নারীর অগ্রগতির পথে ইসলাম ধর্মের দুর্ভেদ্য বাধা

ইসলাম ধর্মের নামে কট্টররা নারীকে গৃহবন্দি রাখার অপপ্রয়াস চালিয়ে গেছে যুগের পর যুগ। মেয়েদের গায়ে বোরকা চাপিয়ে, উচ্চশিক্ষায় রীতিমতো নিষেধাজ্ঞা জারি করে, কর্মজীবনে যেতে দিলেই “ফিতনা” বলে চিৎকার করেছে। কোথাও পড়াশোনা, কোথাও চাকরি, কোথাও ব্যবসা—সবখানেই বোনদের প্রতিভা, মেধা, স্বাধীনতা, আত্মসম্মানকে ধর্মের নামে বন্দি করা হয়েছে।

আয়াত, হাদিসের বিভ্রান্তি আর আড়ালে লুকিয়ে থাকা পুরুষতান্ত্রিক গোঁড়ামি, এই ধর্মকে নারীর বিরুদ্ধে বঞ্চনার অস্ত্র করে তুলেছে। মেয়ের সম্পত্তির অধিকার অর্ধেক, বাবা-মায়ের নাম পর্যন্ত যুক্ত করার অধিকারও রুদ্ধ। বিয়ে, কোর্ট-ম্যারেজ, তালাক থেকেও নারীর মুখ বন্ধ করার জন্য ধর্মের ছুরি প্রস্তুত। ওয়াজে, মাহফিলে, ঘরে-বাইরে নারীর “লজ্জা”, “শালীনতা”, “মৌলিক অধিকার”—সবকিছুই নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার।

ইসলাম ধর্মে নারীর প্রতি যে অবজ্ঞা আর অবিচার—তাতে নারীর শক্তি, সম্ভাবনা, সাহস, স্বপ্ন সব মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ধর্মের নামে যৌন নিপীড়ন, বহু বিবাহ, বাল্যবিবাহ, বিশ্রী ফতোয়া, নারীর গায়ে এসিড, পুরুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে সব অপমান, নির্যাতন—সব কিছু কট্টর ইসলামের বাহিনী চালিয়ে গেছে নির্লজ্জভাবে।

না, নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে ধর্মের কোনও প্রকৃত সমর্থন নেই; বরং ধর্মান্ধতা, গোঁড়ামি, পুরুষতান্ত্রিক সুবিধাবাদ নারীবিদ্বেষী সমাজের ভিত্তি গড়ে তুলেছে। ধর্মের নামে নিত্যদিন নারীদের অপমান, হেয়, কর্মক্ষেত্রে বাধা, মাতৃত্বের দাসত্ব, যৌনতার বোঝা চাপানোর বাস্তবতা আর কত বছর চলবে? নারী শুধু সন্তান জন্ম আর পুরুষকে সন্তুষ্ট রাখার যন্ত্র নয়; সে স্বাধীন, সম্মান ও সম্মানিত জীবনের দাবিদার।

সবচেয়ে বিপজ্জনক—যারা নারীর সম্মান, উন্নয়ন, স্বাধীনতা, শিক্ষার কথা বলে তাদের ওপর ধর্মীয় গোঁড়ার লাঠি চালানো হয়। মেয়েরা নিজের অধিকার চাইলে বলে ‘কাফের’, ‘পাপিষ্ঠ’, ‘ইসলাম বিরোধী’, ‘নারীবিদ্বেষী’ ট্যাগ দিয়ে সমাজে একঘরে করা হয়। ধর্মের নামে নারীর সংগ্রামকে হত্যা করা, সাহস বিকল করা, ভবিষ্যৎ চুরি করা—ইসলাম ধর্মের কট্টররাই মূল দায়ী।

যদি সত্যিই পরিবর্তন চাই, তবে সবার আগে দরকার—ইসলাম ধর্মের মুখোশ উন্মোচন, নাটকীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ। নারীর অগ্রগতির পথ রুদ্ধ নয়; ধর্মের বিভক্তি, দরিদ্রতা, হিংসার প্রাচীর ভেঙ্গেই নারী এগিয়ে যাবে। সমাজের প্রতিটি স্তরে এই ভণ্ডামি, নিষ্ঠুরতা, অজ্ঞানতা ও কুসংস্কার রুখে দাঁড়াতে হবে।

নারী শুধু পুরুষের আধিপত্যের অবজেক্ট নয়। জয় হোক নারীর স্বাধীনতা, সাহসিকতা আর মর্যাদার। ধর্মভিত্তিক অবরোধ, জ্ঞান ও মানবতার আলোতেই শেষ হয়ে যাবে—এই অন্যায্য শৃঙ্খল।