হিন্দুর জমি দখল করেছে মুসলমান

দাগনভূঞার একটা ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করি। পলাশ সাহা নামের একজনের ১০ কোটি টাকার পৈত্তিক সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন মামুন। ‘আওয়ামী লীগ’ পরিচয়টি এখানে ফ্যাক্ট নয়, এখানে আপনি বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামাতসহ যে কোন রাজনৈতিক পরিচয় লিখে নিতে পারেন, রাজনৈতিক শক্তি এখানে জয়নাল আবেদীন নামক লোকটিকে ‘হিন্দু সম্পত্তি দখল ইচ্ছুক’ প্রতিদন্দ্বিদের থেকে শক্তিতে এগিয়ে রেখেছে মাত্র। নাসিরনগরে আওয়ামী লীগ জড়িত ছিল, সাথে ছিল আহলে সুন্নত, হেফাজত ইসলাম। এগুলোও নেহাত কিছু সাইনবোর্ড মাত্র। আসল পরিচয় ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান”! …কি মনে হচ্ছে একতরফা ‘মুসলিম বিদ্বেষ’ করলাম? আচ্ছা তাহলে বলেন তো, ভারত-নেপাল থেকে সংখ্যালঘু মুসলমানের সম্পত্তি দখলের কোন চিত্র দেখানো যাবে? নিদেন পক্ষে পশ্চিমবাংলা থেকে কোন বাংলা ভাষী মুসলমান পরিবার সংখ্যাগুরু হিন্দুদের হাতে সম্পত্তি খুইয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছে এরকম কোন চিত্র পাওয়া যায়? ইজরাইলে বসবাস করা ২০ শতাংশ মুসলিম কি তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে দেশান্তরিত হবার কোন নিউজ আমাদের কাছে আছে? কিন্তু পাকিস্তান-বাংলাদেশ থেকে হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের দেশত্যাগের চিত্রটা দেখুন। তাহলে কি করে এসব ঘটনাকে আমি স্রেফ ‘দুর্বলের উপর সবলের জুলুম’ বা আওয়ামী-বিএনপি-জামাত’ এরকম ব্রেকেট বন্দি করে দেখাই! এটা কি সত্যকে ধামাচাপা দেয়া হবে না? সত্য উচ্চারণ করা কি বিদ্বেষ?

বাদ দেন। আজকে দেখলাম জুনাইদ সাকি রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে বার্মা সরকারকে চাপ দিতে আহ্বান করেছে। উপরন্তু তিনি বার্মার উপর জাতিসংঘের অবরোধ আরোপ করা ছিল উপযুক্ত কাজ বলে মত প্রকাশ করেছেন। আচ্ছা রোহিঙ্গাদের কি অধিকার নেই বিশ্বনেতাদের কাছে বিচার চাওয়ার? তারা কি কাউকে ধরে বলতে পারে না- বার্মাতে আমরা অধিকারহীন। আমাদের হয়ে আপনারা কিছু একটা করেন…। উত্তর দেয়ার আগে সঙ্গে এটাও জুড়ে নিন, বাংলাদেশে এ যাবত যত আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নির্যাতন, সম্পত্তি দখল, নারী ধর্ষণ, দেশান্তরিতের ঘটনা ঘটেছে সেসব কারণে বিশ্বনেতাদের কাছে গিয়ে বিচার চাওয়া যাবে না? নাকি সেটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়ে যাবে?… আচ্ছা, বাংলাদেশ যদি রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানায় বার্মিজদের কাছে, ওরা যদি বাংলাদেশের দিকে চেয়ে হেসে ফেলে?