সৌদির তেল রপ্তানি হয় পারস্য উপসাগরের বন্দরগুলি থেকে । আমিরাত , কুয়েত , কাতার এদেরও একই অবস্থা ।ইরাকের বেশ বড় পরিমাণ তেলও ঐ পথে যায় , কাতারের গ্যাসও যায়।
কাজেই সৌদি ইরান যুদ্ধ লেগে গেলে হরমুজ প্রনালি বন্ধ করে দেয়ার সর্বোচ্চ চেস্টা করবে ইরান । সেটা বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে গেলে ( ইরান শত শত মাইন ছেড়ে দেবে বলে ধারনা করা হয় ) সউদি’র টেকাটুকা আয়ের রাস্তা বন্ধ আর বিশ্বজুড়ে তেল নিয়ে তেলেস্মাতি শুরু হয়ে যাবে ।
কাজেই ইয়েমেন এর এডেন সৌদির জন্য খুবই জরুরি । ইয়েমেনে হুথিদের পেছনে ইরান আর ধাড়ি বদগুলির পেছনে সৌদি – মাঝখানে ইয়েমেনের সাধারন মানুষ মরে ভুত হয়ে যাচ্ছে ।
সৌদি ইরান এই ছায়া যুদ্ধের কারনে সিরিয়া এবং ইরাকে আইসিস এর আবির্ভাব এবং তার ফলাফল সবার জানা । বাকি ছিল লেবানন ।
এইবার সৌদি সেই লেবাননে ইরানের বন্ধু হেজবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে নতুন ফ্রন্ট খুলছে । শিগগির লেবাননে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে । একদিকে মিশেল আউনের নেতৃত্বে খ্রীস্টিয়ান বাহিনি, দ্রুজদের আমাল মিলিশিয়া, লেবাননের সরকারি বাহিনি , যতসব আল বাল কায়েদা আর আইসিস এবং আকাশ পথে ইসরাইলি বিমান অন্যদিকে হেজবুল্লাহ ।
ঐ যুদ্ধ লেগে গেলে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যহার করতে বাধ্য হবে হেজবুল্লাহ । ফলে বেকায়দায় পড়বে আসাদের সরকারি বাহিনি । ইরানের পক্ষে নতুন সেনা পাঠানো সম্ভব নয় বলেই ধারনা করা হচ্ছে । পুতিনের সাথে সৌদি যে ভালবাসার আদান প্রদান করেছে তার ফলে মনে করা হচ্ছে রাশিয়া আসাদের জন্য খুব বেশি এগিয়ে আসবে না – যেটুকু করেছে সেটাই হয়ত চুড়ান্ত ।
তারমানে, ডিসেম্বর নাগাদ আমরা লেবাননে আগুন জ্বলে ওঠা দেখতে পারি , সিরিয়ার দেইর আজ্জরের তেল খনিগুলির দখল আসাদের বাহিনি না আমেরিকান ভাড়াটে খুনি আইসিসে + ফ্রি সিরিয়ান আর্মি সেই প্রশ্নের ফয়সালা এখনও বাকি । আর যাই হোক আমেরিকা সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার সাথে টক্কর দিতে যাবে না ।
সউদি’র এইসব গ্যাঞ্জাম এ আমেরিকা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে , ইসরাইল তার রাস্ট্রদুতদের নির্দেশনা দিয়েছে যেন সউদি’র সমর্থনে বক্তব্য দেয়, জনমত গঠন করে । তবে এসব কিছুই ফ্রি নয় ।
এই সমর্থন এর বিনিময়ে সৌদির গোঁড়া ওয়াহাবি আইন কানুন হাল্কা করতে হবে – সেই কাজ শুরু হয়েছে । এর ফলে যে নতুন পশ্চিমা ধ্যান ধারনার শ্রেনি সামনে চলে আসবে তারা স্বাভাবিকভাবেই আমেরিকার পক্ষে কাজ করবে । মোহাম্মদ বিন সালমান ( MBS নামে যাকে বিশ্ব মিডিয়ায় উল্লেখ করা হচ্ছে ) আপাতত বিরোধীমতের লোকদের শায়েস্তা করতে পারছেন ।
কিন্তু অদুর ভবিষ্যতে গোঁড়া রক্ষনশিল মোল্লা আর বিভিন্ন গোত্রপ্রধানদের রক্তক্ষয়ী প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে – কারন নিঃসন্দেহে একটা রক্ষনশিল সমাজ ভেঙ্গে পড়বে আর মোল্লারা চেয়ে চেয়ে দেখবে না ।
সুতরাং ২০১৮ সালে আরো ধ্বংস আরো খারাপ খবরের জন্য প্রস্ততি নেয়াই ভালো।