মুক্তমনার মৃত্যু মিছিল এবং বাংলায় প্রগতিশীলতার ভবিষ্যত

(১)
কেন লিখি , অন্য কেওই বা কেন লেখে-এর সহজ উত্তর একটাই। নিজের মনকে বলতে থাকা মনোলগ-নিজের সাথে যুদ্ধ করতে থাকা নিজের অব্যক্ত কথামালাকে পাঠকের সামনে আনা। মনকে হাল্কা করার একটা পদ্ধতি।

এক এক করে অভিজিত, অনন্ত, বাবু, নিলাদ্রি-এদের সবাই এখন শহিদ। মুক্তমনার অবিচ্ছেদ্য প্রানেরা এখন হেমন্তের রাতে উল্কাপাত। ২০০৩ সালে যখন মুক্তমনায় অভিজিতের অনুরোধে লেখা শুরু করি-কখনো ভাবিনি, এই পরিণতির মধ্যে দিয়েও যেতে হবে। হয়ত ভাবা উচিৎ ছিল।

পরিস্কার করেই বলি, অভিজিতের মৃত্যু সংবাদে প্রথম ঘন্টায় খুব ভয় পেয়েছিলাম। যেকোন জৈবিক জীবের একটা ইন্সটিঙ্কিভ ভয় থাকে-এটা ছিল সেই ভয়। কিন্ত আস্তে আস্তে বিশ্লেষন করে, প্রথম ঘন্টার মধ্যেই নিজেকে ফিরে পেতে সক্ষম হই। কিসের ভয়? আমরা ভয় পাই-সেটাই ত ওরা চাইছে। আমি ফেক আই ডি থেকে কোনদিন কিছু লিখি না। কারন ফেক আইডি থেকে লেখা মানে দুটো বার্তা পরিস্কার করা হয় -(১) লেখক ভীতপ্রাণ কীট (২) আমার নিজের আদর্শের ওপর নিজের আত্মবিশ্বাস কম-তাই নিজের জীবন বাজি ধরে লিখতে রাজী নই।

সব থেকে বড় কথা যদি ভয়ই পাব ত এতদিন এত দর্শনশাস্ত্র ঘেঁটে কি ললিপপ লিখছিলাম? মৃত্যু ভয়? মরতে ত একদিন হবেই। সেটাই জীবনের পরম বাস্তব। সেই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে বেশীদিন বাঁচার চেষ্টা সবাই করে-সবাই চাইবে নাতি নাতনীর মুখটা দেখে যেতে। কিন্ত সেইভাবে বেঁচে থাকা আর একটা ইঁদুরের বেঁচে থাকার মধ্যে পার্থক্যটাই বা কি?

দুর্যোধন কেন পান্ডবদের সাথে যুদ্ধে গেলেন? তা কি রাজত্বের, ভোগের লোভে?

মহাভারত তা বলে না। দুর্যোধন কর্নের সাথে প্রাণ খুলে নিজের মনের কথা বলতেন যা রাজসভায় বকা খাওয়ার ভয়ে বলতে পারতেন না। দুর্যোধন কর্ণকে বল্লেন-হ্যা পান্ডবদের পাঁচটা গ্রাম কেন, গোটা রাজ্য দিতেও আমার আপত্তি ছিল না। রাজ্যভাগ করে শাসন করলে কি হত? জীবনের বাকীদিনগুলো আমি আর পাঁচটা রাজার মতন ভোগবিলাসে কাটাতাম। আমার মৃত্যুর পরে সবাই আমাকে ভুলে যেত। ওমন রাজা কত আসে যায়। কিন্ত আমি যুদ্ধ চাই। ভীমের সাথে দ্বৈরথ। আমি দেখাতে চাই গোটা পৃথিবীকে, আগত ইতিহাসকে ভীমসেন না- আমিই ইতিহাসের সেরা গদাযোদ্ধা। সেটাই আমার লেগাসি। সেই গৌরবের মৃত্যুই আমার কাম্য। ঐ হাজার হাজার রাজাদের জন্মমৃত্যুর ভীরে আমি নেই!

না, মৌলবাদের বিরুদ্ধে যে যাত্রা আমরা মুক্তমনারা শুরু করেছিলাম একবিংশ শতাব্দির জন্মলগ্নে, তার থেকে পালাচ্ছি না। হাজার লাশ পড়লেও এই কলমযুদ্ধ জারি থাকবে। একজন যোদ্ধার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু পরম সৌভাগ্যের।

যারা ভাবছেন গোটা পৃথিতে আমরা সবাই পাশাপাশি শান্তিতে থাকব। হিন্দু মুসলমান-আমরা সবাই ভাই ভাই। দাঙ্গা হবে না। লাশ পড়বে না আদর্শবাদের বিভেদের জন্য। বোকার মতন ভাবছেন। হিন্দু মুসলমান কেন-দুজন হিন্দুও একে অন্যের ভাই না। দুজন মুসলমান ও না। মধ্য প্রাচ্যে শিয়ারা সুন্নীদের, সুন্নীরা শিয়াদের কোপাচ্ছে। তা আরো ভয়াবহ।

এই পৃথিবীতে পরিবেশের ক্ষতি না করে, বর্তমান প্রযুক্তিতে ৩০০ কোটি লোক বাঁচতে পারে। সেখানে বর্তমান লোক সংখ্যা তার দ্বিগুন। এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলিতে সর্বত্র জনসংখ্যা বাড়ন্ত । জনঘণত্বের আধিক্যে বেঁচে থাকার রসদের অপ্রতুলতা। ফলত চারিদিকে দূষন আর দুর্নীতি। এবং সম্পদের ভাগ নিয়ে দাঙ্গা। তা কখনো রাজনৈতিক। কখনো ধর্মীয়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সভ্যতা মানবতা রূপান্তরিত হয় সারভাইভালিজমে । ডি এন এতে গ্রথিত কোড বলে দিচ্ছে তুমি একটা প্রাণী। চারিদিকে কই এর ঝাঁক। খাবার নেই। জমি নেই। কিন্ত তোমাকে বাঁচতে হবে। ছলে বলে খুন করে। ওটাই মানুষের “সভ্যতার” ধারাবাহিক ইতিহাস। এখন সেটাই ফিরে আসছে মৌলবাদি আর সন্ত্রাসবাদ রূপে। নতুন বোতলে পুরোনো ওয়াইন।

(২)

ধণতন্ত্র এবং মার্কেট মুনাফা অপ্টিমাইজ করে। কিন্ত মানুষের সমাজের রাষ্ট্রের সমস্যাগুলির সমাধান করে না। সমস্যার সূত্রপাত এই “ডিসকানেক্ট” থেকে। এই ব্যপারটা গভীরে না বুঝলে, ধর্ম এবং মৌলবাদের বর্তমান সমস্যাগুলো আমরা বুঝবো না।

শিল্প বিপ্লবের ফলে ধণতন্ত্রের চাহিদা মেটাতে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি তৈরী হল। যৌথ পরিবারগুলি ভেঙে গেল। এই প্রক্রিয়াটা ইউরোপে সম্পূর্ন হয়েছে ১৯০০-৩০ সাল নাগাদ। ভারত বাংলাদেশে এটা শেষের ধাপে।

ধণতন্ত্রের প্রয়োজনেই ব্যক্তিস্বাধীনতা আস্তে আস্তে রাজনীতির সেণ্টার থিম । ইউরোপে এই প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৮৫০ সাল থেকে। এই চলমান ভাঙনক্রিয়া যেখানে ফ্যামিলির গুরুত্ব হ্রাস পাচ্ছে, চার্চের ধর্মের দড়ি শিথিল হচ্ছে -এসব থেকে নিৎসে লিখলেন দুটি গুরুত্বপূর্ন থিসিস। প্রথমটা হচ্ছে ওই ধর্মীয় বাঁধনে, সামন্ততন্ত্রে, নৈতিকতার কড়া শাসনে-যা যতই ব্যক্তিস্বাধীনতা নারীস্বাধীনতা হরণকারী হৌক না কেন-ওটা ছিল “সার্টনিটির সময়”। ধর্মী নৈতিকতায় বিশ্বাস করে মানুষ নিশ্চিত ছিল-কি তার জন্যে ঠিক। কি বেঠিক।

ব্যক্তিস্বাধীনতা নেই । মানুষ, প্রতিটা নরনারী জানত তাকে এটাই করতে হবে। অন্য কিছু ভাবার উপায় ছিল না। কেও চাইলেই সিঙ্গল মাদার হতে পারত না। কেও চাইলেই বিকিনি পড়ে বিচে ঘুরতে পারত না। মানুষ জানত তাকে কতগুলো ধরাবাঁধা গদেই জীবন কাটাতে হবে।

নিৎসে লিখলেন ঈশ্বরের বা ধর্মের মৃত্যুর পরে মানুষ ব্যক্তিস্বাধীনতা যেমন পেল-অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল নিত্যনতুন আবিস্কারে-কিন্ত একই সাথে শুরু হল “আনসার্টেনিটি”। আগে ধর্মের চাপে মানুষ জানত তাকে বাবা মাকে দেখতেই হবে, নিজের স্বার্থের আগে ফ্যামিলির স্বার্থে ধর্মের স্বার্থে কমিউনিটির স্বার্থে এই এই কাজ করতেই হবে। মেয়েরাও জানত তাদের পুরুষতান্ত্রিক বৈষম্যবাদি নীতিগুলো মানতেই হবে। এগুলো ছিল সার্টেনিটি। ব্যাক্তিস্বাধীনতা স্বীকৃত হতেই সেই সার্টেনিটি থাকল না। আমি কি করে নিজেকে চালাব, নিজের বৃদ্ধি ঘটাবো তা একান্তই আমার স্বাধীনতা। নিৎসের কোডে “উইল টু পাওয়ার”। নিজেকে সমৃদ্ধশালী করার স্বাধীন চিন্তা। কিন্ত আমরা ঢুকে গেলাম আনসার্টেন টাইমে। নারী স্বাধীনতা ভালো না খারাপ, ঈশ্বরকে অস্বীকার করা, ধর্মকে অস্বীকার করা ভাল না খারাপ-এগুলো নিয়ে আগে বিতর্ক ছিল না। সবাইকেই মানতে হত সেই সার্টেন টার্মস । কিন্ত শিল্প বিপ্লব এবং তার থেকে উদ্ভুত ব্যক্তি স্বাধীনতার ধারনা যা বিংশ শতাব্দিতে ইউরোপে এল, তা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং মিডল ইস্টে আসতেই গন্ডোগল। ভারতীয় উপমহাদেশে যারা ওই সার্টেন টার্মে বিশ্বাসী-যাদের আমরা ধর্মীয় রক্ষণশীল বলছি-তাদের সাথে লিব্যারাল ডেমোক্রাসিতে বিশ্বাসী লোকজনের সংঘাত ছিল টাইমবোমের মতন। একদিন না একদিন লাশের আকারে সামনে আসত। রক্ষণশীল বনাম লিব্যারাল দ্বন্দ আমেরিকাতেও আছে। এখনো আছে। কিন্ত এই সার্টেন বনাম আনসার্টেন টাইমে বিশ্বাসীদের বিরোধ সেখানে গণতান্ত্রিক পক্রিয়ার মধ্যে আবদ্ধ। বাংলাদেশে এই বিরোধিতার ক্ষেত্রটাই নেই। ইসলামের বিরোধিতা করলে ইসলামিস্ট জঙ্গীরা কল্লা কাটবে। নাস্তিকদের সেই রক্ত দেখে মুসলমানরা আনন্দে নাচবে। আর সেটা যদি না হয়, রাষ্ট্র ব্লেস্ফেমি আইনে জেলে ঢোকাবে। ভারতে হিন্দুত্ববাদিরা ক্ষমতায় আসার পরে এই বিরোধিতার ক্ষেত্রটা সংকুচিত হয়ে ক্রমশ ধর্মীয় কালেক্টিভিজমে বিশ্বাসী শক্তির হাতে হেলে আছে।

(৩)
ধর্মের অভিকর্ষ থেকে মুক্তি পেয়ে, স্বতন্ত্রতা বা ইন্ডিভিজুয়ালজমের যে ক্ষেত্রটা ইউরোপে তৈরী হল-তা ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তানে ব্যর্থ কেন?

এর মূল কারন শিল্পায়নের প্রক্রিয়াটা ইউরোপ আমেরিকাতে যেভাবে হয়ছে বা এখনো হয়, ভারত এবং মিডল ইস্টে সেই পথে হয় নি। ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের মূলে আছে উদ্ভাবকরা। যাদের অর্থের জোগান দিত ধনী লোকেরা। নতুন প্রযুক্তির জন্য নতুন জ্ঞান, বিজ্ঞান প্রযুক্তির প্রয়োজনে ইউরোপের রুলিং ক্লাস লিব্যারালিজম বা ব্যক্তিস্বাধীনতা সমর্থনে বাধ্য ছিলেন।

একটা উদারহন দিই। স্টীল ইন্ডাস্ট্রির জনক স্যার হেনরী বেসেমার। ইংল্যান্ডে উনার বাবার ছোট্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম ছিল। সেখানেই মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর হাতে খড়ি। ছোট বেলা থেকেই নতুন নতুন যন্ত্র বানাতেন । ১৮৫৬ সালে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় রয়াল নেভীর একটা বড় বরাত পেলেন। ক্রমিয়াতে রাশিয়ান ডিফেন্স ভাংতে, রয়াল নেভীর দরকার ছিল দূরপাল্লার কামান । যার লক্ষ্য হবে নিখুঁত। সেযুগে সিলিন্ড্রিক্যাল শেলের ধারনা ছিল না-স্যার হেনরী আবিস্কার করলেন একটা স্পিনিং শেল কেবল মাত্র দূরপাল্লায় নিখুঁত ভাবে আঘাত হানতে পারে। কিন্ত মুশকিল হল কামানের নল দিয়ে ওই ধরনের ঘুড়ন্ত শেল ছাড়তে গিয়ে কামানগুলো ফেটে যেত। স্যার হেনরী বুঝলেন উন্নত ধরনের লোহা দরকার কামানের নলের জন্য। তার থেকে মাত্র এক বছরের মধ্যে জন্ম হল স্টিল তৈরীর বেসেমার পদ্ধতি। যা আধুনিক স্টিল শিল্পের জননী বলে পরিচিত। স্যার হেনরী ইংল্যান্ডের রাজা বা ধনী ফ্যামিলির লোক ছিলেন না। কিন্ত ওই এক আবিস্কারে ইংল্যান্ডের অন্যতম ধনী শিল্পপতি হলেন। তার আবিস্কার লাইসেন্স করে আমেরিকাতে আরো বিরাট ধনী হলেন এন্ড্রু কার্নেগী-যিনি নিজেও ছিলেন এক দরিদ্র স্কটিশ ইমিগ্রান্ট।

ভারতে স্টীল শিল্পের জনক স্যার জামসেদজী টাটা। উনার বাবাও বরোদার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। স্যার হেনরীর মতন উনিও ছোট থেকে বিশাল মহীরূহ হলেন ভারতে স্টীল শিল্প স্থাপন করে। কিন্ত উনি নিজে ইঞ্জিনিয়ার ও না-উদ্ভাবক ও না। বেসেমার স্টীল প্রযুক্তি ইংল্যান্ড থেকে এনে উনি ভারতে চালালেন। সেই ট্রাডিশন এখনো চলছে। ভারতে সব প্রযুক্তিই আমদানি করা হয়। হালে ইসরোর মত কিছু সংস্থা একটু ব্যতিক্রম। এই নয় টাটা বিজ্ঞান প্রযুক্তির গুরুত্ব বুঝতেন না। বুঝতেন বলেই তার অর্থানুকুল্যে টাটা ইন্সটিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ, ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অব সায়েন্স শুরু হল। কিন্ত তারা কোন প্রযুক্তি ভারতে দিতে সক্ষ্মম হল? ভারতে এখনো সমান ভাবেই বিদেশ থেকে প্রযুক্তি ধার করা চলছে। ফলে বিজ্ঞান ভারতের হেঁসেলে কোনদিন ঢুকলো না। তা সীমাবদ্ধ বইতে, পেপারে আর ডিগ্রীতে। ফলে ভারতের বিজ্ঞানীরা নারকেল ফাটিয়ে মিসাইল লঞ্চ করেন!

স্যার হেনরী বনাম স্যার জামসেদজির গল্প তুলনা করলে তিনটে সত্য প্রবাহমান।

প্রথমত ভারতে কোনদিন কোন আবিস্কার করার প্রবণতা ছিল না। কারন ভারতের শিল্পের মালিকানা চিরকাল বিজনেস ক্লাসের হাতে। যারা প্রযুক্তিবিদ না। উদ্ভাবক না। ফলে ভারতের রুলিং ক্লাস যা কিনা পুরোটাই এই বিজনেস ক্লাস দ্বারা পরিচালিত কোনদিন ব্যাক্তিস্বাধীনতার গুরুত্ব সেইভাবে উপলদ্ধি করে নি। উদ্ভাবন নির্ভর শিল্পের জন্য ব্যক্তিস্বাধীনতা সব থেকে বেশী আবশ্যক । ফলে ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয়টা ভারত বা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনদিন গুরুত্বপূর্ন না। কারন ভারত বা বাংলাদেশের উৎপাদন শক্তি ব্যক্তিউৎকর্ষের ওপর নির্ভরশীল না।

অর্থাৎ একজন মার্ক্সিস্টের মতন ভাবলে- ধণতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যক্তি উৎকর্ষতাটা হচ্ছে বেস। আর সেই বেসের ওপর তৈরী সুপারস্ট্রাকচার ব্যক্তিস্বতন্ত্রতা। যে পলিটিক্যাল সিস্টেমে বেসটাই তৈরী হয় নি, সেখানে ব্যক্তিস্বতন্ত্রতার সুপারস্ট্রাকচার আসবে কোথা থেকে ?

দ্বিতীয়টা হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশ আসলেই বৃটিশ কলোনী। উদ্ভাবনের দরকার সব থেকে বেশী মিলিটারী প্রযুক্তিতে । কলোনীর কোন মিলিটারী ছিল না। ফলে সমাজে উদ্ভাবক বা বিজ্ঞানীদের আসলেই কোন দরকার ছিল না। এইজন্য ভারতে বিজ্ঞান চর্চা সম্পূর্ন ভাবে বহুদিন যাবত পেপার পাবলিকেশনের চর্বিত চর্বন। সমাজ বা রাষ্ট্রের আসলেই কোন ইন্টারেস্ট নেই তাতে। ফলে বিজ্ঞান চেতনা এই সমাজে আসবে কি করে?

তৃতীয় হচ্ছে এই যে ভারত বা বাংলাদেশের রুলিং ক্লাস বা শাসক শ্রেণী তৈরী হল-তাদের চরিত্রটা কি? রুলিং ক্লাস প্রতিটা দেশেই আসলে সেই দেশের টপ বিজনেস ক্লাসের পেইড প্রতিনিধি। পুতুল নাচের দড়ি তাদের কাছেই। বিজনেস ক্লাস উন্নত মানের হলে সেই দেশের শাসক শ্রেনী ও উন্নত হবে। কারন রাজনীতিবিদরা শুধুই নাচের পুতুল। সুতো আছে ওই বিজনেস ক্লাসে হাতে। মোদি মমতা হাসিনা-এরা রঙ্গমঞ্চের মহান অভিনেতা-স্ক্রিপ্টটা কিন্ত ঐ ব্যবসায়ী শ্রেণীর হাতে।

ভারতের বিজনেস ক্লাস এখন কারা? টাটা বিড়লা, আদবানী, আম্বানী। সবাই গুজরাটি। কিছু দক্ষিন ভারতীয় আছে আই টি শিল্পে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, এরা শুধুই ট্রেডিং ক্লাস। দুপয়সায় কিনে দশ পয়সায় বেচতে জানে। উদ্ভাবন করে উন্নত প্রযুক্তি আনা, তার জন্য মানব সম্পদের উৎকর্ষতা-এসব এদের মাথা ঢোকে না। প্রযুক্তি এরা শুধু কিনতে জানে। ভারতের এই বিজনেস ক্লাস চায় তাদের পরিবারের সম্পদ বাড়ুক। তারাই রাজত্ব করবে। বাকীদের তারা গণতন্ত্রের মাধ্যমে “কন্ত্রোল” করবে। এর জন্য হিন্দুত্ববাদি, ইসলামবাদি, জাতিবাদি, লুম্পেনবাদি, বামপন্থী-সবাইকেই তারা টাকা দিয়ে কিনে রেখেছে। বাংলাদেশে শিল্পপতি গোষ্টিটা পুরোটাই লুম্পেন এবং বাটপার।

ভারতে এই বিজনেস ক্লাসটাই রাজনীতিবিদ, হিন্দুত্ববাদি, জামাতি, কাস্টিস্ট, বামপন্থী সবাইকেই টাকা দিচ্ছে যাতে রাষ্ট্রে এদের ক্ষমতা অব্যাহত থাকে। একে ঘণবসতির জন্য গোটা দেশটাই বারুদের ওপর বসে- তার মধ্যে এই বিজনেস ক্লাস টাকা ঢালে সাম্প্রদায়িকতা সহ সব আদর্শকে উস্কে দিতে । উদ্দেশ্য জনগণ যদ্দিন বিভক্ত থাকে, তদ্দিন স্টাটাস ক্যু বজায় রাখা সহজ। নির্বোধ জনগণ নিজেদের মধ্যে জামাত, বিজেপি, তিনোমূল, সিপিএম করে মরবে। ফয়দা লুঠবে পুতুলনাচের সূতো আর স্ক্রিপ্ট যাদের হাতে, তারা।

উদাহরন চান? হাসিনার আসল শক্তি কোথায়? জনসমর্থন ত উনার পেছনে নেই। উনার আসল শক্তি, উনি বুঝেছেন সঠিক ভাবে। ভারতের রুলিং ক্লাসকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলে বাংলাদেশে উনার একনায়কতন্ত্র কেও রুখতে পারবে না। কারন বাংলাদেশ ভারত দ্বারা সুরক্ষিত। আর ভারতের রুলিং ক্লাস কি চাইছে? ভারতের রুলিং ক্লাসটাই বা কারা ? তারা আসলেই আদানি আম্বানিদের সরকারি প্রতিনিধি। ফলে মোদির বাংলাদেশ সফরে, হাসিনা এনার্জি সেক্টর খুলে দিলেন আদানি আর আম্বানীদের জন্য। আদানি আম্বানিদের সুখে রাখতে পারলে হাসিনার ক্ষমতা হারাবার কোন ভয় নেই। কেও তাকে টাচ করতে পারবে না। লাখে লাখে বাংলাদেশী হিন্দুরা ভিটেমাটি ছাড়া হলেও মোদি হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখবেন। কদিন? যদ্দিন আদানি আম্বানীরা বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা বাড়া্তে পারবে হাসিনার সহায়তায়। আর এদিকে কিছু মুর্খ বাঙালী হিন্দু বিজেপি বিজেপি করে চেঁচাবে । ভাববে মোদি তাদের বাঁচাবে। তারা মূর্খ। খেলাটা ধরতে পারেন নি। হাসিনা বুদ্ধিমান। টিকে থাকার খেলাটা উনি বুঝছেন। ভারতের বিজনেস ক্লাসের কাছে বাংলাদেশ খুলে দিয়েছেন। আবার বাংলাদেশে মৌলবাদিদের ও তেল দিচ্ছেন। কে আটকায় তার আরো দশ বছর?

বাঙালী হিন্দু ফ্যামিলি থেকে আসার কারনে আমি এটা বুঝি-এদের বুদ্ধিসুদ্ধি খুব কম। এরা স্বার্থপর এবং ভীতুর ডিম। ভীতু লোকেরা কখনো বুদ্ধিমান হতে পারে না। নিজেরা মুসলমানদের তুলনায় একটু বেশী পড়াশোনা করেছে বলে, নিজেদের বুদ্ধিমান ভাবে। শামুকের মধ্যে ভয়ে ঢুকে থেকে বুদ্ধিমান হওয়া যায় না। মুসলমানরা বাংলাদেশে এদের ভিটে বাড়ি কেরে নিয়েছে। সেই প্রক্রিয়া পশ্চিম বঙ্গেও শুরু হয়েছে। এরা মুসলমানদের হাতে মার খাবে। আর গুজরাতি ব্যবসায়ীদের কথায় নাচবে।

(৪)

তাহলে এই মৌলবাদের পেছেন ধর্মের ভূমিকা নেই? নিশ্চয় আছে। কিন্ত ধর্মটা হচ্ছে তেল। আগুন না। আগুনে তেল দিলে মৌলবাদের লেহিহান শিখাটা বাড়ে। অভিজিত রায় নিলাদ্রিরা সেই আগুন থামাতে গিয়ে, নিজেরাই জতুর্গৃহে জীবন্ত দগ্ধ হোন।

নিৎসে দেখিয়েছিলেন খ্রিষ্ঠানিটির সব থেকে আলোকিত দিকটাই , সব থেকে অন্ধকারপূর্ন। কেন?

কারা খৃষ্ঠান ছিল রোমে প্রথম শতকে? দরিদ্র– হতদরিদ্র দাস আর ভুমিহীনরা। তাদের ওপর শোষন অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদি আন্দোলন থেকেই জন্ম খ্রীষ্ঠ ধর্মের। নিৎসে দেখালেন আবার সেই কারনেই খ্রীষ্ঠান ধর্মে নেগেটীভিটি খুব বেশী। সব কিছুতেই সিন। চারিদিকে পাপ আর পাপ। মানুষের আনন্দাত্মাকেই তারা চেপে দিল।

ইসলাম কাদের হাতে শুরু? এরা ছিল দরিদ্র। আল ইসলামের প্রথম দিকের সৈনিকরা ছিল হত দরিদ্র। ধনী মক্কাবাসীর অত্যাচারে যখন দেখল কোন ভবিষ্যত নেই, এরা মদিনাতে আল ইসলামের ক্যারাভান লুটপাট টিমে যোগ দিল। এই জন্য ইসলাম এবং খ্রীষ্টান ধর্ম-দুদিকেই ধনীদের এবং তার শোষনকে সর্বত ভাবে ঘৃণা করা হয়েছে। ঘৃণা করা হয়েছে ধনীদের জীবন যাত্রাকে। ঠিক এই কারনেই ইসলাম সাংঘাতিক ভাবে ক্যাননিক্যাল-অর্থাৎ এর বেস হচ্ছে “এটা করবে” “এটা করবে না”- হালাল বনাম হারামের একগুচ্ছ বিধিনিশেধ। আরবদের সুশৃঙ্খলায়িতে করা ছিল এর উদ্দেশ্য। কিন্ত এটাই ইসলামের সব থেকে অন্ধকার দিক। হালাল বনাম হারামের ক্যানোনিক্যাল ফর্মের জন্যই বিশ্বাসী মুসলমানরা নিৎসের ওই সার্টেনিটি টাইম জোনে বাস করে বা করতে চায়। তারা নিশ্চিত যে নারীর জন্য পর্দানসীন প্রথা ভাল। একজন পুত্র সন্তানের প্রাপ্য কন্যাসন্তানের দ্বিগুন। সুদ হারাম। পুরুষের চারটে বিবাহ বৈধ। তাদের মনে দ্বন্দ নেই। তারা জানে এগুলোই ঠিক। কারন তারা নিৎসে বর্ণিত ওই “সার্টেনিটির জগতের” বাসিন্দা। যেখানে তারা ইসলামের বিধান যে ভাল, সেই ব্যপারে নিশ্চিত। ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়ে “উইল টু পাওয়ার” বা নিজের চিন্তার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতায়নের, নিজের উত্তোরনে তারা বিশ্বাসী না।

এই দুই ধর্মের আরো দুটো গুরুত্বপূর্ন দিক আছে-যার মাধ্যমে ইসলাম এবং খ্রীষ্ঠ ধর্ম, আপামর শোষিত নিপীড়িত জনগণকে নিজের কোলে টেনেছে।

প্রথমটা হচ্ছে- “আমরা ভিক্টিমাইজড। আমাদের ওপরে অত্যাচার অনাচার চলছে। তাই রুখে দাঁড়ানো আমাদের ধর্মীয় কর্তব্য”

দ্বিতীয়টা –” শাসক শ্রেনী অত্যাচারী এবং ধর্ম বিচ্যুত। তারা বিধর্মী দ্বারা পরিচালিত। তাই ধর্ম যুদ্ধ বা জিহাদে নামতে হবে ”

ইসলামের ইতিহাসে ধারাবাহিকতা বলে যদি কিছু থাকে, তার সবটাই এই দুটি শ্রেনীদ্বন্দ থেকে উদ্ভুত চক্রান্ত তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

এবার বাংলাদেশের দিকে তাকানো যাক। ওই ছাপান্নো হাজার বর্গমাইলে অত লোক। ৬০% লোক দুবেলা পেট ভরে খেতেই পায় না। তারা ইসলামের ভিক্টিমাইজশন তত্ত্বে আকৃষ্ট হবে না? যেখানে তাদের শাসক শ্রেনী লুঠপাট চালাচ্ছে ?
তারা ত বিশ্বাস করে হিন্দুদের সাথে যোগসাজগে হাসিনা এমন একটা শাসক শ্রেনী তৈরী করেছেন, যারা তাদের ন্যায্য ইসলামিক জাস্টিস থেকে বঞ্চিত করেছে। এরা ত মৌলবাদি হবেই। এবং হিন্দুদের জমি ব্যবসাও লুঠপাট করবে। নাস্তিকদের খুন করবে। আর তাতে হাসিনা মদত ও দেবে । কারন তাতেই বেশী রাজনৈতিক ফায়দা। বাংলাদেশে যারা অমুসলমান — তাদের কাছে রাজনৈতিক চয়েসটা এখন ডাঙায় বাঘ, জলে কুমীর। বাংলাদেশের মডারেট মুসলমানরা এসব দেখেও চুপ করে আছেন। কিন্ত ঘুঁটে পোড়ে । গোবর হাঁসে। যেদিন আর একটাও অমুসলমান থাকবে না বাংলাদেশে , সেদিন চাপাতির প্রথম কোপ মডারেটদের ওপরেই আসবে।

(৫)
তাহলে বাঙালী হিন্দু বা প্রগ্রেসিভ সেকশনের ভবিষ্যত কি? বাংলাদেশী হিন্দুদের মতন দেশত্যাগ ?

এই মুহুর্তে সব থেকে ভাল হত যদি বাংলাদেশ এবং পশ্চিম বঙ্গে শক্তিশালী ধর্ম বিরোধি প্রগ্রেসিভ কোয়ালিশন তৈরী করা সম্ভব হত। কিন্ত বামপন্থীদের জন্য সেটা সম্ভব না । বঙ্গে কোন বাম নেই। সব বামাতি। লেনিন যত বারই বলুন না কেন মার্ক্সবাদ বস্তুবাদ-আর যেকোন বস্তুবাদি দর্শনের ন্যায়, একজন মার্কিস্টকে সর্বদা ধর্মের ভাববাদের বিরোধিতা করতে হবে-এই বাক্যে বিশ্বাস করে এমন একজন বাঙালী বামপন্থীর দেখা আজও পাই নাই। তারা ধর্মানুভূতিতে আঘাত করতে ভয় পান। পাছে একজন কমরেড হারান। কিন্ত ইতিহাস ত নির্দয় । তাই বাংলাদেশে আজ বামেরা হারাধনের একটি ছেলে। পশ্চিম বঙ্গে তারা ক্ষয়ীষ্ণু শক্তি।

যেসব মার খাওয়া হিন্দুরা ভাবছে বিজেপি উদ্ধার করবে, তারা যে মহামূর্খ আগেই লিখেছি। মোদির দরকার মমতাকে। কারন আটকে থাকা কর্পরেট বিল পাশ করাতে রাজ্যসভাতে তৃনমূলের সাহায্য দরকার। ফলে বিজেপির যেকজন নেতা সিরিয়াসলি তৃনমুলের বিরুদ্ধে গেছে, সবাইকে বসানো হচ্ছে। একমাত্র রাহুল সিনহার মতন অকর্মন্য ধামাধরা নেতারাই রাজ্য বিজেপিতে পাত্তা পান। ফলে পশ্চিম বঙ্গের হিন্দুত্ববাদি আন্দোলন ও মৃতপ্রায়। একমাত্র যদি মমতার মতন ক্যারিশমা নিয়ে কেও বঙ্গ হিন্দু পার্টি তৈরী করতে পারে। তবে তেমন কোন নেতা বাঙালী হিন্দুদের মধ্যে নেই।

বাঙালী প্রগতিশীলদের কোন ভবিষ্যত আমি দেখছি না। যাদের চিন্তাধারার স্বচ্ছতা নেই-তাদের ভবিষ্যত না থাকাই নিয়তি। পশ্চিম বঙ্গে দাঙ্গা এখন প্রায় প্রতি মাসেই হচ্ছে। আস্তে আস্তে প্রতি হপ্তায় হবে।এটা আটাকানোর একটা উপায় ছিল। চীনের মতন ধর্মাচারনের ওপর বিধি আরোপ করা। মাদ্রাসার বিলোপ। ধর্মীয় সংস্থাগুলির ওপর কড়া নজরদারি। মন্দির মসজিদের ওপর কড়া নজরদারি যা চীন করে। কিন্ত গণতন্ত্রে এসব করবে কে? তারাত জিততে পারবে না। বাঙালী হিন্দুরা তাও মেরে কেটে পার্টি তৈরী করে নিজেদের বাঁচাবার চেষ্টা করবে। কিন্ত প্রগতিশীলদের ভবিষ্যত দুই বাংলাতেই শুন্য। কারন বেসই নেই। তা সুপারস্টাকচার আসবে কোত্থেকে ?

আরো দাঙ্গা হবে। আরো লাশ পড়বে। এগুলো ঠেকানোর একটাই উপায় ছিল- বিজ্ঞান চেতনাকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ছড়ানো-ধর্মের ওপর কঠোর বাধা নিশেধ। গণতান্ত্রিক দুর্বলতা সে পথ রুদ্ধ করেছে। ফলে দাঙ্গা আর লাশই এখন দুই বাংলার ভবিষ্যত। যদ্দিন বাঙালী ধর্মের বিরুদ্ধ শক্তির একটা ভোটিং ব্লক না তৈরী করতে পারবে, এই আসন্ন দাঙ্গা রোখার ক্ষমতা কারুর নেই।

মুক্তমনাতে যে আন্দোলন আমরা শুরু করেছিলাম-চিন্তা মুক্তির আন্দোলন-নিৎসের সার্টেনিটি থেকে আনসার্টেনিটির দিকে যাত্রা-যাতে প্রচলিত ধ্যান ধারনাকে নস্যাত করতে পারি- আর সেই মুক্তির স্বাদ থেকে উইল টু পাওয়ার- নিজেদের স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে নিজেরা সমৃদ্ধ হতে পারি-সেই যাত্রাই মানুষের ভবিষ্যত যাত্রা। হাজার মুক্তমনা শহীদ হওয়ার পরেও –কালের যাত্রার ধ্বনি সবার আগে আমাদের কানেই ধরা দেবে।

হ্যা, এতে অনেক সহযোদ্ধা শহীদ হল । কেও একবার না। বারবার। নিলাদ্রির বোন, মাসী এবং কাকিমা দেখলাম দাবী করেছে তার স্ত্রী আশারানীই নাকি চক্রান্তের মূলে! আশারানীর অপরাধ, সে মুসলিম !! হ্যা, ঠিকই ধরেছেন। মুক্তমনারা দুবার মরে । একবার ইসলামিক জঙ্গীদের হাতে । আরেকবার নিজের পরিবারের হাতে। কিন্ত তাও আমরা মুক্তমনা হতে চাই । কারন উইল টু পাওয়ার। নিজেকে সমস্ত প্রচলি্ত কুসংস্কার, চিন্তাধারা, বদ্ধ বিশ্বাস থেকে মুক্ত করার যে স্বাধীন স্বাদ আমরা পেয়েছি-শত মৃত্যুর পরে, সেই স্বাধীন স্বত্তাই কাম্য। পরাধীন আত্মার জন্ম মৃত্যুর চক্রে সমাজ নামক জেলখানার কয়েদি হয়ে বেঁচে থেকেই বা কি লাভ ?