ইস্টার বিষয়ে বিস্তর বিভ্রান্তি

যে কোনও ধর্মগ্রন্থ মানেই পরস্পরবিরোধী বাণীর খনি। এই যেমন, বাইবেল (শব্দটিতে এ-কারের বদলে আ-কার বসাতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলাম) নামের ঐশী কিতাবে পরস্পরবিরোধিতার সংখ্যা কতো, কে জানে! তবে একটি সাইটে ১০০০ টি অসঙ্গতি উল্লেখ করা আছে। অবাক হবার কিছু নেই। আদিম কালের মরু-মেষচালকদের রচনা তো এমনই হবার কথা।

বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে সর্বমোট বইয়ের সংখ্যা সাতাশ। তার মধ্যে চারজন লেখকের (মথি, মার্ক, লুক, জন) রচিত চারখানা বইয়ে বর্ণিত হয়েছে যিশুর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের গালগল্প। সেগুলোকে বলা হয় গসপেল (‘গসিপ’ বললে যথার্থ হতো, কারণ সবই শোনা কথার ভিত্তিতে লেখা), যার অর্থ – শুভ সংবাদ। বাংলা বাইবেলে এই বইগুলোর নাম – মথি লিখিত সুসমাচার, লুক লিখিত সুসমাচার… ইত্যাদি।

তো এই চার লেখকের দেয়া অনেক তথ্যই বিস্তর বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। এসবে ইস্টার অর্থাৎ মৃত্যুর পরে যিশুর আবার জীবিত হবার ঘটনা সংক্রান্ত বিবিধ তথ্যভিন্নতা বিষয়ে চমৎকার একটি নিবন্ধে চোখ বুলিয়ে নিন। কয়েকটি উল্লেখ করা যাক:

১. স্থাপনের আগে ক্রুশটি বহন করেছিল কে?
(তিন লেখক বলছে – সাইমন, চতুর্থজন লিখছে – যিশু)

২. ক্রুশের ওপরে কী লেখা ছিলো?
(চার লেখক দিয়েছে চারটি ভিন্ন ভার্শন)

৩. যিশুর সর্বশেষ বাণী কী ছিলো?
(চারজন উদ্ধৃত করেছে তিন রকম বাণী)

৪. রোববারে মেরি মাগদালিনের সঙ্গে কে কে গিয়েছিল সমাধিস্থলে?
(চার লেখকের চার ভার্শন)

৫. মেরি মাগদালিন কোন সময়ে সমাধিস্থলে গিয়েছিল?
(চারজনের কথায় মিল নেই)

৬. সমাধিস্থলে গিয়ে মেরি মাগদালিন (ও তার সঙ্গী/সঙ্গীরা) কী দেখেছিল?
(চার লেখক লিখেছে ভিন্ন ভিন্ন কথা)

৭. মেরি মাগদালিন (ও তার সঙ্গী/সঙ্গীরা) কি কবরে ঢুকেছিল?
(তিনজন ‘হ্যাঁ’ লিখলেও একজন লিখেছে ‘না’)

…ইত্যাদি।