মুসলমানদের নিজেদের মাঝে কোন ঐক্য নাই!

ছোটবেলা থেইকাই দেইখা আসতেছি যে,তারাবীহ্ নামাজের রাকাত নিয়ে দ্বিমত, শবে বরাতের পক্ষে বিপক্ষে দুই দল, এক দল বলে জিন্দানবী আরেকদল বলে মুর্দানবী, ঈদে মিলাদুন্নবী পালনেও দুই দল, মিলাদ মাহফিল পালন নিয়ে দ্বিমত, ইদানিং দেখলাম তাবলীগ জামাতেরও দুইটা দল আছে ।

ভাবছিলাম রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলবৎ থাকার ব্যাপারে অন্তত দল মত নির্বিশেষে সব মুসলমান একদলে পরিণত হয়ে যাবে । কিন্তু না, এখানেও দুইটা দল । 

মাইক্রোফোন হাতে নিয়া জোরে জোরে চিল্লাইয়া একদল বলতেছে যে, কাফনের কাপড় হাতে নিয়া মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রক্ষায় উনারা জিহাদ ঘোষণা করবেন । রক্তের বন্যায় ভাসায় দিবেন । 

আরেক দল বলতেছে, ” রাষ্ট্রধর্ম এই শব্দটিই কুরআন শরীফের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না । আর রাষ্ট্রধর্ম বলে কোন পরিভাষা নবীও নাকি প্রচলন করেন নাই ” 

রাজনৈতিক দল ছাড়া এত এতো হিংসা,বিবাদ,দ্বিমতবাদসরূপ আচরণ, অনৈক্য বাংলাদেশের আর কোন দলে আমি এখন পর্যন্ত দেখি নাই । 

দেশে প্রায় ৫%-৬% হবে অন্য ধর্মের লোকদের বসবাস । অন্য ধর্মের লোক এই দেশে কোনকালেই মুসলমানদের শত্রু ছিলো না । যুগে যুগে মুসলমানরা নিজেরাই নিজেদের শত্রু ছিলো । একজন ওয়াজের বক্তা ভালো ইনকাম করলে বা ফ্যান ফলোয়ার বাড়তে থাকা দেখলে অন্য মাওলানা তার পিছনে লাইগা বসে থাকে । তার নামে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে কুৎসা রটানো শুরু করে । 

এইতো কিছুদিন আগে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর অনেক সুনাম বাড়তে থাকা দেখে তাকে বয়কট করতে কোন হিন্দু, খ্রিস্টান বা বৌদ্ধ ষড়যন্ত্র করে নাই । দেশের অন্য মাওলানারাই বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিলে আজহারীকে বয়কট করতে আহবান করেন । 

মূলকথা হলো, মুসলমানদের নিজেদের মাঝে কোন ঐক্য নাই । এক আল্লাহ্, এক নবী, এক কুরআনে বিশ্বাসী হলেও তারা সবাই মিলেমিশে একটা দলে কোন কালেই থাকতে পারে নাই । কিন্তু জোরপূর্বক ঠিকই পুরো একটা রাষ্ট্রকে একটা ধর্মের আওতায় আনার মাধ্যমে উনারা ঐক্য গড়ে তুলতে চান ।