবাদ জানাব। আমার ফেসবুক বন্ধু তালিকাতে যারা লন্ডনে রয়েছেন তাদের সকলকেই আমি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই যেন তাঁরা দয়া করে এই প্রতিবাদ সমাবেশে হাজির থাকেন।
আমার যদি অসংখ্য দেহ থাকত এবং সেই দেহ গুলোর হাত-পা, মাথা মগজ থাকত তাহলে লন্ডনের এই ভয়াবহ শীতে এভাবে আপনাদের কাছে “সনির্বন্ধ” অনুরোধ না করে আমার সেসব অসংখ্য দেহ নিয়েই দাঁড়িয়ে যেতাম এম্বেসীর সামনে। কাউকে কষ্ট দিতে আমার ইচ্ছে করে না। গরম হিটারময় ঘর, ধূমায়িত কফি, পরিবার কিংবা পাউন্ডের জন্য ছুটতে থাকা জীবনকে বাঁধাগ্রস্থ করাটাও আমার ইচ্ছেতে নেই। ছিলোও না কখনো। কিন্তু আফসোস, আমার এমন অসংখ্য দেহ নেই। আমরা আসলে একা একা কিছুই করতে পারিনা। সম্ভব নয় বলেই হয়ত…
আপনাদের কষ্ট হবে বলা বাহুল্য। আপনাদের কাজের অনেক ক্ষতি হবে, সেটি বলাও বাহুল্য মাত্র। কিছুক্ষনের অন্য আপনাদের অনেক শীত লাগবে, হিমাংকের নীচে থাকা তাপমাত্রা আপনাদের ভীষন কষ্ট দেবে কিন্তু তারপরেও কি দয়া করে আপনারা আগামী ১৬-ই জুন বুধবার তুরষ্ক এম্বেসীর সামনে আসবেন বেলা ১১ টায়? হাতে হাত রেখে কি দয়া করে প্রতিবাদ জানাবেন এই ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের?
প্লিজ…