ধর্মের উদ্দেশ্য কি?
যুগে যুগে ধর্ম এসেছে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখার জন্য। যখন মানুষ প্রথম আগুন আবিস্কার করল, এর আশ্চর্য ক্ষমতা দেখে মানুষ আগুনকেই পূজা করা শুরু করল। তারপর সূর্যের ক্ষমতা দেখে সূর্যকে ঈশ্বর ভাবা শুরু করল। এভাবে কালে কালে প্রকৃতির বিভিন্ন উপকরণকে মানুষ স্রষ্টা বানিয়ে তাদের আরাধনা করত।
কালের বিবর্তনে একজন একজন করে ঈশ্বরের বার্তাবাহক দাবি করা শুরু করল। ঈসা নবী, মুসা নবী থেকে শুরু করে মুহাম্মদ পর্যন্ত। সবার দাবী ঈশ্বর তাদের পাঠিয়েছেন মানুষদের ঠিক রাস্তায় পরিচালনা করার জন্য। তাদের অনুগামী বাড়তে লাগল। কোন এক অদৃশ্য ফেরেস্তা এসে নাকি তাদের কাছে ঈশ্বরের বার্তা পৌঁছে দিত। এবং মানুষ তাই বিশ্বাস করতে আরম্ভ করল। যারা বিশ্বাস করল না তারা হয়ে গেল কাফির-মুরতাদ।
আমি ভাবতে পারিনা ঈশ্বরের এত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন পোস্টম্যানের দরকার হয়।
আমাদের নাকি পৃথিবীতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঈশ্বর জানেন, যেই পরীক্ষার উত্তরও তিনি জানেন, পরীক্ষার ফলাফল কি হবে, তাও তিনি জানেন। তবে এই পরীক্ষার কারন কি আমি জানিনা। আমাদের নাকি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পাঠানো হয়েছে ভাল মন্দ যাচাই করার ক্ষমতা দিয়ে।
আমরা যদি আমাদের বুদ্ধিমত্তা দিয়েই আমরা ভাল মন্দ বিচার করি, তাহলে এখানে স্রষ্টার ক্রেডিট কোথায়?
প্রায়ই শুনি, যারা ধর্মের নামে খুন ধর্ষণ করে চলেছে, এতে করে ধর্মের দোষ কোথায়? ধর্মীয় মৌলবাদীদের কুকর্মে মোডারেট মুসলিমরা ধর্মের দোষ দিতে রাজি নয়।
প্রথমে বুঝতে হবে ধর্মীয় মৌলবাদ কি? যারা ধর্মের প্রতিটা অক্ষর মেনে চলে, ধর্মের মূল নিয়মগুলি মানার চেষ্টা করে, ধর্মের অনুশাসন সমাজে প্রয়োগ করে।
কিন্তু মোডারেট মুসলমানরা, যারা নিজেরাই ধর্ম ঠিকভাবে পালন করেনা, জীবনে কুরআন হাদিস পড়েনাই, নাম মাত্র মুসলমান, তারাই ধর্ম পালনকারীদের মুসলমান বলে দাবী করেনা, বলে এরা মুসলমান নামের সন্ত্রাসী। অত্যন্ত হাস্যকর, তাই নয় কি?
ইসলাম ধর্মে,
যারা মুহম্মদকে কটুক্তি করবে তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ড।
যারা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করবে তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ড।
যারা গান বাজনার চর্চা করবে তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ড।
যারা হোমোসেক্সুয়াল/ সমকামী তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ড।
এত কুরআন হাদিসের রেফারেন্স থাকা সত্ত্বেও মুসলমানরা তা মানতে নারাজ। হাদিসের রেফারেন্স দিলেই ওইটা ভুয়া হাদিস, কুরআনের রেফারেন্স দিলেই ওইটার নিজের বানানো তাফসির অথবা ভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু কুরানে পৃথিবী উটপাখির ডিমের মত বলা হলেও, মুসলমানরা পৃথিবী গোল বানিয়েই ছাড়ে।
আমি একাদশ শতাব্দীর মানুষ, আমি যুক্তি এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাস করি। আদিম যুগের মত প্রকৃতির আশ্চর্য ক্ষমতা দেখেই হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করার সময় এখন আর নেই।
একটাই জীবন, এটাকে উপভোগ করে যাওয়াই আমার মূল লক্ষ্য। কোন অদৃশ্য ঈশ্বরের হাতের পুতুল নই যে আমি পায়খানা করতে গেলেও দোয়া পড়তে হবে, কোন পা আগে ফেলব তা নিয়ে ভাবতে হবে। একটি বই আমার জীবন নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা।
আমরা সভ্য হয়েছি, বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের দিকে এগিয়ে চলেছি। ১৪০০ বছরের পুরাতন কোন জঞ্জালকে আঁকড়ে ধরে রাখার কোন মানেই হয় না।