প্রসঙ্গঃ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ ও অন্যান্য

“রোহিঙ্গাদের ধর্ম শিক্ষায় নজর হেফাজতের” – বিডিনিউজে আসা এই নিউজটা আমাদের হাত গলে বেরিয়ে গেছে, আমরা বুঝি নাই। আসেন আপনাদের একটু সহজ করে বুঝায়া দেই। মিরপুরে এখনো একটা বড়সড় বিহারীপল্লী দেখা যায়, বিহারীরা মুসলিম কমিউনিটি। মাঝেমধ্যে এই রাস্তা দিয়ে রিকশায় শর্টকাট নিলে দেখতে পাই উঁচুউঁচু কিছু মানুষ ভ্রু কুঁচকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মনে মনে ভাবি ‘এই রাস্তাটা দ্রুত পার হলেই বাঁচা যাবে’। ১৯৭১ সালে তো বটেই এর পরেও বহুবার এমন হয়েছে যে গোটা কমিউনিটি মিলে এলাকাবাসীদের আক্রমণ করে বসেছে।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায় অসহায়, সর্বোচ্চ কষ্টের ভেতর দিয়ে তারা বাস করছেন। খুন-ধর্ষণ-রক্ত-ভিটা-মাটি পেরিয়ে ওনারা এই দেশে এসেছেন বাঁচার জন্য। আমাদের সবার দায়িত্ব তাদের জীবন রক্ষা করা। কিন্তু রক্ষার নামে আপনি যদি তাদের ধীরে ধীরে উশকানি দিয়ে দিয়ে উগ্র করে তোলেন। তারা “কেবল মুসলমান” এই বলে বলে একটা আইডিনটিটি দিয়ে এই ভূমির মালিকানা দিয়ে দেন, আর তারপর আপনাদের স্বভাবসুলভ উপায়ে দরকার মত সংখ্যালঘু উচ্ছেদে পাঠিয়ে দেন, মন্দির ভাঙতে পাঠিয়ে দেন, সেটা তো খুব একটা অসম্ভব কাজ না।

দেখেন, পাহাড়ে মিশনারিদের ধর্ম প্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের মাওলানারা দীর্ঘদিন আওয়াজ তুলেছেন। আমিও ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি কারো অভাব-অনটনের সুযোগ নিয়ে ধর্ম পরিবর্তনের টোপ দেয়া একরকম মানবাধিকার লংঘন। তবে এটাও সত্য যে সুস্থ মস্তিস্কে ধর্ম বদলের অধিকার সবারই আছে। কিন্তু কোন অপুরচুনিটিকাল কেইসে কোন একটা ধর্মের সুযোগ হাতিয়ে নিতে দেয়াটা অনুচিত। এখানেও তাই হচ্ছে।

হ্যা এটা সত্য যে ধর্ম পালনের অধিকার সবার আছে। পর্যাপ্ত খাদ্য, পর্যাপ্ত বস্ত্র, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যাবস্থা, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ইত্যাদির সাথে সাথে কেউ পর্যাপ্ত উপাসনার উপাদান দিতেই পারেন কোন আপত্তি নাই। কিন্তু এইরকম একটা অবস্থায় কোন ধর্মের একটা নির্দিষ্ট মতবাদের প্রচারণার চেষ্টা একটা ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সামনের দিনে তারা সংখ্যালঘু নিপীড়নের অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করবে এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে।