পর্দা – নারীর সুরক্ষা নাকি কৌশলী প্রলোভনের ফাঁদ?

পর্দার যুক্তি তুলে যারা চিৎকার করে তারা বলে, নারী পর্দায় থাকলে সে ‘শুদ্ধ’, সে সম্মানিত, সে ‘বাঁচা’। অথচ একই সাথে তাদের সমাজে পর্দার আড়ালেই নারী সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের, গোপন নির্যাতনের শিকার। পর্দা নারীর আত্মমর্যাদা নয়, পুরুষতান্ত্রিক ট্যাবুর অন্ধকার।
শরীর হিসেবে নারীর উপস্থিতি ধর্মীয় চোখে এতটাই ‘উসকানি’ যে, নিজের নিরাপত্তার জন্য তাকে পল্লবিত করে যেতে হয় পর্দার নিচে। ধর্ম, সমাজ, পরিবার সবাই মিলে এতটা চাপে রাখে যে, মেয়েটি নিজের স্বাধীনতা, আত্মবিশ্বাস, শখ, স্বপ্ন সব পর্দার গহ্বরে ফেলে দেয়।

আসলেই কি পর্দা নারীকে সুরক্ষা দেয়, নাকি এটা কেবল পুরুষের দৃষ্টি ও প্রবৃত্তিকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ না করতে পারার ব্যর্থতার মুখোশ? যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, গৃহ্য নির্যাতন সবক্ষেত্রেই অনেক সময় পর্দানশীন নারীই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আসলে ধর্মীয় প্রলোভনের ফাঁদ এই ‘পর্দা’—যেখানে নারীকে শুদ্ধতা, সম্মান আর নিরাপত্তার স্বপ্ন দেখিয়ে বাস্তবে নিজের শরীর, ইচ্ছা, চিন্তা, আকাঙ্ক্ষা সব ছাড়া শেখানো হয়।

যদি নারীর নিরাপত্তা সত্যিই চাই, তবে প্রথমেই এই ভণ্ডামি, ধর্মান্ধতা, পুরুষতান্ত্রিকতাকে প্রশ্ন করতে হবে। নারীর শরীর, পোশাক, যাতায়াত, হাসি—এইসব কিছু নিয়ন্ত্রণের ফ্যান্টাসি নয়; স্বাধীন চিন্তা, সমান অধিকার ও একজন ব্যক্তিমানুষ হিসেবে নারীকে দেখতে শিখতে হবে।

পর্দা কারও বাঁচা-না-বাঁচার নির্বাচন নয়; আসল ফাঁদ হচ্ছে ধর্মীয় ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, পুরুষতান্ত্রিক বিভ্রান্তি। নারীর নিরাপত্তার একমাত্র উপায়—সাহস, শিক্ষা ও সামাজিক জাগরণ, ধর্মীয় শৃঙ্খল নয়।