”আইসিস সহিহ মুসলমান না” এই চিৎকার শুনতে শুনতে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে শরণাপন্ন হলাম ”পবিত্র” কুরানের।
দেখা যাক কুরআন কি ব্যবস্থা নিতে বলে নাস্তিক/কাফিরদের বিরুদ্ধে।
১) সূরা বাকারা (আয়াত ১৯১-১৯৪)
১৯১
আর তাদেরকে হত্যা কর যেখানে তাদেরকে পাও এবং তাদেরকে বের করে দাও যেখান থেকে তারা তোমাদেরকে বের করেছিল। আর ফিতনা হত্যার চেয়ে কঠিনতর এবং তোমরা মাসজিদুল হারামের নিকট তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো না, যতক্ষণ না তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সেখানে লড়াই করে। অতঃপর তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তবে তাদেরকে হত্যা কর। এটাই কাফিরদের প্রতিদান।
১৯২
তবে যদি তারা বিরত হয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
১৯৩
আর তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যে পর্যন্ত না ফিতনা খতম হয়ে যায় এবং দীন আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। সুতরাং তারা যদি বিরত হয়, তাহলে যালিমরা ছাড়া (কারো উপর) কোন কঠোরতা নেই।
১৯৪
হারাম মাস হারাম মাসের বদলে এবং পবিত্র বিষয়সমূহ কিসাসের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে, তোমরা তার উপর আক্রমণ কর, যেরূপ সে তোমাদের উপর আক্রমণ করেছে। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।
২) সূরা মায়েদা আয়াত ৩৩
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
৩) সূরা তাওবা আয়াত ৫
কিন্তু যখন নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হবে, তারপরে যুদ্ধ কর, এবং মুশরিকদের যেখানে পাও হত্যা কর এবং তাদের বন্দী কর, তাদের অবরোধ কর শত্রুকে [যুদ্ধে] ফাঁকি দেয়ার জন্য ওঁৎ পেতে অপেক্ষা কর। কিন্তু যদি তারা অনুতপ্ত হয়এবং নিয়মিত সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তবে তাদের পথ ছেড়ে দেবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
৪) সুরা তাওবা আয়াত ২৯
তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।
৫) সূরা নিসা আয়াত ৯১
এখন তুমি আরও এক সম্প্রদায়কে পাবে। তারা তোমাদের কাছেও স্বজাতির কাছেও এবং নির্বিঘ্ন হয়ে থাকতে চায়। যখন তাদেরকে ফ্যাসাদের প্রতি মনোনিবেশ করানো হয়, তখন তারা তাতে নিপতিত হয়, অতএব তারা যদি তোমাদের থেকে নিবৃত্ত না হয়, তোমাদের সাথে সন্ধি না রাখে এবং স্বীয় হস্তসমূহকে বিরত না রাখে, তবে তোমরা তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। আমি তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি-প্রমাণ দান করেছি।
৬) সূরা নিসা আয়াত ৮৯
তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিয়ো না।
৭) সুরা আনফাল আয়াত ১৭
সুতরাং তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি মাটির মুষ্ঠি নিক্ষেপ করনি, যখন তা নিক্ষেপ করেছিলে, বরং তা নিক্ষেপ করেছিলেন আল্লাহ স্বয়ং যেন ঈমানদারদের প্রতি এহসান করতে পারেন যথার্থভাবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।
সুতরাং, এই রেফারেন্স গুলি থেকেই প্রমানিত হয় আইসিসই সহিহ মুসলিম বাকিসব মোডারেট।
বিঃদ্রঃ আমি জানি অনেকেই দৌড় দিয়ে স্বরচিত তাফসিরুল কুরআন আর হাদিসের রেফারেন্স নিয়ে আসবেন।
যেমনঃ সূরা মায়িদা ৩২ নাম্বার আয়াত।
‘এ কারণেই আমি বনি ইসরাঈলের প্রতি বিধান দিয়েছি- যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করে, সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে। আর যে কারো জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবনই রক্ষা করে। তাদের কাছে আমার রাসুলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি নিয়ে এসেছেন। এর পরও তাদের অনেক লোক পৃথিবীতে সীমা লঙ্ঘন করে।”
উল্লেখ্যঃ বনি ইসরাইল ছিল হজরত ঈসা এর সময়কার একটি নির্দিষ্ট জাতি এবং তাদের উদ্দেশ্য করেই আয়াতটি, সমগ্র মানবজাতি নয়।
আমি ইসলামিক চিন্তাবিদ নই, তবুও নিজ উদ্যোগে স্বীয় কৌতূহল উদ্রেকের কারনে খুজে বের করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
যদি কেউ আসলেই এই আয়াতগুলোর ভিন্ন ব্যাখ্যা পরিপূর্ণ রেফারেন্স দিয়ে খণ্ডিত করতে চান, সকলেই সাদরে আমন্ত্রিত।