ভাইরাসই একটি বিজ্ঞান ।

নিউমোনিয়া বলে চালিয়ে দেয়া রোগটা যে একটা ভাইরাসের সংক্রমনেই হয় সেটা প্রথম বিজ্ঞানই দৃশ্যমান করে । উপর থেকে কোন ওহী আসে নাই বা কোন পীর বা হুজুর সেটা স্বপ্নের মাধ্যমে অবগত হয়ে WHO-কে অবগত করেন নাই ।   

বিজ্ঞানীরাই প্রথম আবিষ্কার করেছেন নভেল করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে মানুষের দেহে যে ছোঁয়াচে রোগ সৃষ্টি হয়, সেই রোগের নাম কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস ডিসিজ (coronavirus disease) । 

কারো ক্ষেত্রে দুই-একদিনের মধ্যেই উপসর্গ দেখা দেয় আবার কারো ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ লাগতে পারে । যে সময়কাল কোন ভাইরাস মানুষের শরীরে থাকে কিন্তু তার কোন লক্ষণ দেখা যায় না, তাকে কোন ধর্মের ভাষায় না বরং বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইনকিউবেশান পিরিয়ড । সেই ইনকিউবেশনের সময়টা মোট ১৪ দিন যা কোন হাদিসে বা তাফসীর বা হাজার বছরের পুরনো কোন কিতাবে লিখা ছিলো না, এটা ছিলো বিজ্ঞানের গবেষণার ফসল । 

বিজ্ঞানই ভাইরাসটি শরীরে ঢুকার পর প্রাথমিক লক্ষণ কেমন হবে সেই সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়, নয়তো হাজার হাজার লাশ দেইখা ” দেশে ওলা বিবি আইছে ” বলা শুরু করতেন । 

গুনাহ্ করলাম আর তওবা করলাম সোজাসুজি বেহেশত । ব্যাপারটা আসলে এই রকম না । করোনা ভাইরাসটি শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে । এমন কি মানবদেহের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকতে পারে । তাছাড়া, কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হবার পর আবার আক্রান্ত হওয়ার কথাও বিজ্ঞানই বলেছে । 

হুজুররা ভাইরাসের গঠন আর আকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল স্রেফ একটা মাইক্রোফোন আর কিছু সংখ্যক নির্বোধদের সাথে নিয়ে গবেষণা চালিয়ে 1.Q7+6=13-কে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার ভ্যাকসিনের সূত্র বলে দাবি জানায় । কিন্তু বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করে ফেলেছেন করোনা ভাইরাস একটা RNA ভাইরাসের পরিবার । বিজ্ঞানই বিশ্বকে দেখাতে সক্ষম হয়েছে ভাইরাসটি খালি চোখে দেখতে কেমন । ভাইরাসটির বাইরের অংশে থাকে গ্লাইকোপ্রোটিনের স্পাইক বা কাঁটা যেগুলোর সাহায্যে ভাইরাসটি জীবন্ত কোষে আটকে গিয়ে সংক্রমিত হয় তা বিজ্ঞানের মাধ্যমে মেইন স্ট্রিমে উঠে এসেছে । 

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ নেই ল্যাবরেটরিতে গবেষণা । চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনে নিরলসভাবে কাজ শুরু করেছেন। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে গেলে প্রায় তিন মাসের মধ্যে মানবদেহে এই টিকার পরীক্ষা চালানো সম্ভব হবে । অথচ এই ভাইরাস ছড়ানো রোধ করতে বড় ধরণের পদক্ষেপ হিসেবে বন্ধ করা হয়েছে মসজিদ, মন্দির, গীর্জাসহ বিশ্বের যত ধর্মীয় উপাসনালয় আছে । বন্ধ রাখা হয়েছে কাবাঘর, মসজিদে নববী, মসজিদে হারামসহ বিভিন্ন ধর্মের বাঘা বাঘা সব ধর্মীয় উপাসনালয় ।