হিন্দু ধর্মে যেভাবে শূদ্রদের দমন ও শাস্তির বিধান রয়েছে  

শূদ্র যদি ব্রাহ্মণ সহ অন্যান্য উচ্চবর্ণের ব্যক্তিদের প্রতি রুক্ষ বা অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করে, তবে শাস্তি হিসেবে তার জিহ্বা কাটার নির্দেশ রয়েছে। – মনুসংহিতা ৮/২৭০

এমন শাস্তি নির্ধারণের পিছনের যুক্তি হলো শূদ্র নিকৃষ্ট উৎস থেকে জন্ম নিয়েছে বলে মনে করা হয়। – মনুসংহিতা ৮/২৭০

যদি শূদ্র উচ্চবর্ণের লোকের প্রতি নাম ধরে অপমান করে, তবে তার শাস্তি হিসেবে জ্বলন্ত লৌহময় শঙ্কু তার মুখে নিক্ষেপ করা হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৭১-২৭২

দর্পের সাথে যদি শূদ্র ব্রাহ্মণকে ধর্মোপদেশ দেয়, তবে তার মুখ ও কানে গরম তেল ঢালা হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৭১-২৭২

যদি শূদ্র কোনো উচ্চবর্ণের ব্যক্তিকে আঘাত করে, তাহলে সেই আঘাত করার অঙ্গ ছেদন করা হবে। – মনুসংহিতা ২/২৭৯

শূদ্র যদি উচ্চবর্ণের কাউকে হাত তোলে অথবা পা দিয়ে আঘাত করে, তাহলে সেই হাত বা পা কেটে ফেলা হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৮০

যদি শূদ্র অহংকারে ব্রাহ্মণের সঙ্গে একই আসনে বসে, তাহলে তার কটিদেশ তপ্ত লোহা দিয়ে চিহ্নিত করে দেশ নির্বাসন অথবা তার পশ্চাদ্দেশ কেটে দেওয়া হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৮১-২৮২

দর্প দেখিয়ে শূদ্র যদি ব্রাহ্মণের গায়ে থুতু ফেলে, তবে তার ঠোঁটের অংশ কাটা হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৮১-২৮২

শূদ্র যদি ব্রাহ্মণের গায়ে প্রস্রাব করে অথবা অধোবায়ু ত্যাগ করে, তাহলে তার লিঙ্গ এবং গুহ্যদেশ ছেদন করা হবে। – মনুসংহিতা ৮/২৮১-২৮২

শূদ্র যদি ব্রাহ্মণের চুল ধরে তুলে ধরে অথবা অন্য কোনো অংশে হিংস্রতা প্রকাশ করে, তাহলে রাজা তার দুই হাত কাটবে। – মনুসংহিতা ৮/২৮৩

যদি শূদ্র যজ্ঞোপবীত পরিধান করে অথবা দ্বিজের চিহ্ন বহন করে, তবে তাকে হাত কাটা থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তি দেওয়া হবে। – মনুসংহিতা ৯/২২৪

কামবশত শূদ্র যদি ব্রাহ্মণকে ক্ষতি করে, তবে তাকে বিভিন্ন অঙ্গ ছেদন করে হত্যা করার নির্দেশ রয়েছে। – মনুসংহিতা ৯/২৪৮

যদি শূদ্র কোনো রক্ষিত বা অরক্ষিত দ্বিজাতির স্ত্রীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে তাকে লিঙ্গ ছেদন বা প্রাণদণ্ড দেওয়া হবে। – মনুসংহিতা ৮/৩৭৪-৩৭৫

অত্যধিক অত্যাচার সত্ত্বেও, নিম্নবর্ণের ব্যক্তিদের প্রলোভন দেখিয়ে বলা হয়েছে যে, গো, ব্রাহ্মণ, নারী, এবং শিশু বিপদে পড়লে, যদি কোনো নিম্নবর্ণের ব্যক্তি পুরস্কারের আশা ছাড়াই তাদের রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে, তাহলে তার স্বর্গলাভ হবে। – মনুসংহিতা ১০/৬২

ব্রাহ্মণ্যবাদের অমোঘ বিধান হলো, স্বামীর দ্বারা মুক্ত করা হলেও শূদ্র দাসত্ব থেকে পূর্ণরূপে মুক্ত হয় না। দাসত্ব তার জন্মগত ধর্ম, এবং মৃত্যু পর্যন্ত তা থেকে মুক্তি নেই। – মনুসংহিতা ৮/৪১৪