করুণাময় আল্লাহ! তিনি ভূমিকে করেছেন বিছানা এবং আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ
২১:৩২ –আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।
২:২২–যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে
৪০:৬৪-আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক।
৮৮:১৭-২০–তারা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? এবং আকাশের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে উচ্চ করা হয়েছে (স্তম্ভ ব্যতীত)? এবং পাহাড়ের দিকে যে, তা কিভাবে স্থাপন করা হয়েছে? এবং পৃথিবীর দিকে যে, তা কিভাবে সমতল বিছানো হয়েছে?
হে অবিশ্বাসীরা, তোমরা কি কখনো পৃথিবীকে গোলাকৃতি দেখতে পাও? আকাশকে কি তোমাদের ছাদের মত মনে হয় না? আল্লাহ কি কখনো ভুল করতে পারেন? আধুনিক ইসলামী পণ্ডিতরা ইদানীং সমতল বিছানকে ‘গোলাকার’ আখ্যা দেয়। বোঝা যায়, বিজ্ঞান তাদেরকে অজ্ঞান করে ফেলেছে। সমতল বিছানা কখনো গোলাকার হয় না! সে সব পণ্ডিত নিশ্চয়ই গোলাকার বিছানায় ঘুমায় না?
আল্লাহর অসীম কুদরত!
ক) তিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত আকাশ
১৩:২– আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে।
খ) আল্লাহ আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়
৩৫:৪১– নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? (বলেন, সোবহানাল্লাহ!)
গ) তিনি অবাধ্য শয়তান থেকে নিকটবর্তী আকাশকে করেছেন সংরক্ষিত
৬৭:৫- আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি।
১৫:১৭–আমি আকাশকে প্রত্যেক বিতাড়িত শয়তান থেকে নিরাপদ করে দিয়েছি।
৩৭:৬-৭-নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি।এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।
ঘ) যে কারণে শয়তানরা
৩৭:৮-৯–উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয়। ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি।
কিন্তু, সর্বশক্তিমান আল্লাহর এই দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষাকেও শয়তান নস্যাৎ করতে পারে!
৩৭:১০– তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।
১৫:৮– কিন্তু যে চুরি করে শুনে পালায়, তার পশ্চাদ্ধাবন করে উজ্জ্বল উল্কাপিন্ড।
কোনো কোনো বিশ্বাসী পাঠক হয়তো আশ্চর্য হয়ে ভাবছেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহর দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষাকে শয়তান কীভাবে নস্যাৎ করতে পারে! কুরানে গভীর জ্ঞানের অভাব ও বিশ্বাসের আধিক্যে এমন চিন্তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরানের উপরিউক্ত আয়াতগুলিতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এরশাদ ফরমাইয়েছেন যে, শয়তানও তাকে মাঝে মাঝে “টেক্কা” দেয়ার সাহস (দু:সাহস!) ও শক্তি রাখে। এই সেই কুরান যা জ্ঞানীদের জন্য পথপ্রদর্শক।
আধুনিক বিজ্ঞান নিশ্চিত করেছে যে, আজ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এক বিশালাকার “উল্কাপাতের” কারণে ডাইনোসরসহ তৎকালীন পৃথিবীর ৭০ ভাগ প্রাণীর ভয়াবহ মৃত্যু ঘটেছে। কুরানের কোথাও সর্বজ্ঞানী আল্লাহ এ বিষয়ে কোনো আভাসও দেন নেই। তার নিক্ষিপ্ত উল্কাপিণ্ড যদি শয়তানকে আঘাত করতে পারতো, তাহলে সেটা আকাশেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো। পৃথিবীতে এসে পড়তো না। খুব সম্ভবতঃ নিক্ষিপ্ত অস্ত্রটি “লক্ষ্যভ্রষ্ট” হবার কারণেই তা পৃথিবীতে এসে পড়েছে! যুদ্ধের (আল্লাহ বনাম শয়তান) ভাষায় যার নাম “Collateral damage”। আল্লাহপাক কুরানে আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ(সা:)এর যৌন সমস্যা(৩৩:৫০-৫২, ৩৩:৩৭-৩৮, ৩৩:৪) ও পারিবারিক সমস্যার(৩৩:২৮, ৬৬:৩-৫) প্রয়োজনে একাধিক বাণী প্রেরণ করেছেন। কিন্তু শয়তানকে শায়েস্তা করতে গিয়ে পৃথিবীর ৭০ শতাংশ প্রাণীর ভয়াবহ প্রাণ নাশের বিষয়ে কেন তিনি “একটি বাণীও” প্রেরণ করলেন না, এ প্রশ্নটি যে সমস্ত নির্বোধ করেন, তাঁরা ভুলে যান যে-সত্যটি, তা হলো:
৩৩:৫৬– আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।
হ্যাঁ, তাই! নবীর প্রয়োজনের গুরুত্বের কাছে ঐ ধ্বংসলীলা অত্যন্ত তুচ্ছ। তা আদৌ কোন ঘটনায় নয়! তাই আল্লাহ পাক কুরানে তা উল্লেখ করেন নাই। “- নিশ্চয়ই এতে বোধ শক্তি সম্পন্নদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে(১৬:১২, ৩:১৯০)”।
মনে রাখবে, “এই সেই কিতাব যাহাতে কোনই সন্দেহ নাই (২:২ )।” -আমিন